প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য আগামী সাত মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শফিকুল আলম তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বৃহস্পতিবার দেওয়া এক পোস্টে এ কথা বলেন।

আগামী সাত মাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জানিয়ে ওই পোস্টে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘এ সময়টা বাংলাদেশকে গড়ে তুলতেও পারে, আবার ব্যর্থ করতেও পারে।’

শফিকুল আলম বলেন, অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা ছয় গুণ বাড়ানোর একটি উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। শীর্ষস্থানীয় বৈশ্বিক বন্দর পরিচালকদের সঙ্গে অংশীদারত্ব ছাড়া এটি সম্ভব নয়। সফল হলে এমন অংশীদারত্ব আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ীদের কাছে একটি শক্ত বার্তা পৌঁছে দেবে, বাংলাদেশ ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত।

তিনি বলেন, নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়ার্ল্ড স্ট্রিট জার্নাল বা ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস পড়লেই বোঝা যায়, ব্রেটন উডস চুক্তির পর যে পুরোনো অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা গড়ে উঠেছিল এবং যা ডব্লিউটিও (বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা) দ্বারা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছিল, তা এখন বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

শফিকুল আলম লিখেছেন, সেই যুগের সবচেয়ে বড় বিজয়ীরা ছিল জাপান, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, চীন, ভিয়েতনাম ও মালয়েশিয়া; যারা যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় বাজারমুখী রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতি গড়ে তুলে সমৃদ্ধ হয়েছে। থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনও ধীরে ধীরে এই পথে অগ্রসর হয়েছে। তবে দক্ষিণ এশিয়া পিছিয়ে ছিল।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব লিখেছেন, ‘এখন হয়তো অবশেষে বাংলাদেশের সময় এসেছে। আমরা কি এই মুহূর্তকে কাজে লাগাতে পারব?’

রাজনীতি এখানে একটি মূল ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করেন শফিকুল আলম।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব লিখেছেন, তবে লজিস্টিক-সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জই হতে পারে সবচেয়ে বড় বাধা। বৃহৎ পরিমাণ পণ্য দ্রুত ও কার্যকরভাবে পরিবহনের সক্ষমতা শিগগিরই পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। এ ক্ষেত্রে ব্যর্থ হলে বাংলাদেশ যে একটি উৎপাদনশীল শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে চায়, সে আকাঙ্ক্ষা মুখ থুবড়ে পড়বে। সূত্র-বাসস

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

মিয়ানমারে ভূমিকম্পের পর সামরিক হামলায় নিহত ২০০ জনের বেশি

মিয়ানমারে ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর এ পর্যন্ত সামরিক বাহিনীর হামলায় অন্তত ২০০ মানুষ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মানবাধিকার প্রধান ফোলকার তুর্ক এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানান।

গত ২৮ মার্চ ৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে দেশটিতে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ মানুষ প্রাণ হারান। এরপর দুই এপ্রিল ভূমিকম্প-দুর্গত এলাকায় ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম নির্বিঘ্ন করতে সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেয় দেশটির সামরিক সরকার ও বিরোধীরা। তবে এই যুদ্ধবিরতি পুরোপুরি উপেক্ষা করেছে জান্তা সরকার। জাতিসংঘ জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির পরও সেনাবাহিনী কমপক্ষে ২৪৩টি হামলা চালিয়েছে। এর মধ্যে ১৭১টি ছিল বিমান হামলা। এসব হামলায় নিহত হয়েছেন ২০০ জনেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক।

বিবৃতিতে ফোলকার তুর্ক বলেন, ‘এই সহিংসতা প্রমাণ করে সেনাবাহিনী যুদ্ধবিরতির ঘোষণাকে সম্মান করেনি। এটি আরও স্পষ্ট করে দেয়, এখন একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি ও গণতান্ত্রিক শাসনে ফিরে যাওয়া কতটা জরুরি’। তিনি আরও বলেন, ‘দেশটিতে এখনও প্রায় দুই কোটি মানুষ মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল। বিপুল এই জনগোষ্ঠীর খাদ্য, পানি, আশ্রয় দরকার তবে সবচেয়ে বেশি দরকার শান্তি ও নিরাপত্তা’।

হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তুর্ক বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী, যেকোনো বাধা ছাড়াই মানবিক সহায়তা ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে পৌঁছাতে দিতে হবে। সেনাবাহিনীর উচিত সব ধরনের হামলা বন্ধ করে মানুষের অধিকার ও প্রয়োজনকে অগ্রাধিকার দেওয়া’। জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান আরও বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে অস্ত্রের পেছনে না ছুটে, শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথে এগিয়ে আসতে হবে। এখন দরকার গণতন্ত্র ও আইনের শাসনের পুনঃপ্রতিষ্ঠা’।

এদিকে মিয়ানমারের কারেন রাজ্যে নতুন করে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। কাওকারেইক ও কাইওনডো শহরের মাঝামাঝি এলাকায় প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর লড়াই চলছে। কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি, পিপলস ডিফেন্স ফোর্স ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর যোদ্ধারা সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি চেকপোস্ট দখলে নিয়েছে। থাইল্যান্ডগামী প্রধান মহাসড়কের নিয়ন্ত্রণও নিয়েছে তারা। নতুন করে সেনাবাহিনীর হামলায় অন্তত ১০ জন প্রতিরোধ যোদ্ধার পাশাপাশি প্রাণ গেছে ২০ জন বেসামরিক মানুষের। খবর এএফপি, ইরাবতীর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