অস্ট্রেলিয়ান লেখকদের সর্বাধিক পরিচিত রচনাগুলোর অন্যতম ঔপন্যাসিক মরিস ল্যাংলো ওয়েস্টের ‘দ্য ডেভিলস অ্যাডভোকেট’ এবং ‘দ্য শুজ অব দ্য ফিশারম্যান’। বঞ্চিত বস্তির শিশুদের নিয়ে নন-ফিকশন গল্পের ‘চিলড্রেন অব দ্য শ্যাডোস’ তাঁর অনন্য সৃষ্টি। ওয়েস্টের বইগুলোকে ‘ধর্মীয় থ্রিলার’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। ধর্ম এবং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রকে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপট এবং প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সঙ্গে যোগসূত্র স্থাপন করেন তিনি। আজ এই প্রতিভাধর লেখকের জন্মদিন। ১৯১৬ সালের ২৬ এপ্রিল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নের সেন্ট কিল্ডায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৯৯ সালের ৯ অক্টোবর সিডনিতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। 
মরিস ওয়েস্ট তাঁর দীর্ঘ লেখালেখির জীবনে অনেক পুরস্কার, প্রশংসা ও মানুষের ভালোবাসা পেয়েছেন। ৩০টি বই এবং অনেক নাটক লিখেছেন। তাঁর বেশ কয়েকটি উপন্যাস নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। তাঁর বইগুলো ২৮টি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছিল এবং বিশ্বব্যাপী ৬০ মিলিয়নেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছিল। একজন প্রতিষ্ঠিত লেখক হওয়ার পর পাঠকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহের সৃষ্টি হয়। তাঁর প্রতিটি নতুন বই দশ লাখেরও বেশি কপি বিক্রি হয়েছে। 
লেখক হিসেবে তাঁর কর্মজীবন শুরুর আগে তিনি বৈচিত্র্যময় পেশায় নিযুক্ত ছিলেন। চৌদ্দ বছর বয়সে শৈশব জীবন অতিবাহিত করতে আশ্রয়স্থল হিসেবে ক্রিশ্চিয়ান ব্রাদার্স সেমিনারিতে প্রবেশ করতে হয়েছিল তাঁকে। বেশ কয়েক বছর ছিলেন সেখানে। চূড়ান্ত শপথ নেওয়ার আগেই ক্রিশ্চিয়ান ব্রাদার্স ত্যাগ করে মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন এবং পরে শিক্ষক হিসেবে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি একজন কোড-ব্রেকার হিসেবে কাজ শুরু করেন। কিছু সময়ের জন্য তিনি অস্ট্রেলিয়ার সপ্তম প্রধানমন্ত্রী বিলি হিউজের একান্ত সচিব হিসেবে কাজ করেন। পরে সেনাবাহিনীতে যুক্ততার মধ্য দিয়ে তিনি নতুন অধ্যায়ের পরিকল্পনা করেন। সেনাবাহিনী থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি মেলবোর্নে দ্য হেরাল্ডের রেডিও নেটওয়ার্কে কাজ শুরু করেন। পরে অস্ট্রেলাসিয়ান রেডিও প্রোডাকশনে যুক্ত হন। স্থায়ী হওয়ার পরিকল্পনা করেন কিন্তু বছর দশেকের মধ্যে তিনি ভেঙে পড়েন এবং ব্যবসার তাঁর অংশ বিক্রি করে দিয়ে লেখক হিসেবে সিডনিতে বসবাস শুরু করেন। ১৯৫৫ সালে একজন লেখক হিসেবে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার গড়ার জন্য অস্ট্রেলিয়া ত্যাগ করে ইতালির সোরেন্টোতে গমন করেন। পরিবারের সঙ্গে তিনি অস্ট্রিয়া, ইতালি, ইংল্যান্ড এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও বসবাস করেন। এ যাত্রা পথে তিনি ব্রিটিশ সংবাদপত্র ডেইলি মেইলের ভ্যাটিকান সংবাদদাতা হিসেবেও কাজ করেছিলেন। ১৯৮২ সালে তিনি আবার অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে আসেন।
এ সময়ের মধ্য তিনি চিলড্রেন অব দ্য সান, দ্য ডেভিলস অ্যাডভোকেট, ডটার অব সাইলেন্স, দ্য জুস অব দ্য ফিশারম্যান, দ্য অ্যামবাসাডর, দ্য টাওয়ার অব ব্যাবেল, সামার অব দ্য রেড উলফ, দ্য নেভিগেটর, প্রোটিয়াস এবং দ্য ক্লাউনস অব গড-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস রচনা করেন।
১৯৯৬ সালে ‘আ ভিউ ফ্রম দ্য রিজ: দ্য টেস্টিমনি অব আ টোয়েন্টিথ-সেঞ্চুরি ক্রিশ্চিয়ান’ আত্মজীবনীর প্রকাশের মাধ্যমে ওয়েস্ট জীবনের নানা বাঁকের অনেক অজানা বিষয়ের অবতারণা করেন। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অব দ য

