অনিবার্চিত সরকার বেশিদিন থাকলে দেশে নানা সমস্যা তৈরি হয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয়তাবাদী সমমনা জোটের (এনপিপি) চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। তিনি বলেন, একটা অনির্বাচিত সরকার যদি দীর্ঘসময় থাকে এটা বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা ওনার কাছে এটাই আশা করি যে, আপনি এমন একটা ভোটের ব্যবস্থা করে দেন যাতে মানুষ বলতে পারে দীর্ঘ ১৫ বছর পর আমরা এমন একটা ভোট দেখতে পেরেছি। আমার ভোটের প্রতি কেউ জোর করতে পারেনি, আমার ভোট কেউ টাকা দিয়ে কিনতে পারেনি, আমি আমার ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে সরকার গঠন করতে পেরেছি। এটাও সাথে সাথে ঠিক, একটা অনির্বাচিত সরকার যদি দীর্ঘ সময় থাকে এটা বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে।

জাতীয় সংসদের এলডি হলে শনিবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে এনপিপির সংলাপে তিনি এ কথা বলেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় এই বৈঠক উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফররাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান। এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদের নেতৃত্বে জোটের ১১ জন নেতা এই সংলাপে অংশ নিয়েছেন।

সংলাপের সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা আপনাদের ডাকে সাড়া দিয়েছি, মানুষ যাতে ভোট দিতে পারে, যার ভোট সে যেন নিজে দিতে পারে এবং জনগণের ভোটের মাধ্যমে একটা প্রতিষ্ঠিত সরকার গঠন করতে পারে তার জন্য আমরা সব সময় চেষ্টা করছি।

ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৬৬ প্রস্তাবের মধ্যে এনপিপি ১১২টিতে একমত পোষণ করেছে। এছাড়া ২৬টিতে একমত নয় এবং ২৮ টায় আংশিক একমত হয়েছে। 

সংলাপে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, গণতন্ত্র পূর্ণ প্রতিষ্ঠায় আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে সুনির্দিষ্ট, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় ঐকমত্য তৈরি করার মাধ্যমে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করা। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, বিভিন্ন রকম আদর্শিক অবস্থান থেকে তাদের মতামত দিয়েছেন। আমরা আশা করি, জাতীয় স্বার্থে, রাষ্ট্র পুনর্গঠনের প্রশ্নে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য প্রত্যেকটা দল ও জোট কিছুটা ছাড় দিতে প্রস্তুত থাকবেন। কারণ আমরা সকলে মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পুনর্গঠন, বিনির্মাণের জন্য সকলেই সমবেত হয়েছি। আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে জাতি ও রাষ্ট্র হিসেবে অগ্রসর হওয়ার জন্য তা অত্যন্ত প্রয়োজন। আমাদের এক জায়গায় আসতে হবে। এর অর্থ এ নয় যে, সব বিষয়ে আমরা একমত হতে পারব। কিন্তু যেগুলো রাষ্ট্র বিনির্মাণে, পুনর্গঠনের প্রয়োজন, গণতান্ত্রিক ও জবাবদিহি ব্যবস্থা তৈরির জন্য প্রয়োজন সেখানে আশা করি একমত হতে পারব। সেটা জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের চেষ্টা।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ত য় ঐকমত য চ ত সরক র র জন য র গঠন এনপ প সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

সংস্কার বাস্তবায়ন করবে নির্বাচিত সরকার, কোনো অজুহাতে নির্বাচন বিলম্বিত করা যাবে না: সিপিবি

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেছেন, ‘ঐকমত্য কমিশন ও অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই, সংস্কার নিয়ে যত কথাই বলি না কেন, সংস্কার বিষয়ে হওয়া ঐকমত্য বাস্তবায়ন করতে হবে আগামীতে নির্বাচিত জাতীয় সংসদের মাধ্যমে। কোনো অজুহাতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে বিলম্ব করা যাবে না।’

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার বিরতিতে বাম গণতান্ত্রিক জোটের পক্ষ থেকে এ কথা বলেন রুহিন হোসেন। এ সময় বাম জোটের অন্য শরিক দলের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন।

রুহিন হোসেন বলেন, অন্য কোনো নির্বাচনের কথা এনে চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানের অন্যতম যে আকাঙ্ক্ষা, গণতন্ত্রের পথে হাঁটা, সেটাকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। গণহত্যার বিচার ও সংস্কার করেই এ বছরে নির্বাচন করা সম্ভব। তাঁরা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চান।

বামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত উল্লেখ করে রুহিন হোসেন বলেন, ‘সংসদকে প্রতিনিধিত্বমূলক করতে হলে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতি চালু করতে হবে। স্বাধীনতার পর থেকে আমরা এ বিষয়ে কথা বলে আসছি। সংসদে নারীদের জন্য সংরক্ষিত আসন নিশ্চিত করতে হবে।’

নির্বাচনকে ভয়, অর্থমুক্ত এবং আঞ্চলিক খেলা থেকে মুক্ত করার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এখনো কোনো আলোচনা তৈরি করতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন সিপিবির সাধারণ সম্পাদক।

সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদের সমালোচনা করে রুহিন হোসেন বলেন, ‘এই অনুচ্ছেদের অধীন এমন কতগুলো বিষয় আছে, যার মাধ্যমে সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারেন না। আমরা বরাবরই এ অনুচ্ছেদের বিষয়ে নতুন করে ভাবার কথা বলে আসছি। আজকের আলোচনায় ৭০ অনুচ্ছেদের অধীন আস্থাভোট এবং অর্থবিল যুক্ত করার বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। সংসদ সদস্যরা অন্যান্য বিষয়ে নিজ দলের বিপক্ষে ভোট দিতে পারবেন। এ উদ্যোগের সঙ্গে আমরাও একমত।’

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে রুহিন হোসেন বলেন, কমিশন সংসদে নারীদের আসন বাড়ানোর বিষয়ে প্রস্তাব করেছে। এটা নিয়ে স্বাধীনতার পর থেকে বাম দলগুলো আন্দোলন করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শুভস্য শীঘ্রম
  • সংস্কার বাস্তবায়ন করবে নির্বাচিত সরকার, কোনো অজুহাতে নির্বাচন বিলম্বিত করা যাবে না: সিপিবি
  • দুই কমিশন নারী আসন নিয়ে চাপাচাপি করছে: ইসলামী আন্দোলন
  • দুটি বিষয় বাদে সংসদে স্বাধীনভাবে ভোট দিতে পারবেন এমপিরা
  • বাংলাদেশের ইতিহাসে আজকে একটা উল্লেখযোগ্য দিন: জোনায়েদ সাকি
  • সংস্কার নিয়ে আমাদের প্রস্তাবের বাইরে বহু প্রস্তাবে একমত হয়েছি: সালাউদ্দিন আহমদ
  • প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পদ্ধতি পরিবর্তনে দুটি দল ছাড়া অন্যরা একমত: আলী রীয়াজ
  • আসনের সংখ্যানুপাতে সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পদ বিরোধী দল পাওয়ার বিষয়ে সবাই একমত: সালাউদ্দিন আহমদ
  • জুলাই মাসের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করতে পারব : আলী রীয়াজ
  • ফেব্রুয়ারিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে সংস্কারের তাগিদ