আওয়ামী রাজনীতির মৃত্যু ঢাকায়, দাফন দিল্লিতে: সালাহ উদ্দিন
Published: 14th, April 2025 GMT
গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ঢাকায় আওয়ামী রাজনীতির মৃত্যু আর দিল্লিতে দাফন হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের অপরাজনীতির বিলুপ্তি হয়েছে, শেখ হাসিনার রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে।...আওয়ামী রাজনীতির মৃত্যু ঢাকায়, দাফন হয়েছে দিল্লিতে।’
আজ সোমবার সকালে রাজধানীর রমনায় জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আয়োজিত বৈশাখী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সালাহ উদ্দিন আহমদ।
স্বতন্ত্র সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের সংস্কৃতিকে বিকৃত ও বিস্মৃত করতেই আওয়ামী লীগ মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রচলন করেছিল বলে অভিযোগ করেন সালাহ উদ্দিন আহমদ। এখনো ভারতীয় সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে মুক্ত হওয়া গেছে কি না—এমন প্রশ্নও তোলেন তিনি।
সালাহ উদ্দিন বলেন, পয়লা বৈশাখের আনন্দ শোভাযাত্রা ঐতিহ্যের অংশ। এ ভূখণ্ডের হাজার বছরের লালিত সংস্কৃতিকে লালন-পালনের মাধ্যমে এগিয়ে নিতে হবে। বাংলাদেশের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে বিকৃত করার জন্য যেসব অপসংস্কৃতির অনুপ্রবেশ ঘটানো হয়েছিল, সেই সংস্কৃতিকে ঝেঁটিয়ে বিদায় করা সবার দায়িত্ব। তিনি বলেন, ‘বাংলার বৈশাখী মেলা, বাংলার তালপাতার পাখা ও বাঁশি আমাদের সংস্কৃতি। আমরা পান্তাভাত ও ইলিশ মাছ খেয়েছি। আমাদের সংস্কৃতির মতো করে উদ্যাপন করেছি। এটিকে যেন ধর্মচর্চার পর্যায়ে কেউ না নিয়ে যায়।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
২ বছরের ভেতরে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে আপত্তি নেই বিএনপির
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের খসড়া পাঠানো হয়েছে। সেই খসড়ায় বলা হয়েছে, দুই বছরের মধ্যে ঐকমত্য হওয়া বিষয়গুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এ বিষয়ে বিএনপির কোনো আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের ২১তম দিনের আলোচনার বিরতিতে সালাহউদ্দিন আহমদ এ কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা যেটা পেয়েছি, এটা জুলাই জাতীয় সনদ নামে একটা খসড়া পেয়েছি। সেটা ভূমিকা, বিস্তারিত বিষয়গুলো নেই। এই খসড়ার সঙ্গে আমরা মোটামুটি একমত। কিন্তু খসড়ার কিছু বাক্য, শব্দ ও গঠনপ্রণালি নিয়ে কারও কোনো মতামত আছে কি না, তা জানতে রাজনৈতিক দলগুলোকে খসড়াটি দিয়েছে কমিশন। আমাদের যে সংশোধনী থাকবে, আমরা তা কাল জমা দেব।’
খসড়ায় যে অঙ্গীকারের কথা বলা হয়েছে, সে বিষয়ে বিএনপি একমত বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। তিনি বলেন, ‘খসড়ায় দুই বছরের ভেতরে প্রতিশ্রুতিগুলো বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অঙ্গীকার চাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে আমরা একমত।’
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘আমরা সাংবিধানিক ও সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়োগ আইনের মাধ্যমে করতে চাই। এতে আইনি ত্রুটি থাকলে সংশোধন সহজ হবে।’ তিনি বলেন, ‘কার্যকর রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য একটি সক্রিয় নির্বাহী বিভাগ প্রয়োজন। তবে সেই নির্বাহী বিভাগকে চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের মধ্যে রাখতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘সংবিধানে যত বেশি যুক্ত করা হবে, সংশোধন তত বেশি জটিল হয়ে পড়বে। তাই আমরা চাই, আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করা হোক এবং সেই আইনে প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন আনা সহজ হবে।’
নারী প্রতিনিধিত্ব বিষয়ে বিএনপির অবস্থান প্রসঙ্গে সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আমরা প্রথম ধাপে প্রস্তাব করেছি, আগামী নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫ শতাংশ অর্থাৎ ১৫টি আসনে নারীদের মনোনয়ন দেওয়া হবে। পরবর্তী নির্বাচনে তা ১০ শতাংশ অর্থাৎ ৩০টি হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই, নারীরা সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হোক। কিন্তু সমাজের বাস্তবতা বিবেচনায় আমরা ধাপে ধাপে অগ্রসর হতে চাই।’
সংস্কার কমিশনের ৭০০–এর বেশি সুপারিশ সম্পর্কে সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, এর মধ্যে প্রায় ৬৫০টির মতো প্রস্তাবে বিএনপি একমত হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে পরামর্শ বা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সব প্রস্তাব সনদে আসবে না। তবে যেগুলো মৌলিক, যেমন সংবিধান সংশোধনসংক্রান্ত, সেগুলো অবশ্যই গুরুত্ব পাবে।’