এছাড়াও পড়ুন:

পেহেলগামে হামলার পর প্রতিশোধের আশঙ্কায় দিন কাটছে ভারতীয় মুসলিমদের


ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে সম্প্রতি সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার পর মুসলিমদের ব্যাপকভাবে ধরপাকড় ও তাঁদের ঘরবাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে। মানবাধিকারকর্মীদের আশঙ্কা, উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা পেহেলগামের হামলাকে ব্যবহার করে দেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর ওপর দমন–পীড়ন আরও বৃদ্ধি করছে।

কাশ্মীরের পেহেলগাম শহরের কাছে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন, যাঁদের মধ্যে একজন বাদে বাকি প্রায় সবাই হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। পর্যটক হিসেবে তাঁরা ভারতের বিভিন্ন রাজ্য থেকে পেহেলগামে গিয়েছিলেন। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে, যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ জোরালোভাবে নাকচ করে দিয়েছে।

পেহেলগামে সশস্ত্র গোষ্ঠীর হামলার জবাবে ভারত সামরিকভাবে পাকিস্তানকে জবাব দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সন্ত্রাসীদের খুঁজে বের করে তাদের ঘাঁটি ধ্বংস করে দেওয়া হবে। পাকিস্তান সরকারের একজন মন্ত্রী জানিয়েছেন, তাঁরা বিশ্বাস করেন ভারত শিগগিরই সামরিক হামলা চালাতে পারে।

এই মুহূর্তে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার মূলত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নিচ্ছে। যেমন আন্তসীমান্ত নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধের হুমকি দিচ্ছে। একই সঙ্গে বিজেপি সরকার ও উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলো ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে মুসলিমদের হয়রানি করছে। তারা এটিকে ‘অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান’ বলে দাবি করছে।

মোদির বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলোতে কর্তৃপক্ষ এই সুযোগে ‘অবৈধ বাংলাদেশি’ এবং ‘রোহিঙ্গাদের’ বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করেছে। রোহিঙ্গারা মূলত মিয়ানমার থেকে পালিয়ে এসেছেন। ‘পাকিস্তানি’ বা ‘বাংলাদেশি’ তকমা অনেক সময়েই হিন্দুত্ববাদীরা ভারতের অভ্যন্তরীণ মুসলিমদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে থাকে।

উত্তর প্রদেশ ও কর্ণাটক—এই দুই রাজ্যে মুসলিমদের হত্যার খবর পাওয়া গেছে। গণমাধ্যমের খবরে সেগুলোকে বিদ্বেষমূলক অপরাধ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী কাশ্মীরে ইতিমধ্যেই শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে। সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে যাঁদের সন্দেহ করা হচ্ছে, তাঁদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক সরকারি কর্মকর্তার মতে, প্রায় দুই হাজার মানুষকে আটক করা হয়েছে, যা অনেকটা সমষ্টিগত শাস্তির মতো।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস
  • একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
  • বড় বন্দরে ভারী কাজ করেও চলে না সংসার 
  • নাটোরে ছুরিকাঘাতে প্রাণ গেল একজনের
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতির মেয়ে
  • ফরিদপুর জেলা এনসিপি’র কমিটি গঠনের দায়িত্বে মহিলা আ’লীগ সভাপতি মেয়ে
  • ৫০ পেরোনো নারীর খাদ্যাভ্যাস যেমন হতে হবে
  • যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করতে কাজ করছে চীন
  • সেলফি’র ধাক্কায় গণস্বাস্থ্যের কর্মীর মৃত্যু, ৬ বাস আটক
  • পেহেলগামে হামলার পর প্রতিশোধের আশঙ্কায় দিন কাটছে ভারতীয় মুসলিমদের