লালপুরের এসিল্যান্ডের বিরুদ্ধে নিয়মবহির্ভূতভাবে অভিযানের অভিযোগ
Published: 3rd, May 2025 GMT
পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সীমান্তবর্তী নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজিজুল কবিরের বিরুদ্ধে ঈশ্বরদীর সাড়া এলাকায় নিয়মবহির্ভূতভাবে অভিযান চালানোর অভিযোগ উঠেছে। অভিযানে ড্রেজার, নৌকার সেলফ, ব্যাটারি, টুলবক্স, মোবাইল ও নগদ টাকা লুট করার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
শনিবার (৩ মে) বিকেলে ঈশ্বরদী উপজেলার সাড়া ইউনিয়নের সাঁড়াঘাটে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীদের মধ্যে সুলতান আলী বিশ্বাস টনি বলেন, ‘‘সরকারি সকল পাওনাদি পরিশোধ এবং নিয়মনীতি অনুসরণ করে আমরা সাড়া এলাকার পদ্মা নদীতে বালু উত্তোলন করে আসছি। এমতাবস্থায় হঠাৎ করে শুক্রবার (২ মে) পার্শ্ববর্তী নাটোর জেলার লালপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজিজুল কবির সেনাবাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে এই এলাকায় এসে অভিযান চালিয়েছেন এবং চার জনকে আটক করে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেন। অভিযানে ড্রেজার, নৌকার সেলফ, ব্যাটারি, টুলবক্স, মোবাইল ও নগদ টাকা জব্দ করে নিয়ে গেছেন।’’
আরো পড়ুন:
ফেনীতে শিয়ালের মাংস বিক্রি, ৬ মাসের কারাদণ্ড
রাজউকের দুই এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা, বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমরা পাবনা ও ঈশ্বরদী প্রশাসনের মাধ্যমে জানতে পেরেছি, এই অভিযানে তাদের অনুমতি ছিল না। আজিজুল কবির অবৈধভাবে নিয়মবহির্ভূতভাবে এই অভিযান চালিয়েছেন। চারজনকে কারাদণ্ড দিলেও মালামালগুলো জব্দ না দেখিয়ে লুট করা হয়েছে।’’
আরেকজন ভুক্তভোগী মেহেদী হাসান বলেন, ‘‘আমরা সরকারি কোষাগারে টাকা জমা দিয়ে বৈধভাবে এখানে ব্যবসা করছি। কিন্তু এইভাবে নিয়মবহির্ভূতভাবে অভিযান চালানোর কারণে সবাই ভয়ের মধ্যে আছি।’’ তিনি এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানান।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে লালপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজিজুল কবির বলেন, ‘‘আমরা ঈশ্বরদীর সীমানায় অভিযান চালাইনি। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের আটক করতে আমাদের একটি আভিযানিক দল শুধু ঈশ্বরদীর সাঁড়াঘাট ব্যবহার করেছে। বিষয়টি পরে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে। আটককৃতরা অবৈধভাবে পদ্মানদীর বালু মহাল থেকে বালু উত্তোলনসহ সরবরাহ কাজে জড়িত ছিলেন। অভিযোগের ভিত্তি নেই।’’
এ বিষয়ে ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবীর কুমার দাশ বলেন, ‘‘বালু মহলে অভিযান পরিচালনা করা নিয়ে আমাদের কোনো অভিযোগ নেই। কিন্তু এক জেলা থেকে অপর জেলায় অভিযান চালাতে হলে সংশ্লিষ্ট জেলার প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা করে যৌথ অভিযান চালাতে হয়। কিন্তু লালপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) আজিজুল কবির আমাদের সঙ্গে আলোচনা না করে আইন ভঙ্গ করে ঈশ্বরদী সীমানায় অভিযান চালিয়ে লোকজনকে আটকসহ ড্রেজার ও নৌকা জব্দ করেছেন। এটা অন্যায় করেছেন।’’
বিষয়টি তিনি পাবনা জেলা প্রশাসককের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
ঢাকা/শাহীন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপজ ল র স সহক র
এছাড়াও পড়ুন:
রয়েল টিউলিপে এনসিপি নেতাদের অবস্থান, ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিএনপির
কক্সবাজারে ইনানীর সি পার্ল বিচ রিসোর্টে (পুরোনো নাম রয়েল টিউলিপ) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের অবস্থান এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিবাদে সভা করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, রয়েল টিউলিপে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে রয়েল টিউলিপের সামনে প্রতিবাদ সভা করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজারে পৌঁছান এনসিপির পাঁচ নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, সার্জিস আলম, ডা. তাসমিন জারা, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও খালেদ সাইফুল্লাহ।
প্রতিবাদ সভার নেতৃত্ব দেন উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক সেলিম সিরাজী। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র থেমে নেই। যারা ভোটে ক্ষমতায় আসতে পারবে না, তারা এখানে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। খুনি শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার এক বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। সেই আনন্দের মুহূর্তে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কারণে আমাদের এখানে প্রতিবাদে আসতে হয়েছে।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, “এনসিপির নেতারা মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল ১১টা ২৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার আসেন। পরে ইনানীর সি পার্ল বিচ রিসোর্টের (রয়েল টিউলিপ) ৫০০১, ৫০০২ ও ৫০০৩ নম্বর কক্ষে অবস্থান নেন।”
তিনি আরও বলেন, “এই রিসোর্টে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নেই। এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের স্ত্রীসহ তারা ঘুরতে এসেছেন।’’
ওই রিসোর্টের কক্ষ আগে থেকে বুকিং করা ছিল না বলেও জানান তিনি।
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এনসিপির পাঁচ নেতার হঠাৎ কক্সবাজার আগমনের বিষয়টি প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও অবগত করা হয়নি।
রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বাংলাদেশস্থ রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করতে কক্সবাজারে গিয়েছেন এই পাঁচ নেতা।
এনসিপি নেতাদের বহন করে বিমানবন্দর থেকে রয়েল টিউলিপে নিয়ে যাওয়া গাড়ির চালক নুরুল আমিন জানান, তার গাড়িতে করে হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীসহ দুইজন নারী- একজন সারজিস আলমের স্ত্রী এবং অপরজন সমন্বয়ক (তাসনিম জারা) রয়েল টিউলিপে যান।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. সাইফ উদ্দিন শাহীন বলেন, “এনসিপির পাঁচ নেতা রয়েল টিউলিপে অবস্থান করছেন। তবে, এখানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নেই। পুরো হোটেলে মাত্র তিনজন বিদেশি আছেন, তারা সবাই চীনের নাগরিক।”এদিকে এনসিপি নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ একটি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, “আমরা এখানে পিটার হাস কিংবা অন্য কারো সাথে কোন মিটিং করিনি। এমনকি পিটার হাসের সঙ্গে আমাদের দেখাও হয়নি। আমরা কয়েকজন এখানে ঘুরতে এসেছি।”
তারেকুর//