১৯ বছরে হয়নি ডাম্পিং স্টেশন বর্জ্যে ভরছে খোয়াই নদী
Published: 9th, May 2025 GMT
হবিগঞ্জ জেলার অন্যতম পুরোনো পৌরসভা চুনারুঘাট। প্রায় ১৯ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এ উপজেলায় এখন পর্যন্ত গড়ে ওঠেনি পৌর এলাকার জন্য নির্দিষ্ট ডাম্পিং স্টেশন। প্রতিদিন শহর থেকে সংগ্রহ করা আবর্জনা ফেলা হচ্ছে খোয়াই নদীতে। এতে হুমকির মুখে পড়েছে নদীর অস্তিত্ব।
নদীতে আবর্জনা ফেলার এ অপচর্চা পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। পৌরবাসী বলছেন, এটি পরিবেশের ওপর সরাসরি আঘাত। শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া খোয়াই নদীতে ময়লা ফেললে শুধু পানি দূষিত হয় না, চারপাশের পরিবেশও দূষিত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অল্প সময়ের মধ্যে নদীটির অস্তিত্ব নষ্ট হবে। বিষাক্ত বর্জ্যে নষ্ট হয়ে যাবে এর বাস্তু ব্যবস্থাপনা।
সরেজমিন পৌর এলাকার নদী তীরবর্তী অংশ ঘুরে দেখা যায়, পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম পাকুড়িয়া খোয়াই নদীর চরে অলিখিতভাবে ময়লা ফেলা হচ্ছে। এতে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে নাগরিকদের। এসব জায়গা দিয়ে পথচারীকে চলাচল করতে নাক চেপে ধরতে হয়। বিগত দিনে পৌরশহরের পাকুড়িয়া জোড়া ব্রিজের সামনে ময়লা ফেলা হলে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের মুখে সে স্থান থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় ময়লা ফেলার স্থান। এখন গোটা খোয়াই নদী ভাগাড়ে পরিণত হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার কয়েকজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী জানান, তাদের কোনো বিকল্প স্থান সম্পর্কে নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তাই এখানেই ময়লা ফেলা হচ্ছে। শিক্ষক শামীম আলম বলেন, ডাম্পিং স্টেশন না থাকা একটি পৌরসভার জন্য লজ্জার বিষয়। দীর্ঘ দুই দশকেও একটি সঠিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে না তোলা দুর্ভাগ্যজনক।
২০০৫ সালের ১০ অক্টোবর চুনারুঘাট পৌরসভা গঠিত হয়। ২০১৭ সালে দ্বিতীয় শ্রেণিতে উন্নীত হয়। ২০১৫ সালে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। ৮ দশমিক ১ বর্গকিলোমিটার আয়তনের পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে লোকসংখ্যা প্রায় ৫০ হাজার।
পাকুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা উজ্জ্বল মিয়া বলেন, খোয়াই নদীর পাশে প্রতিদিন ময়লা ফেলা হচ্ছে, যা সম্পূর্ণ অস্বাস্থ্যকর একটি বর্জ্য ব্যবস্থাপন পরিকল্পনা। ওয়ার্ডের নাগরিকরা স্বাস্থ্যঝুঁকি থেকে পরিত্রাণ চাইছে। চুনারুঘাট সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী নাজিম উদ্দিন বলেন, চুনারুঘাট পৌরসভা এখন এক চরম বাস্তবতার সামনে দাঁড়িয়ে। পরিবেশ, স্বাস্থ্য এবং শহরের ভবিষ্যৎ রক্ষায় জরুরি ভিত্তিতে ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ এখন সময়ের দাবি।
পৌরসভার প্রশাসক ও নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়া বলেন, পৌরসভা ভবিষ্যতে একটি বড় শহরে পরিণত হবে। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ময়লা ডাম্পিংয়ের পরিকল্পিত স্টেশন নির্মাণের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়ল র স ত প খ য় ই নদ প রসভ র বর জ য পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
বদ নজরের দোয়া: ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা
‘বদ নজর’ ইসলামে একটি বাস্তব সত্য, যা মানুষের ঈর্ষা, হিংসা বা অতিরিক্ত প্রশংসার মাধ্যমে অন্যের ক্ষতি করতে পারে। কোরআন ও হাদিসে বদ নজরের বাস্তবতা এবং এর থেকে সুরক্ষা লাভের উপায় উল্লেখ করা হয়েছে।
তাই মুসলমানদের জন্য বদ নজর থেকে রক্ষার দোয়া ও আমল জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বদ নজরের বাস্তবতাআল্লাহ তা’আলা বলেন, “আর নিশ্চয় যারা অবিশ্বাস করেছে, তারা যখন কোরআন শোনে তখন প্রায় তাদের দৃষ্টির দ্বারা তোমাকে পতিত করবে। আর তারা বলে: ‘সে তো অবশ্যই পাগল।’” (সুরা কলাম, আয়াত: ৫১)
রাসুল (সা.) বলেছেন: “চোখ লাগা (বদ নজর) সত্য।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২১৮৮)
আরও পড়ুনশিশুদের বদ নজর থেকে বাঁচাতে১৫ আগস্ট ২০২৫বদ নজর থেকে বাঁচার দোয়ারাসুল (সা.) বদ নজর থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন দোয়া শিখিয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকটি প্রসিদ্ধ দোয়া হলো:
১. বদ নজর থেকে শিশুদের রক্ষার দোয়া
রাসুল (সা.) হাসান ও হুসাইন (রা.)-এর জন্য এই দোয়া পড়তেন:
উচ্চারণ: উ‘ঈযুকুমা বি কালিমাতিল্লাহিত্তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিন, ওয়া হাম্মাতিন, ওয়া মিন কুল্লি ‘আইনিল লাম্মাহ।
অর্থ: “আমি তোমাদের উভয়কে আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালিমার মাধ্যমে আশ্রয় দিচ্ছি, প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং ক্ষতিকর বদ নজর থেকে।” (সুনান আত-তিরমিজি, হাদিস: ২০৬০)
২. বদ নজর থেকে রক্ষার সাধারণ দোয়া
উচ্চারণ: আ‘ঊযু বি কালিমাতিল্লাহিত্তাম্মাতি মিন শার্রি মা খালাক।
অর্থ: “আমি আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালিমার মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির অশুভ দিক থেকে আশ্রয় চাই।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭০৮)
৩. বদ নজর দূর করার আমল
রাসুল (সা.) বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের মধ্যে এমন কিছু দেখে যা তাকে ভালো লাগে, তখন সে যেন তার জন্য বরকতের দোয়া করে। কারণ বদ নজর সত্য।” (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৫০৯)
এক্ষেত্রে দোয়া করা যায়—
উচ্চারণ: বারাকাল্লাহু ফীক।
অর্থ: “আল্লাহ তোমার জন্য বরকত দান করুন।”
আরও পড়ুনদোয়া কবুলের জায়গা০৪ জুন ২০২৪বদ নজর প্রতিরোধে করণীয়১. সকালে-সন্ধ্যায় জিকির–আজকার পাঠ করা (যেমন আয়াতুল কুরসি, সুরা ফালাক, সুরা নাস)।
২. অন্যের প্রশংসায় বরকতের দোয়া করা।
৩. আল্লাহর উপর ভরসা রাখা এবং তাওয়াক্কুল করা।
বদ নজর মানুষের জন্য বাস্তব ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে আল্লাহর উপর ভরসা, কোরআনের আয়াতসমূহ পাঠ এবং রাসুল (সা.)-এর শিখানো দোয়া পাঠের মাধ্যমে মুসলমান সহজেই এর ক্ষতি থেকে বাঁচতে পারে।
তাই প্রতিদিনের জীবনে বদ নজর প্রতিরোধের দোয়াগুলো নিয়মিত পড়া প্রতিটি মুমিনের দায়িত্ব।
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