কুমিল্লা শহরের অন্যতম ব্যস্ত মোড় ‘টমছম ব্রিজ’। সকাল থেকে রাত—প্রায় সারাক্ষণই এখানে যানজট লেগে থাকে। যানজট যেন স্থায়ী রূপ নিয়েছে। শহরের বিভিন্ন দিক থেকে আসা সড়কগুলো এই মোড়ে এসে মিলে যাওয়ায় সৃষ্টি হচ্ছে স্থবিরতা। এতে যেমন সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে, তেমনই ব্যাহত হচ্ছে নগরীর জরুরি সেবা কার্যক্রম।

গত এক সপ্তাহের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে এ এলাকায় গড়ে ঘণ্টাখানেক করে যানজট লেগে থাকে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে দেরি, কর্মজীবীদের অফিসযাত্রায় ধকল এবং রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স আটকে থাকা—এসব যন্ত্রণার কারণ এই টমছম ব্রিজ এলাকার যানজট। পরিস্থিতি আরো খারাপ করেছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশার অবৈধ স্ট্যান্ড ও ফুটপাতে হকারদের দখলদারি।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, টমছম ব্রিজ এলাকায় একটি অবৈধ বাসস্টপ গড়ে উঠেছে, যেখানে নিয়মিতভাবে বাস থামিয়ে যাত্রী তোলা ও নামানো হয়। ফুটপাত হকারদের দখলে থাকায় পথচারীদের মূল সড়কে হাঁটতে হয়। এর ফলে যান চলাচলে আরো বিঘ্ন ঘটছে।

স্থানীয় ব্যবসায়ী তুহিন রহমান বলেছেন, গতকাল সকালে এক আত্মীয়কে হাসপাতালে নেওয়ার সময় টমছম ব্রিজে ২০ মিনিট আটকে ছিল অ্যাম্বুলেন্স। আশপাশে কোনো ট্রাফিক পুলিশও ছিল না। এই যানজটে প্রাণহানি ঘটলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

কুমিল্লা ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ পারভেজ হোসেন বলেছেন, “আমরা প্রতিদিন চেষ্টা করি যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে, কিন্তু মোড়টি সংকীর্ণ এবং চাপও বেশি। স্থায়ী সমাধান ছাড়া যানজট পুরোপুরি নিরসন সম্ভব নয়।”

গবেষক আহসানুল কবির বলেছেন, টমছম ব্রিজ এলাকার সমস্যা অপরিকল্পিত নগর ব্যবস্থাপনার প্রতিচ্ছবি। এখানে অবিলম্বে ফ্লাইওভার নির্মাণ, রাস্তা প্রশস্ত করা ও অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা জরুরি।

কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মো.

মাঈন উদ্দিন চিশতী বলেছেন, “টমছম ব্রিজ এলাকার যানজটের বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন প্রকল্পের পরিকল্পনা চলছে। এর পাশাপাশি ট্রাফিক ব্যবস্থার অস্থায়ী উন্নয়নেও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”

ঢাকা/রুবেল/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বল ছ ন য নজট

এছাড়াও পড়ুন:

ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম অপরাধ: জামায়া‌ত

গাজামুখী ত্রাণবাহী জাহাজ আটক করার ঘটনায় দখলদার ইসরাইলের ন্যক্কারজনক ভূমিকার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জা‌নি‌য়ে‌ছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আন্তর্জাতিক পানিসীমায় ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা দেওয়া‌কে মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম অপরাধও ব‌লে‌ছে দল‌টি।

ত্রাণবাহী জাহাজগুলোর নিরাপত্তা বিধানের আহ্বান জানিয়ে বৃহস্প‌তিবার এক বিবৃ‌তি‌তে দল‌টির সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন।

আরো পড়ুন:

ব্রাজিল ও সুই‌ডে‌নের রাষ্ট্রদূতের স‌ঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক

নির্বাচনের প্রস্তুতিতে জামায়াত ৫ পার্সেন্ট এগিয়ে: দুদু

তি‌নি ব‌লেন, “২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় প্রায় ৭০ হাজার নিরীহ মানুষ শহীদ হয়েছেন, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা সতর্ক করে বলেছে, গাজায় ইতোমধ্যেই দুর্ভিক্ষ ও রোগব্যাধি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ পৌঁছাতে না পারলে হাজার হাজার নারী-শিশুর মৃত্যু অনিবার্য হয়ে পড়বে।”

“আমরা জেনেছি, ইসরাইল ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’র ১৩টি ত্রাণবাহী নৌযান এবং সেখানে থাকা বহু মানবাধিকার কর্মীকে আটক করেছে। অথচ এই নৌযানগুলো গাজাবাসীর জন্য খাদ্য, পানি ও ওষুধ বহন করছিল। আমি ইসরাইলের এই অমানবিক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”

জামায়া‌তের সে‌ক্রেটা‌রি জেনা‌রেল বলেন, “আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুযায়ী মানবিক সহায়তা গন্তব্যে পৌঁছাতে কাউকে বিরত রাখা যায় না। দখলদার ইসরাইল নৌযান ও মানবাধিকার কর্মীদের আটক করে মানবতার বিরুদ্ধে জঘন্য অপরাধ করেছে। ইতোমধ্যেই এ ঘটনায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে। তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ইসরাইলের এ কর্মকাণ্ডকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ আখ্যা দিয়ে বলেছে, এটি নিরীহ মানুষের জীবনকে মারাত্মকভাবে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।”

তিনি বলেন, “মূলত দখলদার ইসরাইল ফিলিস্তিনে জাতিগত নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে। আন্তর্জাতিক পানিসীমায় ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা দিয়ে তারা চরম অপরাধ সংঘটিত করেছে। এ হামলা মানবতার বিরুদ্ধে এক ঘৃণ্যতম অপরাধ।”

তিনি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, “ক্ষুধার্ত গাজাবাসীর প্রাণ বাঁচাতে ত্রাণবাহী জাহাজগুলো যাতে নিরাপদে গাজায় পৌঁছতে পারে, সেজন্য ইসরাইলের ওপর অবিলম্বে চাপ সৃষ্টি করতে হবে। একই সাথে আটক মানবাধিকার কর্মীদের নিরাপত্তা ও নিঃশর্ত মুক্তি নিশ্চিত করতে হবে।”

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ত্রাণবাহী জাহাজে বাধা মানবতার বিরুদ্ধে ঘৃণ্যতম অপরাধ: জামায়া‌ত