বিপজ্জনকভাবে ঝুলছিল ভবনের ছাদ। এর একটি গর্ত দিয়ে সূর্যের আলো ভেতরে প্রবেশ করছিল। মাটিতে ছড়িয়ে ছিল ধ্বংসাবশেষ এবং ঘরের দরজাগুলো উড়ে গিয়েছিল বিস্ফোরণে।

এটা ছিল ভারতের পক্ষ থেকে পাকিস্তানকে পাঠানো একটি বার্তা। ৭ মে গভীর রাতে ভারতের চালানো একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার এটি ছিল একটি। গত ২২ এপ্রিল ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের প্রাণঘাতী হামলার প্রতিশোধ হিসেবে চালানো হয় এ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা।

পেহেলগামে হামলায় ২৬ জন নিহত হন। ভারত হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও, ইসলামাবাদ এতে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।

ওপরে যে ভবনের বর্ণনা দেওয়া হলো, সেটি পাকিস্তানে মুরিদকেতে অবস্থিত। ভারতের এ হামলা ছিল ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর অংশ, যা পাকিস্তানে চালানো সবচেয়ে বড় পরিসরের বিমান হামলা। পারমাণবিক অস্ত্রধারী দুই প্রতিবেশীর মধ্যে চারটি যুদ্ধের বাইরে সবচেয়ে বড় হামলা এটি। ভারত যেসব স্থান নিশানা করেছে, সেসবের মধ্যে মুরিদকে ছিল বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

দীর্ঘদিন ধরে ধারণা করা হয়, মুরিদকে হলো লস্কর-ই-তাইয়েবা (এলইটি) নামের সশস্ত্র সংগঠনের ঘাঁটি। সংগঠনটিকে ভারত তার ভূখণ্ডে চালানো বিভিন্ন প্রাণঘাতী হামলার জন্য দায়ী করে থাকে; যার মধ্যে রয়েছে ২০০৮ সালের নভেম্বরে চালানো মুম্বাই হামলাও।

তবে ভারতের নিরাপত্তা কর্মকর্তারা ও দেশটির পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি গত বুধবার জোর দিয়ে দাবি করেন, তাঁরা শুধু ‘সন্ত্রাসবাদী স্থাপনা’ নিশানা বানিয়েছেন এবং ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কেবল সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকে আঘাত করেছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান জানিয়েছে, হামলায় অন্তত ২ শিশুসহ ৩১ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।

মুরিদকেতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক ঘণ্টা পর দেখা যায়, ধসে পড়া ছাদটি ছিল একটি বড় প্রশাসনিক ভবনের, নাম ‘গভর্নমেন্ট হেলথ অ্যান্ড এডুকেশনাল কমপ্লেক্স’। এখানে একটি হাসপাতাল, দুটি স্কুল, একটি হোস্টেল ও একটি বড় মাদ্রাসা রয়েছে। মাদ্রাসায় প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। এ ছাড়া এখানে রয়েছে ৮০টি বাড়ি, যেখানে প্রায় ৩০০ মানুষের বসবাস, যাঁদের অধিকাংশ সরকারি কর্মচারী।

মুরিদকেতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কয়েক ঘণ্টা পর দেখা যায়, ধসে পড়া ছাদটি ছিল একটি বড় প্রশাসনিক ভবনের, নাম ‘গভর্নমেন্ট হেলথ অ্যান্ড এডুকেশনাল কমপ্লেক্স’। এখানে একটি হাসপাতাল, দুটি স্কুল, একটি হোস্টেল ও একটি বড় মাদ্রাসা রয়েছে। মাদ্রাসায় প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থী পড়াশোনা করেন। এ ছাড়া এখানে রয়েছে ৮০টি বাড়ি, যেখানে প্রায় ৩০০ মানুষের বসবাস; যাঁদের অধিকাংশ সরকারি কর্মচারী।

