গোবিপ্রবিতে ছাত্রলীগ নেতার সনদ তুলতে ছাত্রদল নেতার সহায়তা, অতঃপর…
Published: 29th, April 2025 GMT
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (গোবিপ্রবি) নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা পাভেল সিকদারের সনদ তুলে দিতে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে।
ছাত্রলীগ নেতা পাভেলের বিরুদ্ধে গত বছর জুলাইয়ে গোবিপ্রবিতে ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা, ছাত্রীদের ধর্ষণের হুমকি, সাংবাদিকের মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করে বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা পাভেল সিকদার বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম সমন্বয়ক নিঘাত রৌদ্রের উপর হামলা চালিয়ে তার হাত ভেঙে দেন। আন্দোলনে অংশ নেওয়ায় নারী শিক্ষার্থী সুবর্ণাকে প্রকাশ্যে ধর্ষণের হুমকি দেন তিনি। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনিক সংবাদের প্রতিনিধি রাসেল শিকদারের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছিলেন।
আরো পড়ুন:
জাবিতে জুলাই হামলায় জড়িত ২৬৮ শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে শাস্তি
গোপালগঞ্জে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের মিছিল
এসব ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের জেরে পাভেলের সনদ আটকে যায়। তবে সম্প্রতি ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামের সহায়তায় তিনি সনদ উত্তোলনের চেষ্টা করলে বিষয়টি জানাজানি হয়। শিক্ষার্থীরা বাধা দিলে তা পুনরায় আটকে দেওয়া হয়।
চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শরীফুল বলেন, “১৬ জুলাইয়ের পর সারাদেশে ছাত্রলীগ হিংস্র হয়ে উঠলেও গোপালগঞ্জে ছাত্রলীগের অপকর্ম বহু পুরনো। হল দখল থেকে শুরু করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলাসহ সবকিছুতেই তারা জড়িত। শফিক ছাত্রলীগের হয়ে অতীতে অনেক সহিংসতায় অংশ নিয়েছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা বলেন, গত ৫ আগস্টের পর ছাত্রদলের শীর্ষ নেতৃত্বের শেল্টারে শফিকসহ কয়েকজন ছাত্রলীগ কর্মী ছাত্রদলে যোগ দিয়েছেন, যা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। এ ধরনের দোসরদের পুনর্বাসন ছাত্রদলের জন্য আত্মঘাতী।
এ বিষয়ে ছাত্রদলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইনজামাম রাশু বলেন, “ছাত্রদলকে আহ্বান জানাই, এ ধরনের দোসর ও তাদের আশ্রয়দাতাদের চিহ্নিত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে। তা না হলে ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের আস্থার জায়গা হারাবে।”
অভিযুক্ত শফিকুল ইসলাম বলেন, “রাজনীতির বাইরে বিভাগের বড় ভাইদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকে। আমি শুধু সাহায্য করতে চেয়েছি। যদি তার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থেকেই থাকে, তাহলে এতদিনেও প্রশাসন কেনো ব্যবস্থা নেয়নি?”
গোবিপ্রবি ছাত্রদলের সভাপতি দুর্জয় শুভ বলেন, “আমরা অভিযোগ পেয়েছি। তবে এখনো প্রমাণ পাইনি। বিষয়টি ষড়যন্ত্র কিনা, তাও খতিয়ে দেখতে হবে।”
ঢাকা/রিশাদ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল র গ ব প রব
এছাড়াও পড়ুন:
মাগুরায় শিশু ধর্ষণ-হত্যা মামলায় সাক্ষ্য ৩ চিকিৎসকের
মাগুরায় আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চতুর্থ দিনের মতো সাক্ষ্য গ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল বুধবার জেলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক এম জাহিদ হাসানের আদালতে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।
এ দিন শিশুকে চিকিৎসা প্রদানকারী তিন চিকিৎসক সাক্ষ্য দেন। তারা হলেন– মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের ডা. সোহাস হালদার, নাকিবা সুলতানা এবং ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. ইসরাত জাহান। তারা সবাই শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল মর্মে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
এর আগে সকালে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে মামলার ৪ আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। বাদীপক্ষের আইনজীবী ও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের পিপি মনিরুল ইসলাম মুকুল জানান, বিগত চার কার্যদিবস একটানা সাক্ষ্য গ্রহণ চলেছে। এ নিয়ে মোট ১৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে। মামলায় মোট ৩৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। আগামী রোববার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাদে অন্য সব সাক্ষী সাক্ষ্য দেবেন। বুধবার আসামিপক্ষের আইনজীবী স্বাধীনভাবে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন। তিনি আদালতে আসামিরা নির্দোষ বলে যুক্তি উপস্থাপন করেন। আসামিরাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছেন।
বেড়াতে এসে ৬ মার্চ রাতে মাগুরা সদরের নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বোনের শ্বশুর হিটু শেখের দ্বারা ধর্ষণের শিকার হয় ৮ বছরের শিশুটি। এই ধর্ষণের ঘটনা দেশজুড়ে ক্ষোভের সৃষ্টি করে। মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ঘুরে ঢাকা সিএমএইচে তাকে ভর্তি করা হয়েছিল। ১৩ মার্চ শিশুটি সেখানে মারা যায়। এ ঘটনায় শিশুটির মা আয়েশা আক্তার বড় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখসহ চারজনকে আসামি করে মাগুরা সদর থানায় মামলা করেন। রিমান্ডে হিটু শেখ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।