পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত অন্তত ৩
Published: 7th, May 2025 GMT
পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত তিনজন নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছেন। পাকিস্তানের আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের আইএসপিআরের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতের পর পাকিস্তানের কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ ও মুজাফ্ফরবাদে ‘কাপুরুষোচিত’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ইতিমধ্যে এর বদলা নিতে শুরু করেছে।
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ৩৬ জনের প্রাণহানির পর থেকে পারমাণবিক ক্ষমতাধর দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এ হামলা চালাল ভারত।
রাত ১টার পর পাকিস্তানের এআরউয়াই নিউজকে পাকিস্তানের আইএসপিআরের মহাপরিচালক বলেন, ‘এখন থেকে কিছু সময় আগে কাপুরুষ শত্রু ভারত ভাওয়ালপুরের আহমেদ ইস্ট এলাকায় সুবহান্নাল্লাহ মসজিদ, কোটলি ও মুজাফ্ফরবাদের অন্তত তিন জায়গায় বিমান হামলা চালিয়েছে।’ হামলাগুলো ভারতের আকাশসীমা থেকে চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পাকিস্তান এর সমুচিত জবাব দেবে উল্লেখ করে দেশটির এই সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এই ঘৃণ্য উসকানি জবাব ছাড়া পার পাবে না।’
ভারতের হামলায় হতাহতের বিষয়ে জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পরে আরও তথ্য জানানো হবে। এর কিছুক্ষণ পর তিনি পাকিস্তানের জিউ নিউজকে ক্ষয়ক্ষতির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়েছেন। তাতে বলেছেন, ভাওয়ালপুরের আহমেদপুর ইস্ট এলাকায় একটি শিশু নিহত ও ১২ জন আহত হওয়ার খবর পেয়েছেন। কোটলিতে দুইজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
তিনি জানান, আহমেদপুরে একটি মসজিদে হামলা হয়েছে। কাছের একটি বাড়িও আক্রান্ত হয়েছে। সেখানে একটি শিশু ও তার বাবা–মা আটকা পড়েছেন। তাদেরকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
কোটলিতেও একটি মসজিদে হামলা হয়েছে। মুজাফ্ফরবাদে একটি সড়কে ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে। তাতে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
পাকিস্তানি বাহিনী স্থল ও আকাশপথে এই হামলার জবাব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে ভারত সরকারের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরু করেছে। এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের নয়টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কোনো স্থাপনাকে এই অভিযানে নিশানা করা হয়নি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আহম দ
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন আসিম মুনির
ভারতের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের মধ্যে ফের যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) ডন ডটকম লিখেছে, চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফর করবেন আসিম মুনির। যেখানে তিনি মার্কিন সেনাপ্রধান ও পদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক চাপিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার ঘনিষ্ট বন্ধু হিসেবে বারবার ট্রাম্পের নাম নিলেও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ট্রাম্প যে একেবারে আলাদা, সেটি তার শুল্ক চাপানোর ঘোষণায় স্পষ্ট।
আরো পড়ুন:
যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস পালিত
সেনাঘাঁটিতে সহকর্মীদের গুলি করলেন মার্কিন সার্জেন্ট, আহত ৫
ভারতের ওপর বর্ধিতসহ মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপালেন ট্রাম্প। অথচ পাকিস্তানের ওপর ট্রাম্পের চাপানো পাল্টা শুল্কের পরিমাণ মাত্র ১৯ শতাংশ। সম্প্রতি পাকিস্তানের ওপর ট্রাম্প প্রশাসনের সুনজর সব দিক থেকেই প্রকাশ পাচ্ছে। প্রথম সফরের দুই মাস না যেতেই পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের আবার যুক্তরাষ্ট্র সফরের আমন্ত্রণ তার আরেকটি প্রমাণ বলা যায়।
আসিম মুনিরের এবারের সফর একটি পাল্টা সফর হবে জানিয়ে ডন ডটকম বলেছে, এর আগে জুলাইয়ের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল কমান্ডের (সেন্টকম) প্রধান জেনারেল মাইকেল এরিক কুরিলা পাকিস্তান সফর করেছিলেন।
৪ আগস্ট প্রকাশিত এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সেন্ট্রাল কমান্ড তাদের প্রধান জেনারেল কুরিলার সাম্প্রতিক পাকিস্তান ও অঞ্চলটির অন্যান্য দেশ সফরের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়।
সফরকালে পাকিস্তান সরকার জেনারেল কুরিলাকে ‘নিশান-ই-ইমতিয়াজ (সামরিক)’ খেতাব প্রদান করে।
আসিম মুনির এর আগে জুনে ওয়াশিংটন সফর করন, তখন তিনি হোয়াইট হাউসে এক মধ্যাহ্নভোজে অংশ নেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাকে স্বাগত জানান। এটি একটি নজিরবিহীন সম্মান, যা সাধারণত কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধান বা সরকারপ্রধানদের জন্য সংরক্ষিত থাকে।
ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর) অথবা ওয়াশিংটনে পাকিস্তান দূতাবাসের পক্ষ থেকে এ সফর নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলা হয়নি। তবে তার আগের সফরে সেনাপ্রধান ইঙ্গিত দিয়েছিলেন,, তিনি বছরের শেষ দিকে আবার যুক্তরাষ্ট্র সফরের প্রত্যাশা করছেন।
এই ঘটনাপ্রবাহ এমন এক সময় ঘটছে যখন এর এক মাস আগেই এক কংগ্রেশনাল শুনানিতে মার্কিন জেনারেল পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবিরোধী প্রচেষ্টায় ‘চমৎকার অংশীদার’ হিসেবে অভিহিত করেন। একই সঙ্গে তিনি অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় পাকিস্তানের ভূমিকার প্রশংসা করেন।
‘প্রেসিডেন্ট হওয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই’
ডন ডটকম জানিয়েছে, সেনাপতি আসিম মুনিরের প্রেসিডেন্ট হওয়ার গুজবকে সম্পূর্ণভাবে উড়িয়ে দিয়েছেন আইএসপিআর প্রধান।
এর আগে জুলাইয়ের শুরুতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভিও স্পষ্ট করেছিলেন, প্রেসিডেন্টকে পদত্যাগে বাধ্য করার বা সেনাপ্রধানের প্রেসিডেন্ট হওয়ার কোনো পরিকল্পনার কথা সরকারের মধ্যে নেই।
দ্য ইকোনমিস্টকে দেওয়া সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, তার বসের (আসিম মুনিরের) প্রেসিডেন্ট হওয়ার আলোচনাকে তিনি ‘নিরর্থক’ মনে করেন।
ঢাকা/রাসেল