চট্টগ্রামে চলন্ত বাসে কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তারসহ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। একইসঙ্গে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির মাধ্যমে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার বিষয়ে শূন্য সহিঞ্চুতা নীতি গ্রহণেরও দাবি জানানো হয়।

আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি ডা.

ফওজিয়া মোসলেম ও সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু এ দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত মঙ্গলবার ওই কিশোরী কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামের হানিফ পরিবহনের একটি বাসে করে আত্মীয়ের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। সন্ধ্যায় বাসটি নগরের বদ্দারহাট বাস টার্মিনালে পৌঁছালে অন্য যাত্রীদের নামিয়ে দিলেও চালক, হেলপার ও সুপারভাইজার মিলে ওই কিশোরীকে একা বাসের মধ্যে আটকে রাখে। চলন্ত অবস্থায় বাসটি নগরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরতে থাকে। পরের দিন বুধবার সন্ধ্যা থেকে ভোররাত পর্যন্ত চালক, হেলপার ও সুপারভাইজার মিলে পালাক্রমে ওই কিশোরীকে দলবদ্ধভাবে ধর্ষণ করে। বাসটি ভোরে নগরের কানাই রাস্তার মাথা এলাকায় আসলে অভিযুক্তরা কিশোরীকে নামিয়ে দেয়। গুরুতর অবস্থায় নির্যাতনের শিকার কিশোরীকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করা হয়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাস্তাঘাটে চলন্ত বাসে নারী ও কন্যা শিশুরা দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে যার ফলে তাদের নিরাপত্তা হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ঘরে-বাইরে চলাচলের পথে নারী ও কন্যাশিশুরা কোথাও নিরাপদ নয়। সংঘটিত এসব ঘটনা তাদের স্বাভাবিক জীবন ব্যাহত করছে এবং তাদের অগ্রযাত্রার পথে প্রতিবন্ধকতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: দলবদ ধ

এছাড়াও পড়ুন:

মার্চে নির্যাতনের শিকার ৪৪২ নারী

গত মার্চে ৪৪২ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণ করা হয়েছে ১২৫ কন্যাসহ ১৬৩ জনকে। ১৮ কন্যাসহ ৩৬ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। দুই কন্যাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। দুই কন্যা ধর্ষণের পর আত্মহত্যা করেছে। এছাড়া ৫৫ কন্যাসহ ৭০ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে সাম্প্রতিক নারীর মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ তথ্য জানান। এর আয়োজন করে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে মোট ১৮৯ নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার ৩০ কন্যাসহ ৪৮ জন। তার মধ্যে তিন কন্যাসহ ১১ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এক কন্যাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। 
জানুয়ারিতে নির্যাতনের শিকার হয়েছে মোট ২০৫ নারী ও কন্যাশিশু। এর মধ্যে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৩৩ কন্যাসহ ৪৯ জন। তার মধ্যে ১৪ কন্যাসহ ২০ জন দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এক কন্যাসহ দুইজনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া দুইজনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।

মডারেটরের বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম বলেন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ৫ নম্বর ধারা জেন্ডার সমতা। এটি উপেক্ষা করা কোনো রাষ্ট্রের পক্ষে সম্ভব নয়।

সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারী আন্দোলনের অন্যতম দাবি অভিন্ন পারিবারিক আইন প্রণয়ন, রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ, সংসদে এক-তৃতীয়াংশ আসন ও সরাসরি নির্বাচন।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমা মোসলেম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদা রেহানা বেগম প্রমুখ। সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় অ্যাডভোকেসি ও নেটওয়ার্কিং পরিচালক জনা গোস্বামী।

পুলিশ সদরদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, মার্চে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে দুই হাজার ৫৪টি। এর আগে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের (এমএসএফ) প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্চে ১৩২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) জানায়, জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত নির্যাতনের শিকার হয়েছে ২৯৯ কন্যাশিশু।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সারা দেশে ধর্ষণের ঘটনায় মহিলা পরিষদের উদ্বেগ-ক্ষোভ
  • মার্চে নির্যাতনের শিকার ৪৪২ নারী