সরকার শূন্য পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে: পুলিশ সদর দপ্তর
Published: 13th, April 2025 GMT
‘পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ অনেক পদ ফাঁকা, প্রভাব পড়ছে কাজেও’ শিরোনামে গতকাল শনিবার প্রথম আলোতে প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে একটা লিখিত বক্তব্য পাঠিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (গণমাধ্যম ও জনসংযোগ) ইনামুল হক সাগর গতকাল সন্ধ্যায় ওই বক্তব্য পাঠান। তাতে বলা হয়, অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ে বিদ্যমান শূন্য পদে পদোন্নতি প্রদানের প্রক্রিয়া গ্রহণ করেছে। এ বিষয়টি অচিরেই নিষ্পন্ন হবে।
পুলিশ সদর দপ্তরের বক্তব্যে আরও বলা হয়েছে, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার তার অসৎ নির্বাচনী উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য বিপুলসংখ্যক সুপারনিউমারারি পদ তৈরি করে। এটি একটি জনতুষ্টিমূলক পদক্ষেপ। এ ছাড়া পুলিশের কাজে বা চেইন অব কমান্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে—এরূপ মন্তব্যে পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়।
প্রথম আলোর ওই প্রতিবেদনে মূলত বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের (সহকারী পুলিশ সুপার থেকে তদূর্ধ্ব) পদগুলোর মধ্যে কতগুলো শূন্য রয়েছে, কতজন সংযুক্ত, ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা), কতজন কর্মস্থলে অনুপস্থিত বা আত্মগোপনে রয়েছেন, সেটা তুলে ধরা হয়েছে। এর ফলে কাজে প্রভাব পড়ছে কি না, সে বিষয়ে কর্মরত কর্মকর্তাদের অভিজ্ঞতা ও আক্ষেপের কথাও এসেছে। এ নিয়ে পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) বক্তব্যও ছাপা হয়েছে। বিশেষজ্ঞ হিসেবে সাবেক একজন আইজিপির বক্তব্যও রয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।