বন্দরে তিন টার্মিনাল পরিচালনায় তিন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি হবে
Published: 24th, April 2025 GMT
চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ থেকে কনটেইনার ওঠানো–নামানোর তিনটি টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনায় তিন বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এ বছরই চুক্তি হচ্ছে। প্রতিষ্ঠান তিনটি হলো ডেনমার্কের এপি-মুলার মায়েরস্ক, সিঙ্গাপুরের পিএসএ এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ড।
আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দরের শহীদ ফজলুর রহমান মুন্সি মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা জানান বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান। ১৩৮তম বন্দর দিবস উপলক্ষে এই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দর চেয়ারম্যান বলেন, বে টার্মিনাল প্রকল্পের স্রোত প্রতিরোধক তৈরিতে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। এ বছরের শেষে সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্বের আওতায় প্রকল্পের দুটি টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার চুক্তি হবে। এর মধ্যে কনটেইনার টার্মিনাল–১ সিঙ্গাপুরের পিএসএ এবং কনটেইনার টার্মিনাল–২ আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারে কাজ এগিয়ে চলছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২০৩১ সালে বে টার্মিনাল চালুর আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বন্দর চেয়ারম্যান জানান, এই দুটি ছাড়াও সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্বের ভিত্তিতে এ বছর লালদিয়ায় কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার চুক্তি হবে ডেনমার্কের এপি–মুলার মায়েরস্কের সঙ্গে। বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই বিনিয়োগ করে টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনা করবে।
নিউমুরিং টার্মিনাল বিদেশিদের হাতে দেওয়া নিয়ে বন্দর চেয়ারম্যান লিখিত বক্তব্যে বলেন, নিউমুরিং টার্মিনালটি একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ টার্মিনাল। এ টার্মিনালটি পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক টার্মিনাল অপারেটর নিয়োগের বিষয়টি চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য লাভজনক হবে কি না এবং বাংলাদেশের বন্দর পরিচালনার জন্য দক্ষতা বৃদ্ধি পাবে কি না, তা যাচাই–বাছাই করা হচ্ছে।
মতবিনিময় সভায় বন্দর পর্ষদের সদস্য মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম, এখানে সাম্প্রদায়িকতার জায়গা নেই: জেড আই খান পান্না
মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর দ্বিজাতিতত্ত্বের কবর দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে মন্তব্য করে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেছেন, এই দেশে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই।
আজ শুক্রবার সুপ্রিম কোর্ট বারের হলরুমে ‘বাংলাদেশে মানবাধিকার সংকট ও আইনি প্রতিকার পাওয়ার পথ’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন জেড আই খান পান্না। সেমিনারটির আয়োজন করে আন্তর্জাতিক সংস্থা হিউম্যান রাইটস কংগ্রেস ফর বাংলাদেশ মাইনোরিটিস (এইচআরসিবিএম), বাংলাদেশ চ্যাপ্টার।
বক্তব্যে জেড আই খান পান্না বলেন, ‘এখানে সংখ্যালঘুর কথা বলা হচ্ছে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এখন আমি সবচেয়ে বেশি সংখ্যালঘু। আজ মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা দেখি, জুতা দিয়ে বাড়ি দিতে দেখি, কিন্তু কিছু করতে পারি না। তাই আমি সবচেয়ে বড় অসহায়।’
এসব কথা বলতে বলতে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না কেঁদে ফেলেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, জীবনে কখনো জেনে-বুঝে অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধকে ধারণ করেন, তাঁদের অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান তিনি।
জেড আই খান পান্না আরও বলেন, ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, কারও সঙ্গে এর তুলনা চলে না। এটা সাম্প্রদায়িকতার দেশ না। সংবিধানে যেন কেউ হাত না দেয়। সরকারের অনেকেই বিদেশি হয়েও স্বদেশি ভাব দেখাচ্ছেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সুব্রত চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার যেন নিঃশেষ হয়ে গেছে। সমাজে ন্যায়বিচার বা সুবিচার পাওয়ার কথা থাকলেও তা মিলছে না। সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিচার হয় না। কেউ কেউ ধরা পড়লেও পরে বেরিয়ে যায়।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সুমন কুমার রায় বলেন, সব সরকারের আমলেই বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত। বর্তমান নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী। সংস্কার কমিশনে সংখ্যালঘুদের কোনো প্রতিনিধিত্ব নেই। রংপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় হামলা হলেও সরকারের কোনো প্রতিক্রিয়া আসে না, এমনকি দুঃখও প্রকাশ করে না।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদ শুরু হলে তা দমন করতেই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে উল্লেখ করে সুমন কুমার দাবি করেন, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সনাতনী সম্প্রদায়ের বাক্স্বাধীনতা বন্ধ করতে, নেতৃত্ব দমন করতে এসব করা হচ্ছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জে কে পাল। সঞ্চালনায় ছিলেন এইচআরসিবিএমের বাংলাদেশ চ্যাপটারের আহ্বায়ক লাকি বাছাড়। সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরশেদ ও মো. গোলাম মোস্তফা।