বুধবার এই প্রশাসনিক ভবন ও এটি সংলগ্ন এক বড় বারান্দা দিয়ে আলাদা করা একটি মসজিদেও আঘাত হেনেছে ক্ষেপণাস্ত্র। হামলায় ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী তিন কর্মচারী নিহত হন। আহত হন একজন।

একজন উদ্ধারকারী আল–জাজিরাকে জানান, তিনি হামলার আধা ঘণ্টার মধ্যে ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ‘প্রথম মৃতদেহটি আমি-ই খুঁজে পাই’, প্রশাসনিক ভবনের একটি কক্ষের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন তিনি।

ভারতের হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত বিলাল মসজিদের সামনে পাকিস্তানের এক সেনা। ৭ মে ২০২৫, পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের রাজধানী মুজাফফরাবাদে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভবন র

এছাড়াও পড়ুন:

‘মেরিনার কাজে প্রকৃত শিল্পীর অভিব্যক্তি দেখা যায়’

স্থপতি নাহাস আহমেদ খলিল বলেছেন, ‘মেরিনা তাবাশ্যুমের কাজে একজন প্রকৃত শিল্পীর অভিব্যক্তি দেখা যায়, যা নৈতিকভাবে শক্তিশালী ও সৎ। অভিব্যক্তিতে (এক্সপ্রেশন) সততা না থাকলে আমরা এগোতে পারব না।’

সম্প্রতি দ্বিতীয়বারের মতো স্থাপত্যে আগা খান পুরস্কার পান মেরিনা তাবাশ্যুম। এই পুরস্কারপ্রাপ্তি উদ্‌যাপন করতে গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন নাহাস আহমেদ।

মেরিনা তাবাশ্যুম সম্পর্কে তাঁর শিক্ষক ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব আর্কিটেকচারের চেয়ারপারসন জয়নব ফারুকি আলী বলেছেন, ‘স্থাপত্য মানুষের জীবন ও আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে কী অসাধারণভাবে মিশে যায়, মেরিনা তাবাশ্যুম সেটার স্বাক্ষর রেখেছেন তাঁর ঢাকার দক্ষিণখানের বায়তুর রউফ মসজিদে। ২০১৬ সালে যখন মসজিদটির উদ্বোধনে যাই, তখন মসজিদটির মোয়াজ্জিনের কাছে জানতে চাই, এ মসজিদের কোন বিষয়টি আপনার সবচেয়ে ভালো লাগে। মোয়াজ্জিন বলেছিলেন, “আমার এখান থেকে আজান দিতে ভালো লাগে।”’

মেরিনা তাবাশ্যুমের কাজে একজন প্রকৃত শিল্পীর অভিব্যক্তি দেখা যায়, যা নৈতিকভাবে শক্তিশালী ও সৎ। অভিব্যক্তিতে (এক্সপ্রেশন) সততা না থাকলে আমরা এগোতে পারব না।স্থপতি নাহাস আহমেদ খলিল।

গতকাল ‘বিটুইন ইরোজন অ্যান্ড ইমার্জেন্স’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে আর্কিকানেক্টের সহযোগিতায় সিরামিক বাংলাদেশ ম্যাগাজিন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন আর্কিকানেক্টের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্থপতি জালাল আহমেদ।

মেরিনা তাবাশ্যুম বলেন, ‘মসজিদের প্রকল্পটি ছিল ব্যক্তিগত। নানির দান করা জায়গায় ২০০৬ সালে এ মসজিদটির ডিজাইন শুরু করি। এটিকে শুধু মসজিদ হিসেবে না দেখে পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে যুক্ত করে মোর দ্যান মস্ক (মসজিদের চেয়েও বেশি কিছু) হিসেবে দেখার চেষ্টা করেছি।’

অনুষ্ঠান কথা বলছেন স্থাপতি মেরিনা তাবাশ্যুম

সম্পর্কিত নিবন্ধ