শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ এবং তালিকাভুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগে বিশেষ কর ছাড় দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) ড. আনিসুজ্জামান চৌধুরী এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেকের সঙ্গে বৈঠকের পর মঙ্গলবার রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

‘বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে বিএসইসির তাৎক্ষণিক কর্মপরিকল্পনা’ শিরোনামে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শেয়ারবাজারে বিনিয়োগে আস্থা বাড়াতে  ছয়টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সূচক পতনের কারণ খুঁজতে যেসব শেয়ারদরের ওঠা-নাম সূচকে বেশি প্রভাব ফেলছে, সেগুলোর লেনদেনে নজদারি বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। 

এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত, বহুজাতিক, বস্ত্র ও ওষুধ খাতের লাভজনক কোম্পানিগুলোর শেয়ারবাজারে আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়েছে বিএসইসি। পাশাপাশি অতালিকাভুক্ত কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে আসতে উৎসাহ দিতে কর ছাড়, ব্যাংক থেকে দীর্ঘমেয়াদি অর্থায়নে সীমিত করা এবং শেয়ারবাজারকে বিকল্প অর্থায়নের উৎস হিসেবে গড়ে তুলতে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এর বাইরে শেয়ারবাজারের উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সব নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে বিএসইসির সমন্বয় বাড়ানো, আসন্ন বাজেটে লভ্যাংশ ও বিনিয়োগের ওপর কর ছাড় সুবিধা দেওয়ার কথাও জানিয়েছে বিএসইসি। 

শেয়ারবাজার বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে ইলেক্ট্রনিক মিডিয়াতে টকশো এবং বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা, ফেসবুক ও ইউটিউব ব্যবহার করে বার্তা দেওয়া হবে।

কমিশন আশা করছে, এসব পদক্ষেপ এবং কর্মপরিকল্পনার দ্রুত বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরে আসবে এবং বাজারে স্থিতিশীল হবে।

এদিন রাজধানীর আগারগাঁওস্থ বিএসইসি কার্যালয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড.

আনিসুজ্জামান চৌধুরী, বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক, কমিশনার মো. মোহসিন চৌধুরী, মো. আলী আকবর ও ফারজানা লালারুখ, যুগ্ম সচিব ড. দেলোয়ার হোসেন, শেয়ারবাজার সংস্কারে গঠিত টাস্ক ফোর্সের প্রতিনিধি এবং বিএসইসির নির্বাহী পরিচালকদের এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।

চলতি এপ্রিলে লাগাতার দরপতনের পরও বিএসইসির নিষ্ক্রিয়তাকে দায়ী করে কিছু বিনিয়োগকারী রাজধানীর মতিঝিলে বিক্ষোভ করছেন। তারা সংস্থার চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ এ পদে ‘অযোগ্য’ এমন অভিযোগ করে তার পদত্যাগ দাবি করেন।

সরকারি একটি সংস্থার চাপে বিএসইসির চেয়ারম্যান পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন- এমন গুজবে রোববার পতনের ধারা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল শেয়ারবাজার। পতন করছেন না- এমন খবরে ফের দরপতন শুরু হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ও এফআইডির সচিব বিএসইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেন। 

বিএসইসি সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকাল ৫টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত বৈঠক হয়। বৈঠকের পরই বিএসইসির পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কিছু জরুরি কর্মপরিকল্পনা জানানো হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: শ য় রব জ র শ য় রব জ র ব এসইস র কর ছ ড়

এছাড়াও পড়ুন:

