সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য সকল রাজনৈতিক দল ও জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও ইমেরিটাস সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি আশা করি বর্তমান পরিস্থিতিতে ছাত্র-জনতার যে ঐক্য গড়ে উঠেছে, তাতে দেশ গড়ার কাজে নতুন দিগন্ত তৈরি হবে।’

সোমবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে তার ৮৮তম জন্ম উৎসবে দেওয়া শুভেচ্ছা বক্তব্যে ড.

কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। বাংলাদেশের সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল অনুষ্ঠানে প্রথমে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। পরে গুরুতর অসুস্থ এই নেতার একটি লিখিত বক্তব্যও পড়ে শোনানো হয়।

এতে ড. কামাল বলেন, ‘বিগত সময় দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো দলীয়করণের ফলে প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছিল। এসব প্রতিষ্ঠান সংস্কার করতে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে ড. ইউনূসের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারকে সার্বিক সহযোগিতা করা সব রাজনৈতিক দল ও জনগণের নৈতিক দায়িত্ব। যাতে যথাসময়ে অভীষ্ঠ লক্ষ্য ও কর্মসূচি সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন করে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র উত্তরণের পথ সুগম হয়।

দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সুসংহত করতে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, সবাইকে নিয়ে গণতন্ত্র সুসহংত করতে পাশে থাকবো। নতুন প্রজন্মের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রাখতে হবে। কারণ তারাই শত বাধা ও বিপত্তির মুখেও টলেনি। আমাদের বিশ্বাস- আগামী দিনে আমরা সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশকে এগিয়ে নিতে পারবো। দেশে স্থায়ী গণতন্ত্রও প্রতিষ্ঠা করবো।
    
ড. কামাল বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা এবং শোষণমুক্ত সমাজ গড়ে তোলা। কিন্তু ৫৪ বছরে তা অর্জনে আমরা ব্যর্থ হয়েছি।

জুলাই-আগষ্ট গণআন্দোলনে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা ও আহতদের সমবেদনা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘২৪ এর ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে দেশে গণতন্ত্র ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এক নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। দেশের জনগণ স্বপ্ন দেখছে স্বাধীন ও বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশের। কোনো অশুভ শক্তি বা ষড়যন্ত্র যেন এই রক্তস্নাত বিজয় ও মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে, এ ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

শুভেচ্ছা বক্তব্যে বাংলাদেশ জাসদের সভাপতি শরীফ নুরুল আম্বিয়া বলেন, ড. কামাল যতদিন বেঁচে থাকবেন, ততদিন তিনি গণতন্ত্রের বাতিঘর হিসেবে আমাদের আলোর পথ দেখাবেন- এটাই তার জন্মদিনে আমাদের প্রত্যাশা। দ্রুততম সময়ে প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, দেশটা নির্বাচন এবং রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মধ্যে না গেলে দেশ ও গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
 
বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, সংবিধান সংশোধন হতে পারে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সংবিধানকে কবরে পাঠানোর চক্রান্তকে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ করবো। সংবিধান প্রণেতা ড. কামালের জন্মদিনে এটাই হোক আমাদের প্রতিজ্ঞা। 

গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট এসএম আলতাফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমান। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ভাসানী জনশক্তি পার্টির মহাসচিব ডা. আবু ইউসুফ সেলিম, রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ড. আব্দুল লতিফ মাসুম, গণফোরামের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার আফ্রিক প্রমুখ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণফ র ম র গণতন ত র ত র জন আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিপিবি নেতার সৌজন্য সাক্ষাৎ

ভিয়েতনাম সরকারের আমন্ত্রণে দেশটির রাষ্ট্রপতি তো লামের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতা। 

দক্ষিণ ভিয়েতনামের স্বাধীনতা এবং দেশটির জাতীয় ঐক্য দিবসের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে দেশটির হো চি মিন সিটিতে ২৯-৩০ এপ্রিল রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেখানে যোগ দেন সিপিবির সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসান তারিক চৌধুরী।

অনুষ্ঠানে ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদকসহ দেশটির উচ্চ পর্যায়ের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সমাজতান্ত্রিক ভিয়েতনাম সরকারের আমন্ত্রণে বিভিন্ন দেশের উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং সরকারের প্রতিনিধিগণ এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

ভিয়েতনামের সরকার এবং ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠান উদযাপিত হচ্ছে। সমাজতান্ত্রিক ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি এবং ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড তো লাম অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন। 

অনুষ্ঠানের ঘোষণায় বলা হয়েছে, সাম্রাজ্যবাদ এবং নয়া উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির এ আয়োজন এক শক্তিশালী বার্তা দিচ্ছে। সেটি হলো, এশিয়ার নিপীড়িত জনগণ আজ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত। আগ্রাসন, যুদ্ধ এবং সহিংসতা আজ সাধারণ জনগণের প্রতিরোধে সম্মুখীন। এ সংগ্রামে জনগণের জয় অবধারিত।

ঢাকা/সুমি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সাথে পুলিশের মতবিনিময়
  • ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সিপিবি নেতার সৌজন্য সাক্ষাৎ
  • ‘মিয়ানমারকে মানবিক করিডোর দেওয়া স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সংকট’
  • মিয়ানমারকে মানবিক করিডর দেওয়ার অধিকার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই: সিপিবি
  • সাবেক বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ 
  • কোনো মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
  • কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
  • কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু
  • জনগণ গণতন্ত্রের জন‍্য রক্ত দিয়েছে, কোনো মহামানবের প্রতিষ্ঠার জন্য নয়: আমীর খসরু
  • নতুন কর্মসূচি দিল যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদল