শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার প্রাণকেন্দ্র চৌরাস্তা মোড়ে অবস্থিত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারটি রয়েছে অযত্ন ও অবহেলায়। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত শহীদ মিনারের বেদিতে চলে জুতা পায়ে আড্ডা, বসে লুডু খেলার আসর। সচেতন মহলের দাবি, দ্রুত কোলাহল পূর্ণ জায়গা থেকে শহীদ মিনার অন্যত্র স্থানান্তর করা হোক। 

এলাকাবাসী জানান, শ্রীবরদী পৌরসভা ভবন থেকে মাত্র ৫০ ফুট দূরত্বে শহীদ মিনারটির অবস্থান। প্রতিবছর ২১ ফেব্রুয়ারির আগের দিন  ধুয়ে-মুছে পরিষ্কার করে নতুন রং করা হয় শহীদ মিনার। ২১ ফেব্রুয়ারি রাত ১২টা ১ মিনিটে ভাষা শহীদদের প্রতি এই শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। তবে, দিনের অর্ধেক অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আবারো পুরাতন চেহারায় ফিরে যায় শহীদ মিনারটি। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক মুক্তিযোদ্ধা বলেন, ২১ ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রীয় পোগ্রাম থাকে। এ কারণে উপজেলা ও পৌর প্রশাসনের কর্মচারীরা রাষ্ট্রের আদেশ পালন করেন। শহীদ মিনারের মর্মার্থ কী তারা তা মনে ধারণ করেন না। শহীদ মিনারের চারপাশে একটা বাউন্ডারি দেয়াল তুলে গেট লাগালেই কিন্তু সব ঠিক হয়ে যায়। 

তিনি আরো বলেন, প্রতিদিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন, কিন্তু তার চোখে এটা পরে না। ভাষার জন্য জীবন ত্যাগের কারণে আমরা ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পেয়েছি। কিন্তু সম্মানের জায়গায় তাকালে কর্তৃপক্ষের উদাসিনতা দেখে আমাদের লজ্জা হয়।

ব্যবসায়ী আলমগীর হোসেন বলেন, “ভাষা আন্দোলনের ৭৩ বছর অতিবাহিত হয়েছে। আমরা প্রতিদিন শহরের চৌরাস্তা মোড়ে আসা যাওয়া করি। কোনদিন জুতা পায়ে শহীদ মিনারে দাঁড়াইনি। শহীদ মিনারে এখন নেশার আড্ডা, লুডু দিয়ে জুয়ার আসর বসছে। পৌরসভা এতো কাছে হওয়া সত্ত্বেও শহীদ মিনারটির প্রতি প্রশাসনের উদাসিনতা আমাদের হতাশ করে।”

শাহিনুর বারী নামে পৌরসভার এক বাসিন্দা বলেন, “উপজেলা প্রশাসন বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা খরচ করতে পারে, কিন্তু শহীদ মিনার রক্ষণাবেক্ষণে তাদের বরাদ্দ থাকে না। পৌরসভার কেন্দ্রীয় এই শহীদ মিনারটি সম্মান অক্ষুন্ন রাখতে প্রশাসন যেন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে। প্রয়োজনে জিরো পয়েন্ট থেকে শহীদ মিনারটি ভালো কোনে স্থানে স্থানান্তর করতে হবে।”

শ্রীবরদী উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুর রহিম দুলাল বলেন, “বিষয়টি ইতোমধ্যে আমরা উপজেলা প্রশাসনের নজরে দিয়েছি। তারা এটা রেজুলেশনের আওতায় এনেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আবার আলোচনা করব।”

শ্রীবরদী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জাবের আহমেদ বলেন, “শহীদ মিনারটি আসলে কোনো সম্মানজনক স্থানে তৈরি হয়নি। জায়গাটি জিরো পয়েন্টে বাজারের মধ্যে। ফলে সেখানে প্রতিদিন হাজারো মানুষ আসেন। আমি আসার পরেই জেলা পরিষদের কাছে প্রকল্প চাওয়া হয়েছে। আমরা উপযুক্ত জায়গা নির্ধারণ করে শহীদ মিনারটি স্থানান্তরের চেষ্টা করছি। শহীদ মিনারটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পৌরসভার পক্ষ থেকে অস্থায়ী ভিত্তিতে একজন লোক নিয়োগ করব।”

শেরপুরের ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মোসা.

হাফিজা জেসমিন বলেন, “আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। ইউএনওকে এ বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হবে। শহীদ মিনারের সম্মান রক্ষার্থে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ঢাকা/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ২১ ফ ব র শ র বরদ উপজ ল প রসভ

এছাড়াও পড়ুন:

আড়াইহাজারে ইয়াবাসহ ছাত্রদল নেতা ও তার সহযোগি গ্রেপ্তার

আড়াইহাজারে ইয়াবাসহ ছাত্রদল নেতা ও তার সহযোগিকে গ্রেপ্তার পুলিশ। শনিবার (২১ জুন) ভোরে উপজেলার সদর পৌরসভার গাজীপুরা এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তাররা হলেন, নাগেরচর এলাকার জামালের ছেলে ও সরকারী সফর আলী কলেজের ছাত্র সংসদের সম্ভাব্য ভিপি পদপ্রার্থী জাইফুল ইসলাম রাহুল (২০) এবং ইয়াবা ব্যবসায়ি তুসিম রহমান জয় (২০)। সে মারুয়াদী এলাকার আওলাদ হোসেনের পুত্র। 

আড়াইহাজার থানার এস আই সৈকত জানান, তার নেতৃত্বে একদল পুলিশ রাত্রী কালিন ডিউটি চলা কালে ভোররাত অনুমান ৪ দিকে ওই এলাকায় গেলে আটক দুজন সহ অজ্ঞাত আরো একজন হাফপ্যান্ট পরিহিত অবস্থায় একটি হোন্ডা যোগে যাচ্ছিল।

এ সময় পুলিশ তাদেরকে সিগন্যাল দিলে চালক হোন্ডা থামালে পিছন থেকে অজ্ঞাত ব্যাক্তি দৌড়ে পালিয়ে যায় । 

এ সময় ওই দুজনকে দেহ তল্লাশী করলে জয়ের কাছ থেকে ১৫ পিস এবং রাহুলের কাছ থেকে ১০ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়। হোন্ডাটি জব্দ করা হয়।

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খন্দকার নাসির উদ্দিন জানান, শনিবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত ছাত্রদল নেতাসহ দুইজনকে মাদক মামলায় নারায়ণগঞ্জ আদালতে প্ররেণ করা হয়েছে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