অভিযান, পণ্য জব্দের পরও দমছে না চোরাকারবারিরা
Published: 27th, April 2025 GMT
দফায় দফায় বাড়ানো হচ্ছে নজরদারি। নিরাপত্তা চৌকিতে বিজিবির তৎপরতাও কম নয়। এরপরেও সিলেটের দুর্গম সীমান্ত অঞ্চল দিয়ে থামছে না চোরাচালান। স্থানীয়রা বলছেন, দুর্গম অঞ্চলের সীমান্ত জোনে স্থানীয়দের সহায়তা পায় তারা।
সিলেট সীমান্তে বারবার অভিযানে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় পণ্যদ্রব্য উদ্ধার করা হচ্ছে। প্রায় প্রতি সপ্তাহে কোটি কোটি টাকার পণ্যদ্রব্য উদ্ধার করা হলে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে চোরাকারবারি ও বহনকারীরা। এ ছাড়া এসব পণ্য কোন চক্রের মাধ্যমে বাজারে নিয়ন্ত্রিত হয়, তার ব্যাপারে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই।
এক সপ্তাহ আগে আড়াই কোটি টাকার পণ্য উদ্ধারের পর শনিবার সিলেট ব্যাটালিয়নের (৪৮ বিজিবি) আওতাধীন সিলেট জেলার বিভিন্ন সীমান্ত থেকে ৬ কোটি টাকার পণ্য উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে পণ্যবাহী তিনটি ট্রাকও রয়েছে।
জানা গেছে, শনিবার বিজিবি-৪৮ এর উপঅধিনায়ক মেজর নূরুল হুদার নেতৃত্বে সীমান্তে পৃথক অভিযান পরিচালনা করা হয়। তামাবিল, প্রতাপপুর, সংগ্রাম ও শ্রীপুর সীমান্তে অভিযানকালে অবৈধভাবে ভারত থেকে আনা বিপুল পরিমাণ পণ্যসহ চোরাচালানের মালপত্র পরিবহনে ব্যবহৃত তিনটি ট্রাক ও পিকআপ জব্দ করা হয়েছে। উদ্ধার হওয়া ভারতীয় এসব পণ্যের মূল্য ৬ কোটি টাকা বলে বিজিবি জানিয়েছে।
এর আগে গত ১৬ এপ্রিল ৪৮ বিজিবি বিছনাকান্দি, সোনারহাট, পান্থুমাই, সংগ্রাম, লাফার্জ, বাংলাবাজার, প্রতাপপুর, উৎমা ও শ্রীপুর বিওপি ২ কোটি ৫৫ লাখ টাকার চোরাচালানের মালপত্র জব্দ করে। ১৪ এপ্রিল ভারতীয় দুম্বা, ছাগলসহ ৬১ লাখ টাকার এবং ১২ এপ্রিল ১ কোটি ২৮ লাখ টাকার ভারতীয় পণ্য উদ্ধার করে বিজিবি।
জানা গেছে, সিলেটের চোরাচালানের পণ্য নিয়ন্ত্রণকারী জৈন্তাপুরের হরিপুর বাজারের ব্যবসায়ীদের এরই মধ্যে তছনছ করে দিয়েছে সেনাবাহিনী। সেখানে অভিযান পরিচালনার পর চোরাকারবারিরা রুট পরিবর্তন করে নানা কৌশলে বিভিন্ন স্থানে পণ্য নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। আগে হরিপুর বাজারের গুদামে রাখা হতো চোরাই পণ্য। সেসব গুদামে ব্যবসায়ীরা এখন আগের মতো ভারতীয় পণ্য রাখার সাহস পাচ্ছেন না। তারা সরাসারি সীমান্ত থেকে পণ্য নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আর এ কারণেই সীমান্তে চোরাই পণ্যের প্রবাহ বেড়েছে।
চোরাকারবারি ও বহনকারীদের আটক প্রসঙ্গে ৪৮ বিজিবি অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল নাজমুল হক সমকালকে জানান, অভিযানের সময় বিজিবির তৎপরতা টের পেয়ে পণ্য ফেলে পালিয়ে যান চোরাকারবারি চক্রের সদস্যরা। যার কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে তাদের আটক করা সম্ভব হয় না। বিজিবি যেমন অভিযান করছে, তেমনি চোরাকারবারিদের একটা নেটওয়ার্কও রয়েছে। এর মাধ্যমে তারা খবর রাখে অভিযানের।
সিলেট জেলা সীমান্তের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চোরাই পণ্যের সরবরাহ আসে গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রতাপপুর সীমান্ত হয়ে। সেখানকার এলাকা সমতল। তাই চোরাই পণ্য সরবরাহে সুবিধা বেশি। এর পরই রয়েছে সংগ্রাম, বিছনাকান্দি ও তামাবিল সীমান্ত।
এ ছাড়া জৈন্তাপুর উপজেলার রাজবাড়ি বিওপির আওতাধীন ডিবির হাওর, ঘিলাতলা, ফুলবাড়ী ও টিপরাখলা সীমান্ত দিয়ে বেশি চোরাচালান হয়। অভিযোগ রয়েছে, এসব এলাকার সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে আশ্রয় ও সহায়তা পায় চোরাকারবারিরা। এ বিষয়ে গোয়াইনঘাট থানার তোফায়েল আহমেদ জানান, সীমান্ত এলাকায় মূলত বিজিবি টহল দেয়। স্থানীয়রা সচেতন হলে এবং প্রশাসনকে সহায়তা দিলে সমস্যা কমবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ র ক রব র
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জে তাজা গ্রেনেড উদ্ধারের পর নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় একটি তাজা গ্রেনেড পাওয়া গেছে। শুক্রবার (১৩ জুন) সেনাবাহিনীর একটি দল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করে। এর আগে, বৃহস্পতিবার স্থানীয় কৃষক সাব্বির আহমদের জমি থেকে গ্রেনেডটি উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাব্বির তার জমিতে কাজ করছিলেন। এসময় একটি গ্রেনেড সাদৃশ্য বস্তু দেখতে পান তিনি। বিশ্বম্ভরপুর থানায় খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। পরে সেনাবাহিনীর বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটকে খবর দেওয়া হয়। সেনাবাহিনীর একটি দল ঘটনাস্থলে এসে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর নিশ্চিত হয়, এটি একটি তাজা গ্রেনেড। শুক্রবার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।
শান্তিগঞ্জ সেনাবাহিনীর ক্যাম্পের ইনচার্জ লে. কর্নেল আল হোসাইন বলেন, ‘‘গ্রেনেডটির মডেল হচ্ছে এম-৩৬। এটি ব্রিটিশ আমলে সরবরাহ করা হত। ১৯৭২ সালের পর আর এটি সরবরাহ করা হয়নি। এখানে গ্রেনেডটি প্রথম বিশ্বযুদ্ধ কিংবা মুক্তিযুদ্ধের সময়ে কোনোভাবে আসতে পারে। এটি মাটির নিচে একশ বছরের কমবেশি সময় সক্রিয় থাকতে পারে। বিস্ফোরণ ঘটিয়ে গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করা হয়েছে।’’
বিশ্বম্ভরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মুখলেছুর রহমান বলেন, ‘‘এক কৃষক তার মরিচ ক্ষেতে গ্রেনেডটি দেখে আমাদের খবর দেন। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে শান্তিগঞ্জ সেনাবাহিনীর অধিনায়ককে অবগত করি। শুক্রবার তারা গ্রেনেডটি নিষ্ক্রিয় করেছে।’’
ঢাকা/মনোয়ার/রাজীব