ফেনীতে একাধিক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা, প্রতিবাদে মানববন্ধন-সমাবেশ
Published: 24th, April 2025 GMT
ফেনীতে গণমাধ্যমে কর্মরত একাধিক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন রহিম উল্লাহ নামের এক বিএনপি নেতা। রহিম উল্লাহ জেলার ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। একটি সংবাদ প্রকাশের জের ধরে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে গতকাল বুধবার বিকেলে এই মামলা করেন তিনি। তবে অভিযোগকে ভিত্তিহীন ও হয়রানিমূলক দাবি করে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলার কর্মরত সাংবাদিকেরা প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন।
ফুলগাজীর আমলি আদালতের বিচারক চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাতেমা তুজ জোহরার আদালতে মামলা দায়েরের পর আদালত আমলে নিয়ে জেলা গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্টের ফেনী জেলা প্রতিনিধি ও দৈনিক ফেনীর নিজস্ব প্রতিবেদক তারেক চৌধুরী, দৈনিক ফেনী পত্রিকার সম্পাদক আরিফুল আমিন, দৈনিক ফেনীর প্রতিবেদক মামুনুর রহমান, ঢাকা পোস্টের জামশেদ আলম ও ওমর ফারুক।
জানা যায়, ২২ এপ্রিল ‘সীমান্তে চোরাচালান সাম্রাজ্যে ইউপি সদস্য, বললেন ব্যবসা করি’ শিরোনামে ফুলগাজী উপজেলার আমজাদহাট ইউনিয়নে মাদকের কারবার, চোরাচালান ও মানব পাচার চক্র নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে দৈনিক ফেনী ও অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্ট। এই প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার পরই মামলা করেন রহিম উল্লাহ।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ৪ এপ্রিল দৈনিক ফেনীর সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে রহিম উল্লাহর সঙ্গে কিছু কথা বলার জন্য সময় চান তারেক চৌধুরী। ১৮ এপ্রিল চারজন সাংবাদিক দৈনিক ফেনী ও ঢাকা পোস্টের লোগো সংবলিত মাইক্রোফোন নিয়ে বাদীর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করে মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করেন ও প্রশ্ন করতে থাকেন। তাঁরা তারেক চৌধুরীর হয়ে সংবাদ প্রকাশ না করতে রহিম উল্লাহর কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন।
তবে চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করেন দৈনিক ফেনীর নিজস্ব প্রতিবেদক ও ঢাকা পোস্টের জেলা প্রতিনিধি তারেক চৌধুরী। তিনি বলেন, স্থানীয় লোকজনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মুঠোফোনে রহিম উল্লাহর বক্তব্য নিয়েছি। এতে সবকিছুর দায় স্বীকার করে এসব কর্মকাণ্ড তাঁর পেশা বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রতিবেদনে সেটিই লেখা হয়েছে। তিনি যদি অভিযোগ অস্বীকার করতেন, তখন সেটিই লেখা হতো। ১ মিনিট ৪৪ সেকেন্ডের সম্পূর্ণ কলরেকর্ড সংরক্ষিত আছে। পাশাপাশি দৈনিক ফেনীর ফেসবুক পেজেও এটি প্রকাশিত হয়েছে। সেখানে কোথাও চাঁদা দাবি কিংবা সংবাদের বিষয়ের বাইরে কোনো কথা হয়নি। তিনি এজাহারে যা উল্লেখ করেছেন তা সম্পূর্ণ বানোয়াট ও কাল্পনিক।
এদিকে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন জেলায় কর্মরত সাংবাদিকেরা। এ সময় মামলার বাদী ইউপি সদস্য ও বিএনপিকর্মী রহিম উল্লাহর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
আজ দুপুরে শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন সাংবাদিক এ কে এম আবদুর রহিম, মুহাম্মদ আবু তাহের ভূঁইয়া, আবু তাহের, দিলদার হোসেন, মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
ফতুল্লায় জলাবদ্ধতা নিরসনের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন
