ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪তম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত
Published: 16th, April 2025 GMT
ইস্টওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪তম সমাবর্তন আজ বুধবার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর আফতাবনগর খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতির প্রতিনিধি হিসেবে শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি প্রদান করেন। সমাবর্তনে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ও গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ২ হাজার ৮৮৫ শিক্ষার্থীকে সনদ এবং অনন্য মেধাবী ছয়জন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয় স্বর্ণপদক।
শিক্ষাউপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘একদিকে নতুন প্রযুক্তি সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করছে, অন্যদিকে বিশ্বব্যাপী অসহিষ্ণুতা, উগ্রজাতীয়তাবাদ এবং সংকীর্ণতা বড় অর্জনের পথে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে নিজেদের মেধা, দক্ষতা ও শ্রম দিয়ে বিশ্বব্যাপী শান্তি, সহিষ্ণুতা, সমতা ও ন্যায়ভিত্তিক পৃথিবী গড়ে তুলতে হবে।’
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ সদ্য-স্নাতক শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনে পরিবারের প্রতি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে সমাবর্তন বক্তা এপেক্স গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ থেকে ২৫ বা ৩০ বছরের পরের বাংলাদেশ কেমন হবে, তা নির্ভর করছে তোমাদের ওপর।’ গ্র্যাজুয়েটদের তিনি চাকরির বদলে উদ্যোক্তা হওয়ার আহ্বান জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বাংলাদেশ উচ্চমানের শিক্ষা কমিশন গঠনের দাবি জানান। পাশাপাশি একটি আধুনিক, বিজ্ঞানমনস্ক এবং উদ্ভাবনী শিক্ষানীতি প্রণয়নের জন্য শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে দাবি তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীদের তিনি বলেন, ‘দেশের সম্পদ যথাযথভাবে ব্যবহার করে পণ্য ও সেবা তৈরিতে মনোনিবেশ করতে হবে। “আমদানি প্রবণ বাংলাদেশ” তকমাটি ঘোচাতে হবে।’
সমাবর্তনে আন্ডার গ্র্যাজুয়েট ও গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামের ২ হাজার ৮৮৫ শিক্ষার্থীকে সনদ এবং অনন্য মেধাবী ছয়জন শিক্ষার্থীকে দেওয়া হয় স্বর্ণপদক.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।