ধরা খেয়ে জামায়েত কর্মী পরিচয়, অবশেষে কারাগারে কৃষক লীগ নেতা
Published: 5th, May 2025 GMT
অপারেশন ডেভিল হান্টের অভিযানে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন ময়মনসিংহের নান্দাইল পৌরসভা কৃষক লীগের এক নেতা। কিন্তু নিজেকে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী বলে পরিচয় দেন তিনি। এতেও শেষ রক্ষা হয়নি আবুল কাসেম মুন্সীর। আজ সোমবার সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনাটি ঘটেছে নান্দাইল মডেল থানায়।
গ্রেপ্তার আবুল কাসেম মুন্সী পৌর কৃষক লীগের সভাপতি। তিনি সংগঠনের উপজেলা কমিটিরও সদস্য। পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের চন্ডিপাশায় তাঁর বাড়ি। রোববার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে উপজেলার চৌরাস্তা বারুইগ্রাম এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি নিজেকে জামায়াতের কর্মী হিসেবে পুলিশের কাছে দাবি করেন।
পাঁচ মাস আগে জামায়াতে ইসলামে যোগদান করেছেন বলেও পুলিশকে জানান আবুল কাসেম। উপজেলার জামায়াতের নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কৃষক লীগ নেতার এমন দাবি মিথ্যা বলে প্রমাণ পায় পুলিশ।
উপজেলা জামায়াতের আমির কাজী শামসুদ্দিন বলেন, আগের সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর মধ্যে যারা অপকর্ম করেছে, তারা সেসব ঢাকার জন্য মিথ্যার আশ্রয় নিচ্ছেন। আবুল কাসেম তাদের দলের কর্মী নন। তার জামায়াতে যোগদানের খবরটি ভুয়া।
নান্দাইল মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কৃষক লীগ নেতার পরিচয় আড়াল করার জন্য আবুল কাসেম মিথ্যার আশ্রয় নেন। সোমবার তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়মনস হ জ ম য় ত ইসল ম উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
১৭ বছর পর দেশে আসছেন ডা. জোবাইদা
দুই পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমানকে সঙ্গে নিয়ে আজ মঙ্গলবার দেশে ফিরছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। কাতারের আমিরের দেওয়া এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তিনি লন্ডন থেকে রওনা হন। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সটি অবতরণের কথা রয়েছে।
জোবাইদা রহমান দেশের মাটিতে পা রাখার মধ্য দিয়ে প্রায় ১৭ বছরের নির্বাসিত জীবনের অবসান ঘটতে যাচ্ছে। জীবনের ঝুঁকি থাকায় জোবাইদাকে বিশেষ নিরাপত্তা দেবে পুলিশ। তবে তাঁকে নিরাপত্তা দেওয়ার নামে প্রতিবেশীদের বিরক্ত না করতে দলীয় নেতাকর্মীসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন তারেক রহমান।
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের ভাড়া বাসা ‘ফিরোজা’ এবং ধানমন্ডিতে জোবাইদা রহমানের বাবার বাসা ‘মাহবুব ভবন’ প্রস্তুত করা হয়েছে। সেখানে জোরদার করা হয়েছে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এর আগে লন্ডনের স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে বড় ছেলে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান মাকে পাশে বসিয়ে গাড়ি চালিয়ে হিথরো বিমানবন্দরে যান। একই গাড়িতে দাদির পেছনে বসা ছিলেন তারেক রহমানের মেয়ে জাইমা রহমান। সেখানে আগে থেকে বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার নিয়ে হাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে খালেদা জিয়া এবং তাঁর দুই পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমানকে ঢাকায় বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাবেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতারা। দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সড়কের এক পাশে দাঁড়িয়ে সুশৃঙ্খলভাবে দলীয় ও জাতীয় পতাকা হাতে স্বাগত জানানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে নেতাকর্মী ও সমর্থকরা জনভোগান্তি সৃষ্টি করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবস্থা নিতে দলের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
প্রস্তুত ধানমন্ডির ‘মাহবুব ভবন’
দীর্ঘ ১৭ বছর পর দেশে ফিরছেন ডা. জোবাইদা রহমান। দেশে ফিরে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডিতে তাঁর বাবার বাসা মাহবুব ভবনে উঠবেন। সেনাসমর্থিত ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় কারাবন্দি থাকা অবস্থায় নির্যাতনে তারেক রহমান গুরুতর আহত হন। পরে নানা মহলের চাপে আদালতের নির্দেশে চিকিৎসার জন্য তাঁকে ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। সঙ্গে যান স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও একমাত্র মেয়ে জাইমা রহমান। এরপর থেকে লন্ডনে নির্বাসিত তারা।
বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমন জানান, ডা. জোবাইদার নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বাড়ির চারপাশে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। দায়িত্বে থাকবেন সিএসএফ সদস্য, সঙ্গে থাকবেন পুলিশ সদস্যরাও।
প্রসঙ্গত, বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এ বি এম আবদুস সাত্তার গত ৩০ এপ্রিল পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে চিঠি দিয়ে ডা. জোবাইদা রহমানের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন। সেই চিঠিতে গানম্যান, পুলিশ প্রটেকশন, বাসায় আর্চওয়ে ও পুলিশ পাহারার দাবি জানানো হয়। এর পরপরই পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার কয়েকজন কর্মকর্তা মাহবুব ভবন পরিদর্শন করে নিরাপত্তা ব্যবস্থার খুঁটিনাটি পর্যালোচনা করেন। এখন ওই ভবনে বাস করছেন জোবাইদার মা সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু, বড় বোন শাহীনা জামান ও তাঁর পরিবার।
কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির দেওয়া বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ জানুয়ারি খালেদা জিয়া লন্ডন যান। ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত তিনি লন্ডনের দ্য ক্লিনিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১৭ দিন চিকিৎসার পর লন্ডন ক্লিনিক থেকে ২৫ জানুয়ারি তাঁকে তারেক রহমানের বাসায় নেওয়া হয়। ৭৯ বছর বয়সী সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা জটিলতায় ভুগছেন।