শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের কারণ কী, ভাঙচুরের জন্য পুলিশের দায় দেখছে সিটি কলেজ কর্তৃপক্ষ
Published: 22nd, April 2025 GMT
আগের দিন এক সহপাঠীকে মারধরের জের ধরে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা আজ মঙ্গলবার দল বেঁধে হামলা করেন ঢাকা সিটি কলেজে। দুপুরে প্রায় তিন ঘণ্টা দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে অন্তত সাতজন আহত এবং সিটি কলেজে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। ভাঙচুর ঠেকাতে পুলিশ সদস্যরা কোনো পদক্ষেপ নেননি বলে অভিযোগ করেছে সিটি কলেজ কর্তৃপক্ষ।
কী নিয়ে এই সংঘর্ষ, সে বিষয়ে পুলিশ বলছে, গতকাল ঢাকা কলেজের পোশাক পরিহিত (উচ্চমাধ্যমিক) এক শিক্ষার্থীকে কয়েকজন সায়েন্স ল্যাব মোড়ে মারধর করে। এ সময় ওই শিক্ষার্থী পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হন। ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, যারা মারধর করেছে, তাদের শরীরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পোশাক ছিল না। এ ঘটনায় সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা জড়িত, এমন দাবি করে আজ বেলা ১১টার পর ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজের ফটকে এসে হামলা ও ভাঙচুর করেন। এর জেরেই তিন ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওই হামলার পর দুপুর পৌনে ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত দফায় দফায় লাঠিসোঁটা নিয়ে মুখোমুখি অবস্থান নেন দুই কলেজের শিক্ষার্থীরা। তাঁদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পুলিশও লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে শিক্ষার্থীদের রাস্তা থেকে দফায় দফায় সরিয়ে দেয়। বেলা তিনটার পর থেকে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। এ সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে অন্তত সাতজন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে তাঁদের মধ্যে কে কোন কলেজের শিক্ষার্থী, তা জানা যায়নি।
পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম সাংবাদিকদের বলেন, গতকালের মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজের এখানে এসে ভাঙচুর চালান। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে দুই পক্ষকে দুই দিকে ঠেলে দেয়। প্রথমে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের তাঁদের ক্যাম্পাসে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এরপর সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বের হয়ে আসে। পরে তাঁদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়। এসব শিক্ষার্থীর (সিটি কলেজ) মধ্যে উচ্ছৃঙ্খল কেউ কেউ যেকোনো কারণেই হোক পুলিশের ওপর ক্ষিপ্ত। তাঁরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। তারপরও তাঁদের বুঝিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে যেতে বলা হয়। তাঁদের কেউ কথা শুনে আবার কেউ কথা শোনেন না। তাঁরা পুলিশের ওপরে ব্যাপক আকারে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। তারপর শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করা হয়েছে।
ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ চলাকালে মারমুখী ভঙ্গিতে এক পক্ষের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানী সায়েন্স ল্যাব এলাকায়.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কল জ র শ ক ষ র থ দ র কল জ র শ ক ষ র থ র স ঘর ষ র ঘটন ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের
মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
এ দিন শিশুকে চিকিৎসা প্রদানকারী তিন চিকিৎসক সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন– মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডা. সোহাস হালদার, নাকিবা সুলতানা এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. ইসরাত জাহান। তারা সবাই শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামলার ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বিগত চার কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। এ নিয়ে মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আগামী রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাদে অন্য সব সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। বুধবার আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন। আসামিরাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশুটি। এই ধর্ষণের ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে ঢাকা সিএমএইচে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। ১৩ মার্চ শিশুটি সেখানে মারা যায়। এ ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বড় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখসহ চারজনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। রিমান্ডে হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।