গাজীপুরে মসজিদের ইমাম ও ইসলামী ছাত্রসেনা নেতা মুহাম্মদ রইস উদ্দিন হত্যার ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের দাবিতে টানা কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পটিয়া সদরে চলছে সড়ক অবরোধ। আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এ অবরোধ চলে দুপুর ১২টা পর্যন্ত।

সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পৌর সদরের ইন্দ্রপুল এলাকার বাইপাসের মুখে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ জানায় অবরোধকারীরা। সকাল ৯টায় মহাসড়ক অবরোধ করেন কয়েকশ সুন্নি সমর্থক। এ সময় মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। তবে ১২টার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

পরে দুপুর ১২টার পর অবরোধ শেষ করে এক বিক্ষোভ মিছিল করে মহাসড়কের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট প্রদক্ষিণ করেন তারা।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (পটিয়া সার্কেল) আরিফুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘অবরোধ শেষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।’

উল্লেখ্য, গাজীপুর মহানগরীর পূবাইলের হায়দরাবাদ আখলাছ জামে মসজিদের খতিব ও ইমাম মাওলানা রইস উদ্দিনকে গত ২৭ এপ্রিল শিশু বলাৎকারের অভিযোগে গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধরের পর পুলিশের কাছে সোপর্দ করে একদল লোক। পুলিশ তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়। ওই রাতেই তার মৃত্যু হয়।

তাকে হত্যার প্রতিবাদে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচি পালন করছেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাআত বাংলাদেশের নেতাকর্মীরা। এরই অংশ হিসেবে আজ সড়ক অবরোধের ডাক দেয় ইসলামী ছাত্রসেনা।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ ক অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যাক্সিম গোর্কির আবাসস্থলে

মস্কোর আকাশে আজ মেঘ ঘনিয়েছে। সকাল থেকেই টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে। এমনিতে গরমকাল, তবে বৃষ্টি পড়ার কারণে ঠান্ডা জাঁকিয়ে বসছে। মস্কোতে আমার দিনগুলো উড়ে উড়ে পার হয়ে যাচ্ছে। অল্প দিন হাতে আছে রাশিয়ায়। এর মাঝে কত কিছু যে দেখার বাকি!

আমি এসেছিলাম আলেক্সেই মাক্সিমোভিচ পেশকভের বাড়িতে। রাশিয়ার বিখ্যাত এই লেখক পাঁচবার সাহিত্যে নোবেল পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত হয়েও পুরস্কার জেতেননি। এমন অসামান্য লেখকের প্রাসাদতুল্য বাড়ির সামনে এসে দেখি দুয়ার তালাবদ্ধ। আজ আর দুয়ার খুলবে না। দোতলা এই বাড়িটিতে লেখক জীবনের শেষ কয়েক বছর বসবাস করেছিলেন। বাড়ির সামনে প্রশস্ত আঙিনা। সেখানে উঁচু উঁচু গাছ অন্য পাশ থেকে বাড়িকে ঢেকে দিয়েছে। বাড়ির চারপাশ পাঁচিল দিয়ে ঘেরা।

প্রাচীন এই বাড়ির আশপাশে ঘুরেফিরে আবার ফিরে গেলাম। আজ তিনি দুয়ার না খুললে কাল নিশ্চয়ই খুলবেন। রাশিয়ার অন্যান্য বিখ্যাত লেখকের বাড়ির মতো তাঁর বাড়িটিকেও মিউজিয়াম করে রাখা হয়েছে। ঊনবিংশ শতকে রাশিয়ায় জনপ্রিয়তা পেলেও আমাদের বাংলা ভাষাভাষীদের কাছে তিনি আজ অবধি সবচেয়ে জনপ্রিয় রুশ লেখক।

আগের দিন লেখকের হাউস মিউজিয়াম বন্ধ ছিল। তাই দুয়ার থেকে ফিরে যেতে হয়েছিল। কিন্তু আমি হচ্ছি বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী ধরনের মানুষ। এত সহজে এ বাড়ি না দেখে আমি মস্কো ছাড়ব না।

আলেক্সেই মাক্সিমোভিচ পেশকভের বয়স যখন চব্বিশ তখন এক পত্রিকায় লেখা পাঠানোর সময় আলেক্সেই লেখকের নামে নিজের নাম লেখেন ‘ম্যাক্সিম গোর্কি’। রুশ ভাষায় ম্যাক্সিম শব্দের অর্থ—তিক্ত। জীবনের কঠিন বাস্তবতা আর তিক্ততার স্বাদ অল্প বয়সে গ্রহণ করায় তিক্ত নামেই পরবর্তীকালে তিনি বিখ্যাত হয়েছেন।

আলেক্সেই মাক্সিমোভিচ পেশকভ ১৮৬৮ সালে রাশিয়ার নিঝনি নভোগরদ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। এগারো বছর বয়সে অনাথ হয়ে যাওয়ার পর দিদিমা তাঁকে সঙ্গে নিয়ে রাখেন। কিন্তু বারো বছর বয়সে বাড়ি ছেড়ে পালান। এরপর বছর পাঁচেক রাশিয়ার বিভিন্ন শহরে হেঁটে হেঁটে ঘুরে বেড়ান। কখনো পেট চালানোর জন্য ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র কাজ করতে হয়েছে। পথেই থাকতে হয়েছে। এ সময়ে আলেক্সেই মুচির কাজও করেছিলেন।

ম্যাক্সিম গোর্কির বাড়ি

সম্পর্কিত নিবন্ধ