এবার শাটডাউনের হুঁশিয়ারি পটুয়াখালী মেডিকেলের ইন্টার্ন চিকিৎসদের
Published: 19th, April 2025 GMT
পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা এবার শাটডাউনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আজ শনিবার পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের প্রশাসনিক ভবনের সামনে মানববন্ধন থেকে এ হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।
আন্দোলনের তৃতীয় দিনে চিকিৎসাসেবা বন্ধ রেখে আজ সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে ৮০ জনের মতো ইন্টার্ন চিকিৎসক ও ৩০ জন নার্স অংশ নেন।
আরও পড়ুনচিকিৎসকের ওএসডির আদেশ বাতিলের দাবিতে সেবা বন্ধ করে মানববন্ধনে ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা১৭ এপ্রিল ২০২৫এর আগে গতকাল শুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তিনটি দাবি জানান ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। দাবিগুলো হলো হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও রোগীদের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা; চিকিৎসক শামীম আল আজাদকে ওএসডি করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং হাসপাতালের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম চালুর জন্য পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ দেওয়া।
১৪ এপ্রিল পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি) পুকুরে পানিতে ডুবে হুসাইন মোহাম্মদ আশিক নামের এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনে আন্দোলনে নামেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। পরে এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন একটি তদন্ত কমিটি করে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগেই ১৭ এপ্রিল হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের চিকিৎসক এ এস এম শামীম আল আজাদকে ওএসডি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেদিন থেকে সেবা বন্ধ রেখে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের একজন বলেন, চিকিৎসক শামীম আল আজাদের ওএসডি আদেশ বাতিল এবং আশিকের মৃত্যুর পোস্টমর্টেমসহ সঠিক তদন্ত না হলে সেবা বন্ধের পাশাপাশি শাটডাউন কর্মসূচি পালন করা হবে।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের ভাষ্য, কোনো রোগীর মৃত্যু হলে চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতালসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ওপর হামলা হয়। এ ধরনের ঘটনায় তাঁরা শঙ্কিত। তাই চিকিৎসক, নার্স, কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও রোগীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি করছেন তাঁরা।
মানববন্ধনে বলা হয়, ২০ বছর আগের ২৫০ শয্যার হাসপাতাল এখন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে উন্নীত হলেও আগের জনবল কাঠামোই রয়েছে। তা ছাড়া রোগীর সংখ্যা বাড়লেও চিকিৎসক আছেন মাত্র ২০ জন। সীমিত জনবল ও সরঞ্জাম নিয়ে রোগীর চাপ সামাল দেওয়া দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। তার ওপর নিরাপত্তাহীনতা এবং দোষারোপের সংস্কৃতি চিকিৎসকদের মনোবল ভেঙে দিচ্ছে। এসব জটিলতার নিরসন না হলে শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সেবা বন্ধ করে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলনের বিষয়ে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মনিরুজ্জামান শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, সেবায় ফিরিয়ে নিতে ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে আলোচনা চলছে। আগামীকাল স্বাস্থ্য বিভাগের একজন ঊধ্বর্তন কর্মকর্তা ও পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ইন্টার্ন চিকিৎসকের সঙ্গে বসেন। আশা করা যায়, দ্রুতই বিষয়টির সমাধান হবে।
ইনটার্ন চিকিৎসকদের আন্দোলন অব্যাহত থাকায় হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা ব্যাহত হচ্ছে। আজ শনিবার কয়েকজন রোগী এ কথা বলেন। ৯ দিন ধরে মেডিসিন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ট র ন চ ক ৎসকদ র ম ড ক ল কল জ
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সাংবাদিকের ওপর হামলায় জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় অবৈধ মাটি ব্যবসা নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে সাংবাদিক মাইনুদ্দিন রুবেলের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন হয়েছে। হামলার চার দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বক্তারা। জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘ঢেউ’ এ মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, গণমাধ্যমকর্মী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম মোল্লা, জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ মোশারফ হোসেন, প্রেসক্লাবের কার্যকরী সদস্য শাহাজাহান সাজু, খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক নিহার রঞ্জন সরকার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ইউনাইটেড কলেজের উদ্যোক্তা হারুন অর রশিদ ও শাহীন মৃধা, প্রথম আলোর বন্ধুসভার জেলা সভাপতি অভিজিৎ রায় ও সাধারণ সম্পাদক শাহাজান মিয়া এবং ঢেউয়ের সদস্য শাহাদাত হোসেন।
বক্তারা বলেন, যাঁরা সন্ত্রাসী কার্যক্রমে জড়িত, তাঁদের কোনো দলীয় পরিচয় নেই। বাংলাদেশ সংবিধান প্রত্যেক নাগরিকের মতপ্রকাশের অধিকার দিয়েছে। একজন সাংবাদিক হিসেবে মাইনুদ্দিন রুবেল সেই অধিকার প্রয়োগ করেছেন। সাংবাদিকদের ভয়ভীতি দেখিয়ে সত্য প্রকাশ থেকে বিরত রাখা যাবে না। হামলার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে।
মাইনুদ্দিন রুবেল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি। তাঁর বাড়ি বিজয়নগর উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটি দাউদপুর গ্রামে। তিনি ২০ বছর ধরে জেলা শহরের দক্ষিণ মৌড়াইলে বসবাস করছেন।
গত শুক্রবার সন্ধ্যা পৌনে আটটার দিকে বিজয়নগরের মির্জাপুর এলাকায় উপজেলা পরিষদের সামনে তাঁর ওপর হামলা হয়। এতে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা কাইয়ুম মিয়া এবং বহিষ্কৃত যুবদল নেতা ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান ওরফে লিটন মুন্সীসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন রুবেল।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, মোখলেছুর ও কাইয়ুম দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অবৈধভাবে মাটি ব্যবসা করছেন। পুকুর ও কৃষিজমির মাটি কেটে তা ট্রাক্টরে করে অন্যত্র বিক্রি করছেন তাঁরা। স্থানীয় প্রশাসন এ বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে।
এ বিষয়ে বিজয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনার পর থেকে আসামিরা পলাতক। তাঁদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।