দুই বাংলার খ্যাতিমান কবি, সাহিত্যিক ও সংস্কৃতিপ্রেমীদের অংশগ্রহণে পাবনার ঈশ্বরদীতে সম্পন্ন হলো তিন দিনব্যাপী "চরনিকেতন বৈশাখী সাহিত্য উৎসব ২০২৫"। চরগড়গড়ি গ্রামের চরনিকেতন কাব্যমঞ্চে আয়োজিত এই উৎসব ছিল সাহিত্য, সংস্কৃতি এবং মিলনমেলার এক অপূর্ব সম্মিলন।

সোমবার শুরু হয়ে বুধবার রাত পর্যন্ত চলা এই উৎসবের মূল আয়োজনে ছিল—বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা, বাউল গান ও দেশাত্মবোধক সংগীত পরিবেশনা, কবিকণ্ঠে কবিতাপাঠ, সাহিত্য বিষয়ক সেমিনার, নববর্ষ উপলক্ষে আলোচনা সভা এবং কবি মজিদ মাহমুদের ৬০তম জন্মোৎসব ও সংবর্ধনা অনুষ্ঠান।

উৎসবে ভারত ও বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত শতাধিক কবি-সাহিত্যিক অংশ নেন। কবি মজিদ মাহমুদের সভাপতিত্বে আয়োজিত উৎসবের উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রাজনীতিক হাবিবুর রহমান হাবিব। সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পাবনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম।

উৎসবে বক্তব্য রাখেন কবি শেখ রবিউল হক, পাবনা প্রেসক্লাবের সভাপতি আখতারুজ্জামান আখতার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও কবি-গীতিকার আব্দুল খালেক বিশ্বাস, ঈশ্বরদী প্রেসক্লাবের সভাপতি আজিজুর রহমান শাহীন, সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সহসভাপতি জাহিদুল ইসলাম সনু ও সাধারণ সম্পাদক এস আলমগীর।

ঢাকা থেকে আগত বিশিষ্ট কবিদের মধ্যে ছিলেন—শামসুদ্দিন হীরা, আজিজুল বাশার, ফিরোজ শাহ, রুবিনা আজাদ, মেহেদী হাসান আকাশ, আফতাব আহমেদ মাহবুব, মাকসুদা ইয়াসমিন, রুদ্র রোমিও, লুৎফুন নাহার সোনিয়া, জাকির মোল্লাসহ অনেকে।

ভারত থেকেও কবি অরূপ কুমার ভুঁইয়ার উপস্থিতি এই উৎসবকে আন্তর্জাতিক মাত্রা দিয়েছে।

সাহিত্য উৎসবের শেষ দিনে কবি মজিদ মাহমুদের ৬০তম জন্মদিন উদযাপন করা হয় ব্যাপক আয়োজনে। তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা ও সম্মাননা জানিয়ে সাহিত্যপ্রেমীরা বলেন, “চরনিকেতন শুধু একটি সাহিত্য মঞ্চ নয়, এটি একটি চেতনার নাম। মজিদ মাহমুদ আমাদের গর্ব।”

আয়োজকরা জানান, এই ধরনের উৎসব শুধুমাত্র সাহিত্য চর্চা নয়, বরং দুই বাংলার মধ্যে সংস্কৃতি ও বন্ধনের সেতুবন্ধন তৈরি করে। ঈশ্বরদীতে এমন আয়োজন ভবিষ্যতেও নিয়মিতভাবে করা হবে বলে জানিয়েছেন আয়োজক কমিটি।

সাহিত্যপ্রেমী ও সাধারণ মানুষদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে উৎসবটি হয়ে উঠেছিল এক প্রাণবন্ত সাহিত্য মিলনমেলা। এই উৎসব প্রমাণ করেছে—সাহিত্য এখনো সমাজের প্রাণ, সংস্কৃতির বাতিঘর।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব শ খ উৎসব এই উৎসব

এছাড়াও পড়ুন:

আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ

ঝমঝম বৃষ্টি, কর্দমাক্ত পথঘাট, খাল-বিলে থৈ থৈ পানি- এমন দৃশ্যপট সামনে না থাকলেও ভেবে নিতে দোষ কি। কারণ, আজ পহেলা আষাঢ়।

রবি ঠাকুরের ভাষায়— ‘আবার এসেছে আষাঢ় আকাশও ছেয়ে... আসে বৃষ্টিরও সুবাসও বাতাসও বেয়ে...’।

অবশ্য একেবারে নিরাশ করেনি আষাঢ়। রাজধানীতে সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা আর কোথাও হালকা বৃষ্টি জানান দিচ্ছে প্রকৃতিতে বর্ষার আগমন। বর্ষার আগমন যেন স্বস্তি-শান্তি ও আনন্দের। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস নগরবাসীর জীবনে এক আনন্দের বার্তা। 

বাংলার প্রকৃতিতে আলাদা বৈশিষ্টময় বর্ষা ঋতুর আজ যাত্রা শুরু হলো। 

বলা হয়, গ্রীষ্মের খরতাপের ধূসর নাগরিক জীবন আর রুদ্র প্রকৃতিতে প্রাণের স্পন্দন জাগায় বর্ষা। জ্যৈষ্ঠের প্রচণ্ড খরতাপে রুক্ষ প্রকৃতি সজীব হয়ে উঠবে বর্ষার বর্ষণের মৃদঙ্গ-ছোঁয়ায়, এটাই যে সকল বাঙালির চাওয়া। 

আষাঢ়ের রিমঝিম বৃষ্টি গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সাজে পূর্ণতায়। রঙিন হয়ে পুকুর-বিলে ফোটে শাপলা-পদ্ম। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণে স্বতন্ত্র। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। বর্ষার নতুন জলে স্নান সেরে প্রকৃতির মনও যেন নেচে ওঠে। ফুলে ফুলে শোভিত হয় প্রকৃতি। তাই বর্ষাবিহীন বাংলাদেশ ভাবাই যায় না। 

বর্ষা বাঙালি জীবনে নতুন প্রাণসঞ্চারকারী। বৃষ্টিস্নাত কদম ফুলের সৌন্দর্য্য যে দেখেছে, মুগ্ধ নয়নে চেয়ে না থেকে পারেনি। এর বর্ণনায় পল্লীকবি জসীমউদদীন লিখেছেন- ‘বনের ঝিয়ারি কদম্বশাখে নিঝঝুম নিরালায়, / ছোট ছোট রেণু খুলিয়া দেখিছে, অস্ফুট কলিকায়।’

বৃষ্টি হলে গ্রামের নদী নালা পুকুরে জল জমে থৈ থৈ করে। বর্ষা আনন্দ-বেদনার সারথী। সবুজের সমারোহে, মাটিতে নতুন পলির আস্তরণে বর্ষা আনে জীবনেরই বারতা। 

উন্নয়নের নামে চলমান প্রাণ-প্রকৃতি ধ্বংসের প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি নিয়ে প্রতি বছরের মতো এ বছরও বর্ষা ঋতুকে বরণ করে নিতে ‘বর্ষা উৎসব’ আয়োজন করেছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। 

রবিবার (১৫ জুন) আষাঢ়ের প্রথমদিনে বাংলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সকালে সুর-সংগীতে প্রকৃতি-বন্দনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে উৎসবের কর্মসূচি।

ঢাকা/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কপালে ১৩টি এবং থুতনিতে ৪টি সেলাই করা লাগে
  • দেশের পর এবার বিদেশেও ঈদের সিনেমার মুক্তি
  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’