ফতুল্লার লালপুর পৌষাপুকুর পাড় এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধানের জন্য মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
আগামী দুই দিনের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে সড়ক অবরোধ সহ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ঘেরাও করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে মানববন্ধন থেকে। এক পর্যায়ে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী। এতে করে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ পুরাতন সড়কের উভয় পাশে যানবাহন বন্ধ হয়ে যানজটের সৃস্টি হয়।
বুধবার সকাল ১০ টার দিকে ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের সামনে এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুস্ঠিত হয়। ১১ টার দিকে ফতুল্লা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ঘটনাস্থলে এসে এলাকাবাসীর সাথে কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা হয়েছে। তিনি আশ্বাস দিয়ে বলেন আজ দুপুরের পর এলাকাবাসীর সাথে নির্বাহী কর্মকর্তা কথা বলবেন তাদের সমস্যার কথা শুনবেন এবং দ্রুতই তা সমাধানের জন্য কাজ করবেন।
এ সময় লালপুর পৌষাপুকুরপাড় পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি মোসলেম উদ্দিন মুসা বলেন জলাবদ্ধতার কারনে মুসুল্লিরা নামাজ পরতে পারছেনা,কর্মজীবিরা কাজে যেতে পারছেনা,স্কুল -কলেজ পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রীরা তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারছেনা,নোংরা পানির কারনে ঘরে ঘরে পরিবারের সদস্যরা অসুস্থ হয়ে পরেছে।
আমাদের কে আশ্বাস করেছিলো সেনাবাহিনী কতৃক যে পাম্প বসানো হয়েছিলো সেটা চালু হলে আমাদের দ্ঃূক কস্ট লাঘব হবে। কিম্ত সে পাম্প চালু হলেও আমাদের কস্ট শেষ হয়নি। সেই পাম্প আমাদের কোন কাজে আসেনি।
আমরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারক লিপি দিয়েছি তারা এসে দেখেও গেছে কিন্ত আজো সমস্যার সমাধান করা হয়নি। বিগত সরকারের আমলে তখনকার চেয়ারম্যান, এমপি সাহেবের নিকট গিয়েছি। শামীম ওসমান এসে দেখে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে। তা শুধু কথার কথাই ছিলো। কিন্ত কোন কাজে আসেনি।
ইউপি সদস্য মাঈনুদ্দিন জানায়, দীর্ঘদন যাবৎ আমরা এই সমস্যা আছি। মৃত মানুষের লাশ পযন্ত দাফন করতে পারছিনা। মসজিদের ভিতরে পানি নামাজ পরতে পারছিনা। রাস্তায় বের হতে পারছিনা।
আমাদের কোরবানী ঈদে পশু কোরবানী দিতে হয় ছাদের ওপরে নতুবা অন্য এলাকায় গিয়ে। এ সব কিছুই সরকারের সকল বিভাগের কর্মরত কর্তার জানে। কিন্ত শুধু আশ্বাস পেয়ে গেছি। কোন সমাধান পাইনি তাই আজ বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে আমাদেরকে।
আমরা দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার কবলে রয়েছি। এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। ফতুল্লায় এতো উন্নয়ন হয়, কিন্তু লালপুর পৌষাপুকুর পাড়ের জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী কোন সমাধান হচ্ছেনা। আমরা চাই এই জলাবদ্ধতা নিরসনে স্থায়ী সমাধান হোক।
ব্যবসায়ী হাবিব জানায়, আমাদের সমস্যা দীর্ঘদিনের। হাসিনা সরকারের আমলে আমাদের কোন কাজ হয় নাই। আমরা সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারক লিপি দিয়েছি। কিন্ত কোন কাজ হয়নি। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি কোন প্রকার টেক্স আর দিবোনা।
এসময় আরো বক্তব্য রাখেন, লালপুর- পৌষাপুকুরপাড় পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক আঃ বারী, আজাদুর রহমান আজাদ,আলামিন বাগ পঞ্চায়েতের সাধারণ সম্পাদক রফিক, লালপুর আলামিন বাগ পঞ্চায়েতের সভাপতি মো. জনি, শামীম।