Samakal:
2025-05-03@08:38:55 GMT

রক্তবর্ণ চাঁদ

Published: 2nd, May 2025 GMT

রক্তবর্ণ চাঁদ

আমরা সাধারণত চাঁদকে রাতের পর রাত তারার আকাশে রুপালি থালার মতো ঝুলে থাকতে দেখি। তবে মাঝেমধ্যে এটি কিছু অসাধারণ রূপ ধারণ করে, যা তার অর্ধচন্দ্র বা পূর্ণিমার অবস্থার চেয়েও আশ্চর্যজনক। কখনও কখনও এটি সম্পূর্ণরূপে অপ্রত্যাশিত লাল রং ধারণ করে। এটিকে অনেকটা অতিপ্রাকৃত কিছু বা বায়ুমণ্ডলের পরিবর্তনের প্রভাব বলে মনে হতে পারে; কিন্তু আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন– এই কথিত ‘ব্লাড মুন’ কোনো অশনিসংকেত নয়। এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা রয়েছে।
ব্লাড মুন আসলে কী?
জ্যোতির্বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞরা জানান, চাঁদ শুধু একটি পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের সময় লাল হয়। যখন সূর্য, পৃথিবী এবং চাঁদ প্রায় সরলরেখায় সারিবদ্ধ হয় এবং চাঁদ সম্পূর্ণরূপে পৃথিবীর ছায়ায় 
ঢেকে যায়। ফলে সৃষ্ট লাল আভাযুক্ত চাঁদ, যা শুধু এই ছায়াবৃত অবস্থায় দৃশ্যমান তাকে ‘ব্লাড মুন’ বলা হয়।
ব্লাড মুন তুলনামূলকভাবে বিরল। গড়ে প্রতিবছর এক থেকে তিনটি পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ হয়। তবে কোনো কোনো বছর একটিও হয় না। আবার সব চন্দ্রগ্রহণ পৃথিবীর সব অংশ থেকে দেখা যায় না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সর্বশেষ দৃশ্যমান পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ হয়েছিল চলতি বছরের মার্চ মাসে। সেই পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয়েছিল। কখনও কখনও এটি মাত্র কয়েক মিনিট স্থায়ী হয়। তার আগে পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণ হয়েছিল ২০২২ সালে।
চাঁদ কেন লাল হয়?
টোলেডো বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের গবেষক জিলিয়ান বর্নাক বলেন, ‘পৃথিবীর ছায়ায় রং থাকাটা অদ্ভুত। কারণ আপনি ভাবতে পারেন, পৃথিবী সম্পূর্ণরূপে আলো আটকে দেয়। পৃথিবী আসলে এমনটাই করে। সব দোষ আমাদের বায়ুমণ্ডলের।’ এই বিজ্ঞানী আরও বলেন, ‘একটি সহজ বিজ্ঞান পাঠের জন্য প্রস্তুত হোন। প্রথমে আপনাকে যা জানতে হবে তা হলো– বাতাস আলোকে প্রতিসরণ বা বাঁকাতে পারে। একটি পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের ক্ষেত্রে, সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয়ের সময় বায়ুমণ্ডলের মধ্য দিয়ে সরাসরি আসা কিছু আলো বেঁকে যায় এবং পৃথিবীর ছায়ায় পুনঃনির্দেশিত হয়। পৃথিবীর ছায়ার সবচেয়ে অন্ধকার অংশ, যেখানে চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদ অবস্থান করে তাকে বলা হয় আম্ব্রা।’ জিলিয়ান বলেন, ‘সূর্যের রশ্মি বিভিন্ন রঙের আলোর তরঙ্গ দিয়ে তৈরি। নীল আলোর তরঙ্গ সবচেয়ে ছোট এবং পৃথিবীতে আঘাত করলে তা ছড়িয়ে পড়ে; কিন্তু লাল আলোর তরঙ্গ দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। এই আলো ছায়ার মধ্য দিয়ে যেতে পারে। আপনি বলতে পারেন, পৃথিবীর ছায়ায় সবসময় গ্রহজুড়ে একই সময়ে ঘটতে থাকা সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের একটি ক্ষুদ্র অংশ থাকে। যখন এই লাল আলো আম্ব্রায় চাঁদে আঘাত করে, তখন চাঁদ লাল দেখায়। এটিই ব্লাড মুনের কারণ!’
ব্লাড মুন কতটুকু লাল হয়?
একটি পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের সময় চাঁদের রং গাঢ় কমলাবর্ণ থেকে লালচে হয়। মজার বিষয় হলো– প্রতিটি পূর্ণ চন্দ্রগ্রহণের সময় এই বর্ণ কিছুটা পরিবর্তিত হয়। কারণ প্রতিবার পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে কিছু পার্থক্য থাকে। আকাশে দূষণ, মেঘ, ধুলো বা আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের কণার কারণেও এই পরিবর্তন হতে পারে বলে জানান যুক্তরাষ্ট্রের জ্যোতির্বিজ্ঞান বিশেষজ্ঞ ব্রায়ান লাডা। পরবর্তী ‘ব্লাড মুন’ হবে এ বছরের ৭ সেপ্টেম্বর, যা এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপ ও আফ্রিকার কিছু অংশে দৃশ্যমান হবে। যুক্তরাষ্ট্রে দৃশ্যমান পরবর্তী ব্লাড মুন হবে আগামী বছরের ৩ মার্চ।
নাসা জানিয়েছে, ব্লাড মুন দেখতে আপনার কোনো বিশেষ সরঞ্জামের প্রয়োজন নেই। একমাত্র জিনিস যা বিষয়টি জটিল করতে পারে, তা হলো মেঘ।v
রিডার্স ডাইজেস্ট অবলম্বনে

