ফ্যাসিবাদ নির্মূল না করে গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না: নুর
Published: 25th, April 2025 GMT
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নূর বলেছেন, “গণঅভ্যুত্থানের আট মাসেও গণহত্যার বিচার ও গণহত্যাকারীদের গ্রেপ্তারে দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে রাজনৈতিক দলগুলো নিজদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত ও আধিপত্য কায়েমে ব্যস্ত হয়ে গেছে। যে কারণে আওয়ামী ফ্যাসিবাদীরা রাজপথে নেমে হুঙ্কার দিচ্ছে। কিন্তু ফ্যাসিবাদ নির্মূল না করে গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না।”
জুলাই আগষ্টের গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে শুক্রবার মোহাম্মদপুর বসিলা বাসস্ট্যান্ডের পাশে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
নুর বলেন, “জুলাই বিপ্লবের পর দলগুলো নিজেদের সমীকরণ মেলাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। যে কারণেই অভ্যুত্থানের আট মাস পার হলেও নিরীহ ছাত্র-জনতার ওপর যারা হামলা চালিয়েছে, গুলি চালিয়েছে তাদের বিচার করা সম্ভব হয় নাই।”
আরো পড়ুন:
আদালত চলতো হাসিনার নির্দেশে, রায় আসতো গণভবন থেকে: নুর
উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠনসহ চার দফা দাবি গণঅধিকার পরিষদের
“প্রশাসন আগের মতো দলবাজি শুরু করছে। ২/১ টি দলের সাথে সখ্যতা গড়ে তাদের কাজ চালাতে চাচ্ছে। প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বলতে চাই যারা দলবাজি করবে তাদের পরিণতি হারুন-বেনজীরদের মতো হবে।”
তিনি বলেন, “সড়ক-পরিবহন, কল-কারখানা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন এলাকায় এখনো চাঁদাবাজি-দখলবাজি চলছে। কিশোর গ্যাং, মাদক ব্যবসায়ীসহ অপরাধীদের রাজনৈতিক নেতারা শেল্টার দিচ্ছে, জনগণ এগুলো পছন্দ করছে না।এদের বিরুদ্ধে জনগণকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। এদেশের বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রাম, অধিকার আদায়ে সাধারণ শ্রমজীবী মানুষ, কৃষক-শ্রমিক জীবন দেয় আর সুযোগ-সুবিধা ভোগ ভাঁওতাবাজ ও ভণ্ড নেতারা, ওপর তলার কিছু লোকেরা। তাই সাধারণ এখন নেতৃত্ব এগিয়ে আসতে হবে।”
রাষ্ট্রের সংস্কার করে গণতান্ত্রিক ও মানবিক রাষ্ট্র গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে নুর বলেন, “ফ্যাসিবাদ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত গণঅধিকার পরিষদ ঘরে ফিরবে না। ফ্যাসিবাদ নির্মূলে আজ থেকে গণঅধিকার পরিষদের প্রতিরোধ শুরু হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের অংশীদার রাজনৈতিক দলসমূহকে আওয়ামী লীগ প্রশ্নে অবস্থান পরিস্কার করার আহ্বান জানাই।”
“জুলাইয়ের বীর-জনতাকে আরেকটু ধাক্কা দিয়ে ফ্যাসিবাদ নির্মূল করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে ফ্যাসিবাদকে চিরতের উৎখাত করতে জুলাই আন্দোলনের সব অংশীজনকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানাই।”
নুরুল হক নুর বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিপূরণ নিয়েও রাজনীতি চলছে যা মোটেও কাম্য নয়। বর্তমান রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলে দেশের সংষ্কার প্রয়োজন বলেই সরকারের বিরুদ্ধে গণঅধিকার পরিষদ কোন বক্তব্য দেয় নাই। তবে আহতদের সুচিকিৎসা ও ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতি পূরণ না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছেমতো রাষ্ট্র পরিচালনা করলে তা মেনে নেওয়া হবে না।”
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যারা অংশ নিয়েছেন, যারা ফ্যাসিবাদ হটাতে সক্রিয় ছিলেন, আগামী বাংলাদেশে নেতৃত্ব দিতে তাদেরকে প্রস্তুত হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।
এ সময়ে গণঅধিকার পরিষদ ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান ভূঁইয়াকে ঢাকা-১৩ আসনে গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থী হিসেবে উপস্থিত নেতাকর্মী-জনতার মাঝে পরিচয় করিয়ে দেন নুরুল হক।
গণঅধিকার পরিষদ মহানগর উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিমের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদের সদস্য অ্যাডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি নাজিম উদ্দীন, ঢাকা মহানগর উত্তরে সহ-সভাপতি রকিবুল হাসান রাকিব, সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফারজানা কিবরিয়া, যুগ্ম সাধারণ মো.
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ল হক ন র গণঅভ য ত থ ন গণঅধ ক র প র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
ইয়েমেনে মার্কিন হামলাকে ‘যুদ্ধাপরাধ’ আখ্যা দিয়ে নিন্দা ইরানের
ইয়েমেনের বিভিন্ন স্থানে, যার মধ্যে আফ্রিকান অভিবাসীদের জন্য নির্ধারিত একটি আটক কেন্দ্রও রয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাণঘাতী বিমান হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ইরান। খবর প্রেস টিভির।
গতকাল সোমবার ইয়েমেনের সা’দা প্রদেশে আফ্রিকান অভিবাসীদের জন্য নির্ধারিত একটি আটক কেন্দ্র লক্ষ্য করে মার্কিন বিমান হামলায় প্রায় ৭০ জন বন্দী নিহত এবং ৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে বেশিরভাগেরই অবস্থা গুরুতর।
এছাড়া একই দিনে ইয়েমেনের রাজধানী সানার উত্তরাঞ্চলের বানি আল-হারিথ জেলার থাকবান এলাকায় মার্কিন বিমান হামলায় অন্তত আটজন নিহত এবং আরো বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
আরো পড়ুন:
ইয়েমেনে কারাগারে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা, নিহত ৬৮
ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলায় নিহত ৮
সোমবার এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই এক বিবৃতিতে বলেন, “ইয়েমেনের বিভিন্ন অংশে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তু, গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো এবং মানুষের বাড়িঘরে মার্কিন সামরিক বাহিনীর অব্যাহত হামলা, যার ফলে শত শত নিরীহ মানুষ নিহত হয়েছে, তা ‘যুদ্ধাপরাধ’।”
তিনি জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ‘এই সুস্পষ্ট আইন লঙ্ঘন এবং ইয়েমেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার ঘন ঘন লঙ্ঘনের প্রতি নীরব এবং উদাসীন’ ভূমিকার জন্য সমালোচনা করেছেন।
ইরানের মুখপাত্র আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ইসরায়েল ফিলিস্তিনে গণহত্যামূলক যুদ্ধ এবং লেবাননের বিরুদ্ধে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে।
বাঘাই বলেন, ইয়েমেনের বিরুদ্ধে মার্কিন সামরিক আগ্রাসন ইসরায়েলি সরকারের ‘মুসলিম দেশগুলোকে ধ্বংস ও দুর্বল করার এবং পুরো পশ্চিম এশিয়া অঞ্চলে নিরাপত্তাহীনতা ছড়িয়ে দেওয়ার’ দুষ্ট পরিকল্পনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।
ইয়েমেনের মুসলিম জনগণের হত্যা বন্ধে এবং গাজা ও পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের ‘গণহত্যা’ অব্যাহত রাখা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য বাঘাই ইসলামী রাষ্ট্রগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
ঢাকা/ফিরোজ