পুঁজিবাজারে বড়-মাঝারি বিনিয়োগকারী বেড়েছে : বিএসইসি

পুঁজিবাজার থেকে সাম্প্রতিক সময়ে বিনিয়োগকারী বেরিয়ে যাওয়ার কথা বলা হলেও পরিসংখ্যানে এর বিপরীত চিত্রই উঠে এসেছে। ২০২৪ সালের ৩০ জুনের তুলনায় ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে অতি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কিছুটা কমলেও বড় ও মাঝারি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা নয় বরং তাদের বিনিয়োগক্ষমতার ধরণ ও মান বদলেছে। তাই পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কিংবা বিনিয়োগ কমছে এমন তথ্য সম্পূর্ণ সত্য নয় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) বিএসইসি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে জানান হয়েছে, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীর সংখ্যা অথবা বিও হিসাবের সংখ্যা কিংবা বিনিয়োগ কমছে এমন বক্তব্য সাম্প্রতিক সময়ে পরিলক্ষিত হয়েছে। কিন্তু বিষয়টি মূলত সম্পূর্ণ সত্য নয়। মূলত বিগত বছরের তুলনায় পুঁজিবাজারে বৃহৎ বিনিয়োগকারীর (৫০ কোটি হতে ৫০০ কোটি টাকা এবং তদুর্ধ্ব পোর্টফোলিও ভ্যালুসম্পন্ন) সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে।

আরো পড়ুন:

পুঁজিবাজারে টানা ৩ কার্যদিবস সূচকের পতন

বিএসইসি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কাজ করছে: ডিবিএ সভাপতি

পাশাপাশি বিগত বছরের তুলনায় মাঝারি বিনিয়োগকারীর (৫০ লাখের ঊর্ধ্বে ও ৫০ কোটি টাকার নিম্নের পোর্টফোলিও ভ্যালুসম্পন্ন) সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। একইসঙ্গে বিগত বছরের তুলনায় ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীর (১ লাখের ঊর্ধ্বে ও ৫০ লাখের টাকার নিম্নের পোর্টফোলিও ভ্যালুসম্পন্ন) সংখ্যাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

তবে বিগত বছরের তুলনায় অতি ক্ষুদ্রবিনিয়োগকারীর (১ লাখ টাকার নিম্নের পোর্টফোলিও ভ্যালুসম্পন্ন) সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। অর্থ্যাৎ অতি ক্ষুদ্রবিনিয়োগকারীর (১ লাখ টাকার নিম্নের পোর্টফোলিও ভ্যালুসম্পন্ন) সংখ্যা ব্যতীত অন্য সকল ক্ষেত্রেই উন্নতি হয়েছে।

পোর্টফোলিও ভ্যালু ৫০ কোটি টাকার বেশি এমন বৃহৎ বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ২০২৫ সালের জুনে দাঁড়িয়েছে ৭৩৩ জন, যা আগের বছর ছিল ৬৯৬। আর ৫০০ কোটির ঊর্ধ্বে পোর্টফোলিওধারীর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৭০, যা আগের বছর ছিল ৬৮।

মাঝারি বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রেও ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ৫০ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগ রয়েছে এমন মাঝারি বিনিয়োগকারীর সংখ্যা ২০২৫ সালে দাঁড়িয়েছে ২৪ হাজার ২২৫ জন, যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১ হাজার ৩১৮ জন বেশি।

তবে বিপরীত চিত্র রয়েছে ১ লাখ টাকার নিচে বিনিয়োগ রয়েছে এমন অতি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। তাদের সংখ্যা ২০২৪ সালের ৯ লাখ ১৬ হাজার ১৫৭ থেকে কমে ২০২৫ সালে দাঁড়িয়েছে ৮ লাখ ৩১ হাজার ৭৪৮ জন। অর্থাৎ প্রায় ৮৫ হাজার বিনিয়োগকারী ১ লাখ টাকার নিচের পোর্টফোলিও থেকে সরে এসেছেন বা বিনিয়োগ বৃদ্ধি করেছেন। 
 

ঢাকা/এনটি/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সালমান, শিবলী ও সায়ান পুঁজিবাজারে ‘আজীবন অবাঞ্ছিত’
  • সালমানকে ১০০ কোটি, সায়ানকে ৫০ কোটি টাকা জরিমানা
  • বিএসইসির নতুন কমিশনার সাইফুদ্দিন
  • পুঁজিবাজারে বড়-মাঝারি বিনিয়োগকারী বেড়েছে : বিএসইসি
  • ‘পুঁজিবাজারে ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্তিতে কাজ করছি’
  • বিএসইসি ‘জিরো টলারেন্স’ নীতিতে কাজ করছে: ডিবিএ সভাপতি