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

গানের ভুবনে লিজার অন্তহীন পথচলা

শীর্ষ তারকা হওয়ার দৌড়ে কখনও অংশ নিতে দেখা যায়নি তাঁকে। যদিও ২০০৮ সালে ‘ক্লোজআপ ওয়ান: তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতায় সেরা শিল্পীর মুকুট মাথায় উঠেছিল, তবু ধীরলয়ে পথ হেঁটে গেছেন। নিজের কাজে অতিমাত্রার উচ্ছ্বাসও দেখাননি কখনও। নীরবে নিভৃতে কাজ করে গেছেন সবসময়। গানে গানে কুড়িয়ে চলেছেন শ্রোতার ভালোবাসা। এ কারণে সমসাময়িকদের চেয়ে আলাদা করে তাঁকে চিনে নেওয়া যায়। বলছি, কণ্ঠশিল্পী সানিয়া সুলতানা লিজার কথা। গানের ভুবনে অন্তহীন পথচলায় যিনি এরই মধ্যে পেরিয়ে এসেছেন প্রায় দেড় যুগের পথ। সমান জনপ্রিয়তা নিয়ে এ দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার রহস্যটা কী? শুরুতে যখন এ প্রশ্ন লিজার সামনে তুলে আনা হলো, তখন দেখা গেল, লিজা নিজেই এর উত্তর খুঁজতে বসে গেছেন। এ পর্যায়ে হেসে বললেন, ‘না, এর উত্তর সত্যি জানা নেই। আসলে আমি তো গান গাই শ্রোতার প্রত্যাশা পূরণ আর ভালোবাসা কুড়ানোর জন্য। হ্যাঁ, শিল্পীসত্তাকে খুশি রাখতে গানের চর্চা ধরে রেখেছি বললে ভুল হবে না। তারপরও প্রতিটি আয়োজনে শ্রোতার ভালোলাগা, মন্দলাগাকে প্রাধান্য দিয়েছি। এতে করে কতটুকু জনপ্রিয়তা পেয়েছি। সেই জনপ্রিয়তা শুরু থেকে একই রকম আছে কিনা– সেটি তো শ্রোতারা ভালো বলতে পারবেন।’ লিজার এ কথা থেকে বোঝা যায়, যাদের কারণে শিল্পীজীবন বেছে নেওয়া, সেই শ্রোতা তাঁর দীর্ঘ পথ পাড়ি দেওয়ার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছেন। সেখানে তাঁর গানগুলো ছিল চালিকাশক্তি। তবে ১৭ বছরের সংগীতের এ পথচলায় লিজার কণ্ঠে মেলোডি গান বেশি শুনতে পাওয়া গেছে। এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এই দেড় যুগে নানা ধরনের গান গেয়েছি, তবু কেন জানি শ্রোতারা আমাকে মেলোডি গানের শিল্পীদের দলে রেখে দিয়েছেন। অস্বীকার করব না যে, আমার কণ্ঠে যে ধরনের গান ভক্তরা বেশি শুনতে চান, সে ধরনের গান বেশি গাই। এটিও ঠিক যে, মেলো কিংবা স্যাড-রোমান্টিক গানের প্রতি শ্রোতার ভালোলাগা সবসময় ছিল। এখনও অনেকে মেলোডি ছাড়া গানের কথা ভাবতে পারেন না। এজন্য নিরীক্ষাধর্মী কাজ করলেও আমি চাই না মেলোডি থেকে কখনও দূরে সরে থাকতে। তাই মেলোডি গান যেমন গাইছি, তেমনি গানের নিরীক্ষাও চালিয়ে যাচ্ছি।’ লিজার এ কথা যে মিথ্যা নয়, তা সর্বশেষ প্রকাশিত গানগুলোর শুনলে প্রমাণ মেলে। ক’দিন আগে বিটিভির ‘বৈঠকখানা’ অনুষ্ঠানে ক্লোজআপ ওয়ান তারকা মুহিনের সঙ্গে গাওয়া ‘তোমার নামে’ গানে যে লিজাকে শ্রোতা আবিষ্কার করবেন, তার সঙ্গে মেলানো কঠিন হবে সামজ ও রিজানের সঙ্গে ‘তিতা কথা’ গানের লিজাকে। আরেকটু পেছন ফিরে তাকালে দেখা যাবে, ‘খুব প্রিয় আমার’, ‘তুমি এলে’, ‘পূর্ণিমা চাঁদ’ গানগুলোয় লিজা অতীতের গায়কীকে ছাপিয়ে কীভাবে আরও নতুন হয়ে নিজ কণ্ঠ তুলে এনেছেন। 

মাঝে কিংবদন্তি শিল্পীদের বেশ কিছু কালজয়ী গানের রিমেকে কণ্ঠ দিয়েও প্রশংসা কুড়িয়েছেন সংগীতবোদ্ধাদের। স্টেজ শো, রেডিও, টিভির আয়োজন থেমে শুরু করে সিনেমার প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে প্রমাণ দিয়েছেন, তিনি অন্যদের চেয়ে কোনোভাবে পিছিয়ে নন। এককথায়, বহমান সময়টিকে সুরেলা করে রেখেছেন অনিন্দ্য কণ্ঠ জাদুতে। 

আগামীতেও লিজার কণ্ঠ বাতাসে ভেসে বেড়াবে– এ অনুমান করা যায়। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইচ্ছেমতো ভাড়ায় জিম্মি যাত্রী
  • মিষ্টি মেয়ের গল্প
  • চেন্নাইয়ের ঘরে বিষাদের বাজনা, ধোনির চোখে বিদায়ের আভা
  • গানের ভুবনে লিজার অন্তহীন পথচলা
  • চিনি-লবণের অনুপম পাঠ