চট্টগ্রামে পুনরায় নালায় পড়িয়া শিশু নিহত হইবার মর্মান্তিক ঘটনা ঘটিল। শনিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার রাত্রে ছয় মাস বয়সী কন্যাসন্তানকে লইয়া রিকশাযোগে কাপাসগোলা সড়ক দিয়া বৃষ্টির মধ্যে গৃহে ফিরিতেছিলেন এক নারী। সড়কের খানাখন্দে রিকশাটি উল্টাইয়া পার্শ্ববর্তী হিজলা খাল নামক নালায় পড়িয়া যায়। স্থানীয় লোকজন মা ও রিকশাচালককে উদ্ধার করিতে পারিলেও শিশুটি পানিতে তলাইয়া যায়। খবর পাইয়া ফায়ার সার্ভিসের একটি দল উদ্ধার অভিযান চালায়। উহাদের সহিত যোগ দেয় ডুবুরি দলও। কিন্তু রাত্রিকালে শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয় নাই। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জানাইয়াছে, শনিবার সকালে নগরীর আসাদগঞ্জের চামড়া গুদাম মোড়সংলগ্ন চাক্তাই খালে শিশুটির মরদেহ ভাসিয়া ওঠে।
প্রসঙ্গত, দেশের অন্য বহু অঞ্চলের ন্যায় চট্টগ্রাম নগরীও একসময় নালা-খালে পূর্ণ ছিল। অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং দখলের শিকার হইবার পরও পাহাড় ও সমুদ্রবেষ্টিত এবং অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত শহরটিতে বহু নালা-খাল বিরাজমান। তবে কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও ঔদাসীন্যের শিকার হইয়া এই সকল উন্মুক্ত জলাধার আবর্জনায় পূর্ণ হইয়া আছে। কোনো ধরনের নিরাপত্তাবেষ্টনীও তথায় গড়িয়া তোলা হয় নাই। ফলে বিশেষত বৃষ্টিপাতের সময় প্রায়শই নালা-খালসমূহে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটিয়া চলিয়াছে। আলোচ্য দুর্ঘটনাস্থল কাপাসগোলা ব্রিজের পার্শ্ববর্তী উন্মুক্ত নালাটিও দীর্ঘদিন ধরিয়া ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হইয়া আছে, বৃষ্টি হইলে যাহা মরণফাঁদে পরিণত হয়।
বলিয়া রাখা প্রয়োজন, চট্টগ্রামে নালা-খালে এই প্রথম প্রাণঘাতী দুর্ঘটনা ঘটে নাই। গত চার বৎসরে বন্দরনগরীতে নালা-খালে পড়িয়া অন্তত আটজনের মৃত্যু হইয়াছে। পরিতাপের বিষয়, প্রতিবারই এহেন বিয়োগান্তক ঘটনার পর কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা ঘাটতির বিষয়টি আলোচনায় আসে, কিন্তু শেষ অবধি পরিস্থিতির ইতরবিশেষ ঘটে না। সমস্যা যেই তিমিরে ছিল সেই তিমিরেই থাকিয়া যায়। অঘটনের দেশে অচিরেই নূতন ইস্যু চলিয়া আসে, পুরানা ইস্যু চাপা পড়িয়া যায়। অবশ্য যেই নগরীতে দশকের পর দশক ধরিয়া সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা জাঁকিয়া বসে, এই সমস্যা সমাধানে প্রতিশ্রুতির পর প্রতিশ্রুতি দিয়াও নগর কর্তৃপক্ষ কার্যত নিষ্ক্রিয় বসিয়া থাকে, সেই নগরীতে আলোচ্য প্রাণঘাতীর ঘটনা বিস্ময়কর নহে। এমন নহে যে, পর্যাপ্ত বরাদ্দের অভাবে এই সকল সমস্যার সমাধান হইতেছে না। বাস্তবে বিশেষত গত দেড় দশকে চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন এবং উহার অংশ হিসাবে নালা-খাল সংস্কার ও নিরাপদ করিবার লক্ষ্যে কয়েক সহস্র কোটি টাকা ব্যয় হইয়াছে। এমনকি উক্ত সময়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ও চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ রীতিমতো প্রতিযোগিতা করিয়া এই সকল কাজে জনগণের বিপুল অর্থ ব্যয় করিয়াছে। মোদ্দাকথা, জনগণের কষ্টার্জিত অর্থের শ্রাদ্ধ হইলেও চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা ও নালা-খালের সমস্যা দূরীভূত হয় নাই।
আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকার বিদায় গ্রহণের পর দেশে ইতোমধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসীন, যাহাদের অন্যতম অঙ্গীকার ছিল বিশেষত সরকারি সেবা সংস্থাসমূহকে জনস্বার্থের প্রতি সংবেদনশীল করিয়া তোলা। কিন্তু আলোচ্য ঘটনা দেখাইল, বাস্তবতা পূর্বের ন্যায় রহিয়া গিয়াছে। ইতোমধ্যে কিন্তু চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনেও নূতন মেয়র বসিয়াছেন, যাহার উপস্থিতি দুর্ভাগ্যবশত খুব একটা টের পাওয়া যাইতেছে না। যাহাই হউক, উক্ত ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসমূহ নিদ্রা ভাঙিয়া জাগিয়া উঠিবে, ইহাই প্রত্যাশা আমাদের।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
ডিহাইড্রেশন দূর করতে ‘লেবুর কাজী’
লেবুর কাজী ভাতের সাথে ডালের মতো খেতে পারেন। এ ছাড়া আলু ভর্তা, ডিম ভাজি, মাংসের ঝুরা, কালা ভুনা, এবং কোয়াবের সঙ্গে খেতেও অনেক ভালো লাগে। ভুনা বা ডিপ ফ্রাই মাছের সাথেও বেশ জমে যায় লেবুর কাজী।
উপকরণ
ঠান্ডা পানি: ৫০০ মিলি
ভাজা শুকনা মরিচ: ২টি
লেবু: ১টি (রস করে নেওয়া)
সরিষার তেল: ১ টেবিল চামচ
রসুন কুচি: ১ চা চামচ
লবণ: স্বাদমতো
প্রথম ধাপ: একটি বড় বাটিতে লেবুর রস, শুকনা মরিচ, রসুন কুচি, সরিষার তেল ও লবণ একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। তারপর হাত দিয়ে উপকরণগুলো ভালোভাবে মেখে নিন।
দ্বিতীয় ধাপ: এবার পরিমাণমতো পানি যোগ করুন। এরপর সবকিছু একসাথে মিশিয়ে নিলেই তৈরি লেবুর কাজী।
সূত্র: শিউলি কিচেন
ঢাকা/লিপি