কোনো রাজনৈতিক দলকে এন্টারটেইন করবেন না: প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী
Published: 2nd, May 2025 GMT
সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মেরুদণ্ড শক্ত করে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দলকে এন্টারটেইন করা সরকারি দায়িত্ব ও কর্তব্যের মধ্যে পড়ে না। সে ক্ষেত্রে সরকারের দিক থেকে আপনাদের প্রতি কোনো চাপ আসবে না। আপনারাও কোনো রাজনৈতিক দলকে এন্টারটেইন করবেন না।’
শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কুমিল্লা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে জেলার চলমান উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় জেলার সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কর্মকর্তাদের উদ্দেশে ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেছেন, ‘কোনো সৎ পদক্ষেপের জন্য এবং নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করতে গিয়ে যদি কোনো কঠিন পদক্ষেপ নিতে হয়, সেই পদক্ষেপকে আমরা সুরক্ষা দেব। তাই আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা মেরুদণ্ড শক্ত করে কাজ করবেন। যাঁর যাঁর যেই প্রতিষ্ঠান আছে, সবাইকে সততার সঙ্গে কাজ করতে হবে। আপনার অফিসের ভেতরে কোনো রাজনৈতিক দল বা গোষ্ঠীগত পরিচয়কে এন্টারটেইন করবেন না এবং আপনি নিজেও অন্য কাউকে সুযোগ দেবেন না। যাঁরা সরকারি কর্মকর্তা আছেন, তাঁরা রাজনৈতিক পরিচয় অফিসের বাইরে রেখে দপ্তরে প্রবেশ করবেন।’
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আরও বলেন, ‘কৃষিজমির উপরিভাগের টপ সয়েল তৈরি হতে ২৫ থেকে ৩০ বছর সময় লাগে। কিন্তু বিভিন্ন স্থানে এই মাটি বিক্রি করে ইটভাটায় যাচ্ছে। রাতের অন্ধকারে কৃষিজমির টপ সয়েল লোপাট হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকে কৃষিজমির মাটি লোপাটকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে। তাঁদের বিরুদ্ধে শক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে। ভূমিদস্যুদের শক্ত শাস্তির আওতায় আনতে হবে। ব্যবস্থা নিতে গিয়ে রাজনৈতিক চাপ এলে সেটকে মোকাবিলা করতে হবে। মনে রাখবেন, পলিটিক্যাল প্রেশারকে এন্টারটেইন করা আপনাদের কাজ না, পলিটিক্যাল সরকার এলে সেটা পরে দেখা যাবে।’
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আপনাদের অফিসে বসে না থেকে মাঠে গিয়ে কাজের তদারকি করতে হবে। অন্তত হোয়াটসঅ্যাপে ভিডিও কল দিয়ে হলেও কাজটা সঠিকভাবে হচ্ছে কি না, তদারকি করতে হবে।’
সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার। সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের মাধ্যমে পুরোনো কাঠামো পরিবর্তন করা না গেলে আবার স্বৈরাচার ফিরে আসতে পারে। চেষ্টা চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে মতপার্থক্য দূর করে একটা জাতীয় সনদ প্রণয়ন করার। যার মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথ সুগম হবে।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত র জন ত ক আপন দ র ক জ কর সরক র করব ন
এছাড়াও পড়ুন:
তাজউদ্দীন আহমদ দলমতের ঊর্ধ্বে একজন রাষ্ট্রনায়ক: শারমিন আহমদ
স্বাধীনতাযুদ্ধকে যখন শুধু আওয়ামী লীগিকরণ করা হচ্ছিল, তখন তাজউদ্দীন আহমদ সেটার বিরোধিতা করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন তাঁর কন্যা শারমিন আহমদ। তিনি বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ শুধু আওয়ামী লীগের নয়। উনি পুরো জাতির। তাজউদ্দীন আহমদ দলমতের ঊর্ধ্বে একজন রাষ্ট্রনায়ক।
আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে ‘তাজউদ্দীন আহমদ স্মারক বক্তৃতা-২০২৫’ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শারমিন আহমদ। সেখানেই তিনি এ কথাগুলো বলেন।
অনুষ্ঠানে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি নিয়ে কথা বলেন শারমিন আহমদ। তিনটি শর্তের ওপর ভিত্তি করে এই চুক্তি হয় বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, সে সময় তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম ইন্দিরা গান্ধীকে বলেছিলেন, স্বীকৃতি বাদে বন্ধুত্ব হয় না। সেই স্বীকৃতি হতে হবে সমতার ভিত্তিতে। সে সময় তাজউদ্দীন আহমদ ভারতীয় সেনাবহিনীর একক কমান্ডে বাংলাদেশে প্রবেশ করতে চাওয়ার বিরোধিতা করেছিলেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ বলেছিলেন, ‘না, এটি যৌথ কমান্ডের ভিত্তিতে হবে। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধ।’
আরও পড়ুনজন্মদিনে ডায়েরিতে যা লিখেছিলেন তাজউদ্দীন আহমদ২৩ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনতাজউদ্দীন আহমদ দেশের স্বাধীনতার প্রধান পুরুষ২৮ জুলাই ২০২৫শারমিন আহমদ বলেন, তাজউদ্দীন আহমদ প্রতিরোধ না করলে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের চুক্তিপত্রে লেখা থাকত ভারতের কাছে পাকিস্তান বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছে। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার যখনই মনে করবে, তখনই ভারতীয় বাহিনীকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে, এটিই ছিল তৃতীয় শর্ত বলে জানান শারমিন আহমদ। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ওই শর্তের ভিত্তিতেই ভারতীয় বাহিনীকে প্রত্যাবর্তনের জন্য বলেন।
আরও পড়ুনতাজউদ্দীন আহমদ: রোজনামচার মানুষটিকে বোঝা২৩ জুলাই ২০২৫অনুষ্ঠানে হতাশা প্রকাশ করে শারমিন আহমদ বলেন, এসব ইতিহাস পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। এসব ইতিহাস সংরক্ষণ করা হয়নি বলেই ভারতীয়রা এ দেশ স্বাধীন করেছে, এমন বয়ান তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, এটা খুব লজ্জার ব্যাপার। এই তথ্যগুলো নিয়ে ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করতে হবে। কেননা, গৌরবমণ্ডিত ইতিহাস সংরক্ষণ না করা হলে জাতি আরও দ্বিধাবিভক্ত হয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। স্মারক বক্তা ছিলেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। তাঁর বর্ক্তৃতার শিরোণাম ছিল ‘তাজউদ্দীন আহমদের ডায়েরি : ঐতিহাসিকতা ও রাজনৈতিকতা।’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান।