ভারতের পেসার শামিকে মেরে ফেলার হুমকি, এক কোটি রুপি দাবি
Published: 6th, May 2025 GMT
মেইল করে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে ভারতের পেসার মোহাম্মদ শামিকে। গত রোববার তিনি এই মেইল পান বলে জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া। এ বিষয়ে উত্তর প্রদেশের আমরোহা জেলায় সাইবার ক্রাইম পুলিশ স্টেশনে গতকাল সোমবার একটি এফআইআর করা হয়েছে। ভারতের বার্তা সংস্থা আইএএনএস এই এফআইআর সম্পর্কে জানতে পেরেছে।
আরও পড়ুনওয়ানডে র্যাঙ্কিং: দশে নেমে গেছে বাংলাদেশ, সর্বশেষ কবে এত বাজে অবস্থা ছিল১৭ ঘণ্টা আগেআইএএনএস জানিয়েছে, পুলিশ সুপারের নির্দেশে এফআইআর করা হয়। তবে এই এফআইআর নিবন্ধন করা হয়েছে শামির ভাই হাসিবের পক্ষ থেকে, যেখানে মেইলে হুমকি দাতা হিসেবে রাজপুত সিন্দারের নাম উল্লেখ করা হয়।
এফআইআর অনুযায়ী, মেইলে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি শামির কাছে এক কোটি রুপিও দাবি করেন হুমকিদাতা। শামি এখন সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে আইপিএল খেলছেন। পুলিশ তদন্তে নেমেছে।
হায়দরাবাদের হয়ে এবার আইপিএলে ৯ ম্যাচে ৫৬.
গত মাসে ভারতের কোচ গৌতম গম্ভীরকেও মেইল করে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। দিল্লি পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে এবং গম্ভীরকে পুলিশি নিরাপত্তাও দেওয়া হয়েছে। ডিসিপি (কেন্দ্রীয়) ভি হর্ষবর্ধন এ নিয়ে বলেন, ‘গৌতম গম্ভীরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি ই–মেইল আইডিতে মেইল করে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আমরা পেয়েছি। ব্যাপারটি তদন্ত করা হচ্ছে। গৌতম গম্ভীর ইতিমধ্যেই দিল্লি পুলিশের নিরাপত্তাবলয়ে আছেন। কী ধরনের নিরাপত্তায় আছেন, তা নিয়ে আমরা কিছু বলতে পারছি না।’
ভারতীয় দলের প্রধান কোচ গৌতম গম্ভীরউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ য়দর ব দ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান বিচারপতির রোডম্যাপ বাস্তবায়নের অগ্রগতি জানাল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন
বর্তমান প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের ঘোষিত বিচার বিভাগ সংস্কার রোডম্যাপ বাস্তবায়নে বিগত এক বছরে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। গতকাল শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
দেশের ২৫তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে গত বছরের ১১ আগস্ট দায়িত্ব গ্রহণ করেন বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ। স্বচ্ছতা ও প্রাতিষ্ঠানিক উৎকর্ষ আনয়নের মাধ্যমে বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের হারানো আস্থা ফিরিয়ে আনার প্রয়াস হিসেবে তিনি অধস্তন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর অভিভাষণ দেন।
অভিভাষণে বিচার বিভাগ সংস্কারের রোডম্যাপ তুলে ধরেন প্রধান বিচারপতি। ওই রোডম্যাপ ঘোষণার এক বছর পূর্তি আগামীকাল রোববার। এমন প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতির উদ্যোগ ও কার্যক্রমের অগ্রগতি জানিয়ে শনিবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিল সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।
উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগসংক্রান্ত অধ্যাদেশ, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়, বিচার সেবা প্রদানে স্বচ্ছতা আনতে ১২ দফা নির্দেশনা, পেপার ফ্রি বেঞ্চ চালু, লিগ্যাল এইড প্রদানে ক্যাপাসিটি টেস্ট চালু, বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস গঠন বিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ, দেওয়ানি ও ফৌজদারি এখতিয়ার অনুসারে পৃথক আদালত চালুর উদ্যোগ, অধস্তন আদালতের বিচারক সংখ্যা বৃদ্ধি, সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল পুনর্গঠন, বদলি ও পদায়ন নীতিমালা, বিচারকদের সুদমুক্ত গাড়ি নগদায়ন সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ, আদালত প্রাঙ্গণসহ বিচারকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, সুপ্রিম কোর্ট হেল্পলাইন ও সারা দেশের আদালতে হেল্পলাইন চালু, প্রধান বিচারপতি ফেলোশিপ চালু এবং দেশের চৌকি আদালতে কম্পিউটার প্রদানসহ প্রধান বিচারপতির উদ্যোগের বিভিন্ন দিকগুলো তুলে ধরা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
অভিভাষণে প্রধান বিচারপতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজনীয় আইনি ও কাঠামোগত সংস্কার আনা; বিচার বিভাগের জন্য স্বতন্ত্র ও পর্যাপ্ত বাজেট বরাদ্দ করা; অধস্তন আদালতের বিচারকদের বদলি ও পদায়নে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে এ–সংক্রান্ত নীতিমালা প্রণয়ন; উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে উন্নত দেশের মতো সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন; সব ধরনের দুর্নীতি বিলোপের মাধ্যমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক বিচার সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করে সুবিচারের সংস্কৃতির উন্মেষ—এসব লক্ষ্যগুলো সামনে রেখে প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধনের রূপরেখা তুলে ধরেছিলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে রোডম্যাপ ঘোষণার তারিখ থেকে গত এক বছরে বিচার বিভাগে যে গুণগত পরিবর্তন সাধিত হয়েছে, তা শুধু নিছক নীতিগত কাগজে–কলমের পরিবর্তন নয়; বরং তাঁর গৃহীত পদক্ষেপগুলো বিচার বিভাগের কাঙ্ক্ষিত সংস্কারের কার্যকর বাস্তবায়নে নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশঘোষিত রোডম্যাপের ধারাবাহিকতায় প্রধান বিচারপতির উদ্যোগে সুপ্রিম কোর্ট থেকে উচ্চ আদালতের বিচারক নিয়োগে আইন প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয় বলে সুপ্রিম কোর্টের গণসংযোগ কর্মকর্তা মো, শফিকুল ইসলামের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে। এতে বলা হয়, অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত করে সুপ্রিম কোর্টের উভয় বিভাগে কর্মরত বিচারপতিদের মতামত গ্রহণের পর গত বছরের ২৮ অক্টোবর তা প্রস্তাব আকারে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। পরে উপদেষ্টা পরিষদে ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ, ২০২৫’ খসড়া নীতিগতভাবে অনুমোদন হয়। চলতি বছরের ২১ জানুয়ারি অধ্যাদেশটি পাস হয়।
এই অধ্যাদেশের আওতায় প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ গঠন করা হয়েছে। কাউন্সিলের সুপারিশ অনুসারে আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি নিয়োগ করা হয়েছে। প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে ‘সুপ্রিম জুডিশিয়াল অ্যাপয়েন্টমেন্ট কাউন্সিল’ অধ্যাদেশে বর্ণিত নিয়োগপ্রক্রিয়া যথাযথ অনুসরণ করে সম্পূর্ণ স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় মেধা, দক্ষতা ও সততার নিরিখে নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন করে দেশের উচ্চ আদালতে বিচারক নিয়োগপ্রক্রিয়ায় নবদিগন্তের সূচনা করেছে।
সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয়বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিচার বিভাগের প্রাতিষ্ঠানিক স্বাতন্ত্র্যীকরণ নিশ্চিতে প্রধান বিচারপতির উদ্যোগে গত বছরের ২৭ অক্টোবর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট থেকে পৃথক বিচার বিভাগীয় সচিবালয় গঠনসংক্রান্ত প্রস্তাব আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। ওই প্রস্তাবে সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ যথাযথরূপে পালনের উদ্দেশ্যে একটি স্বতন্ত্র সচিবালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অধ্যাদেশের খসড়া, প্রস্তাবিত সচিবালয়ের অর্গানোগ্রাম এবং রুলস অব বিজনেস ও এলোকেশন অব বিজনেসের সম্ভাব্য সংস্কার সম্পর্কে পরিপূর্ণ প্রস্তাব পাঠানো হয়।
ইতিমধ্যে ২ সেপ্টেম্বর হাইকোর্ট বিভাগ এক রিট মামলায় আগামী তিন মাসের মধ্যে বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় স্থাপনের জন্য সরকারকে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। অন্তর্বর্তী সরকারের ইতিবাচক সহযোগিতায় বিচার বিভাগের জন্য পৃথক সচিবালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় আইনি কাঠামো প্রস্তুতকরণে ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।
সুদমুক্ত গাড়ি নগদায়ন সুবিধার উদ্যোগবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি সরকারের অন্যান্য কর্ম বিভাগের কর্মকর্তাদের অনুরূপ বিচারকদের সুদমুক্ত গাড়ি নগদায়ন সুবিধা প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। এ লক্ষ্যে গত বছরের ১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের ১২ ডিসেম্বর বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের অনুকূলে সুদমুক্ত গাড়ি নগদায়ন সুবিধা প্রদানসংক্রান্ত নীতিমালা প্রণীত হয়।
আরও পড়ুনসংস্কার কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বিচার বিভাগ অগ্রগামী ভূমিকা পালন করেছে: প্রধান বিচারপতি২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