কিশোরটির বয়স ১২ বা ১৩ বছর। পরনে কালো রঙের টি–শার্ট ও প্যান্ট। তার দুই হাত টানা দিয়ে গ্রিলের সঙ্গে বাঁধা হয়। ডিশের কেব্‌ল দিয়ে পেট বরাবর আরেকটি বাঁধন পেছনে গ্রিলের সঙ্গে। পা দুটিও জোড় করে বাঁধা হয়। এ অবস্থায় কিশোরটিকে মারধর করতে দেখা যায় এক যুবককে। যন্ত্রণায় চিৎকার করছে কিশোরটি।

গতকাল শনিবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ রকম একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওর ক্যাপশনে ঘটনাস্থল চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট পুকুরপাড় এবং মুঠোফোন চুরির কথা উল্লেখ করা রয়েছে। মুঠোফোন চুরির অভিযোগ তুলে কিশোরটিকে পেটানো হয় বলে জানা গেছে। তবে মারধরের ঘটনাটি কখন ঘটেছে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

কিশোর কিংবা যিনি মারধর করছিলেন, তাঁর পরিচয় পাওয়া যায়নি। মারধরকারী যুবকটির পরনে ছিল ছাই রঙের টি–শার্ট। কলার মোটা একটা কান্দি দিয়ে তিনি অনবরত পিটিয়ে যাচ্ছিলেন কিশোরটিকে। এ ঘটনা অনেকে দাঁড়িয়ে দেখছিলেন। কেউবা ভিডিও করছিলেন। তবে এক ব্যক্তি হাত দিয়ে মারধরকারী যুবকটিকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু যুবকটি অনবরত মারধর করেই যাচ্ছিলেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটির নিচে অনেকে কিশোরকে মারার পক্ষে–বিপক্ষে মন্তব্য করেছেন। মো.

হুমায়ূন নামের এক ব্যক্তি মন্তব্য করেছেন, ‘যাদের কাছে বড় চোরের খবর থাকে না, তারা এইসব ছোট চোর পেলে এ রকম করে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভিডিওটি আমি দেখিছি। আজ (রোববার) দুপুরে আমি পুলিশ পাঠিয়েছি। কিন্তু কেউ কিছু জানে না বলেছে। তারা এভাবে না মেরে আমাদের হাতে দিলেও হতো।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম রধর

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক এডিসি ইশতিয়াকের নির্যাতন নিয়ে অভিযোগ জমা দিলেন রাশেদ খান

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিটিসি) সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ইশতিয়াক আহমেদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ জমা দিয়েছেন গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান।

২০১৮ সালের ১ জুলাই ইশতিয়াক আহমেদ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) সাইবার ক্রাইম ইউনিটে তাঁর কক্ষে রাশেদ খানের ওপর নির্যাতন চালান বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

অভিযোগে রাশেদ খান বলেন, ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার করার পর পুলিশ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে ইশতিয়াক আহমেদের কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি বুট জুতা পরা অবস্থায় তাঁর গোপন অঙ্গে লাথি মারেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে গালিগালাজ ও অনবরত চড়থাপ্পড়, লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন।

আজ বুধবার দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে এ অভিযোগ জমা দেন রাশেদ খান।

অভিযোগে রাশেদ খান বলেন, ২০১৮ সালে গ্রেপ্তার করার পর পুলিশ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাঁকে ইশতিয়াক আহমেদের কক্ষে নিয়ে যায়। সেখানে তিনি বুট জুতা পরা অবস্থায় তাঁর গোপন অঙ্গে লাথি মারেন। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে গালিগালাজ ও অনবরত চড়থাপ্পড়, লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন।

ওই নির্যাতনের রেশ এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি উল্লেখ করে রাশেদ খান বলেন, ‘সেই নির্যাতনে আমার শরীরের মাংসপেশি শক্ত হয়ে যায়। অনেক জায়গা থেঁতলে যায়। এখন মাঝেমধ্যে প্রেশার কমে শরীর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। ব্যথায় ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না, ঘুমের মধ্যে আঁতকে উঠি।’

অত্যাচার করা হলেও পুলিশ তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করেনি অভিযোগ করে রাশেদ খান বলেন, ‘আমাকে মাত্র কয়েকটি ব্যথার ট্যাবলেট দিয়েছিল পুলিশ।’

ইশতিয়াক আহমেদকে গ্রেপ্তারে দেরি করা হয়েছে উল্লেখ করে রাশেদ খান বলেন, বিচার যত ধীরে শুরু হবে, অপরাধীরা তত দেশ ছেড়ে পালাবে। প্রশাসনের গাফিলতির সুযোগে অনেক অপরাধী দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। অন্য অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হোক।

ইশতিয়াক আহমেদের নির্যাতনের শিকার অন্য ভুক্তভোগীদেরও মামলা করার আহ্বান জানিয়ে রাশেদ খান বলেন, ‘আমি জানতে পেরেছি, ইশতিয়াক আহমেদ জামিন পেয়ে যেতে পারেন। তাঁকে ছাড়া হলে ভুক্তভোগীদের সঙ্গে অন্যায় করা হবে।’

এর আগে গত রোববার পুলিশ সিটিটিসির সাবেক এ অতিরিক্ত উপকমিশনারকে রাঙামাটি থেকে গ্রেপ্তার করে। জুলাই গণ–অভ্যুত্থান চলাকালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয় তাঁকে। গতকাল মঙ্গলবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হলে আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠিয়ে দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সাবেক এডিসি ইশতিয়াকের নির্যাতন নিয়ে অভিযোগ জমা দিলেন রাশেদ খান