ফিলিপে কুতিনিওকে মনে আছে? সেই যে ২০১৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত লিভারপুলে আলো ছড়ানো ব্রাজিলিয়ান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার সময় যাঁর জন্য কেঁদেছিলেন লিভারপুলের সমর্থকেরা। ৩২ বছর বয়সী কুতিনিও এবার আলোচনায় অন্য কারণে। ক্লাবের অনুশীলন মাঠে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবো টিভি’কে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন কুতিনিও। এ সময় মাঠের পাশে মুহুর্মুহু গুলির শব্দে ভেস্তে যায় কুতিনিওর সাক্ষাৎকার।

আরও পড়ুনরিয়ালের হয়ে যে ইতিহাস গড়ে বিদায় নিচ্ছেন আনচেলত্তি২ ঘণ্টা আগে

বার্সা ছেড়ে ২০২২ সালে অ্যাস্টন ভিলায় যোগ দেওয়ার পর কাতারি ক্লাব আল দুহাইলে গত মৌসুম ধারে খেলেন কুতিনিও। গত বছর সেখান থেকে আবারও ধারে ব্রাজিলের ক্লাব ভাস্কো দ্য গামায় ফেরেন বার্সার হয়ে লা লিগা ও বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে বুন্দেসলিগা জয়ী এ ফুটবলার। ভাস্কোর অনুশীলন মাঠ মোয়াকির বারবোসা ট্রেনিং গ্রাউন্ডে গ্লোবো টিভিকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন কুতিনিও। কথা বলার মাঝপথে হঠাৎ করেই গুলির শব্দ ভেসে আসে। কুতিনিও একটু থেমে যান এরপর মুখে হাসি ফুটিয়ে মজাও করেন। তাঁর দুই ক্লাব সতীর্থ লিও জার্দিম ও নুনো মোরেইরাও তখন সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন। তাঁরা গুলির শব্দে প্রথমে একটু হতচকিত হয়ে গেলেও নিজেদের সামলে নিয়ে হেসে ফেলেন।

গ্লোবো জানিয়েছে, ভাস্কোর এই অনুশীলন মাঠের পাশের অঞ্চলটির নাম সিদাদে দে দেউস। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সেখানে অপরাধপ্রবণতা বেড়েছে। গত সোমবার ব্রাজিলের সিভিল পুলিশের এলিট ফোর্সের কর্মকর্তা হোসে আন্তোনিও লৌরেন্তো সিদাদে দে দেউসে অভিযান চালাতে গিয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এরপর সেখানে পুলিশি অভিযানে গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম। ভাস্কোর স্টাফরা জানিয়েছেন, হেলিকপ্টার ও গুলির শব্দ সেখানে স্বাভাবিক ঘটনা। ২০২০ সালে এই অনুশীলন মাঠ চালু করে ভাস্কো, যেখানে নিরাপত্তাব্যবস্থাও বেশ ভালো।

আরও পড়ুনটেস্ট ছাড়ার ঘোষণা ম্যাথুসের, শেষ টেস্ট বাংলাদেশের বিপক্ষে৩ ঘণ্টা আগে

কুতিনিও, গোলকিপার জার্দিম ও উইঙ্গার মোরেইরার এই সাক্ষাৎকার দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর মন্তব্য করেছেন নেটিজেনরা। একজনের মন্তব্য, ‘সবচেয়ে অবিশ্বাস্য ব্যাপার হলো (গুলির শব্দ শুনে) কেউ একটু নড়াচড়াও করেনি। এমন স্বাভাবিক থাকাটা ভয়ের।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘বুলেট ধেয়ে চলার মধ্যে রিওর বাসিন্দাদের এমন চুপচাপ থাকায় আমি মুগ্ধ।’

ভাস্কোয় ফেরার পর একাদশে নিয়মিত হয়েছেন কুতিনিও। ভালো খেললেও অবশ্য নিজের সেরা ফর্মে এখনো ফিরতে পারেননি। ক্লাবটির কোচ ফাবিও কারিল্লে কুতিনিওকে স্থায়ীভাবে ধরে রাখবেন কি না, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলেননি। গত মার্চে কারিল্লে বলেছিলেন, ‘আমরা অপেক্ষা করব। টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে ঠিক আছে (ধরে রাখার মতো)। কিন্তু আর্থিক দিকেও তাকাতে হবে।’

তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘মিরর’ জানিয়েছে, কুতিনিওর ভিলায় না ফেরার সম্ভাবনাই বেশি। ক্লাবটির হয়ে ৪৩ ম্যাচে ৬ গোল করানোর পাশাপাশি ৩টি গোল করিয়েছেন কুতিনিও। তাঁর সেরা সময় কেটেছে লিভারপুলে, যেখানে ২০১ ম্যাচে ৫৪ গোলের পাশাপাশি ৪৪টি গোলও করিয়েছেন। তবে কিছু জিততে পারেননি। খেলেছিলেন ২০১৫–১৬ মৌসুমে লিগ কাপ ও ইউরোপা লিগের ফাইনালে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দেশে স্টারলিংকের পার্টনার কারা, গ্রাহক হবেন কীভাবে

স্যাটেলাইট-ভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা ‘স্টারলিংক’ আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশে যাত্রা শুরু করেছে। তিন মাস পরীক্ষামূলক বাণিজ্যিক কার্যক্রম চালাবে ইলন মাস্কের কোম্পানিটি। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য আপাতত দুটি প্যাকেজ চালু করেছে।

ইন্টারনেট সংযোগ পেতে ওয়েবসাইট থেকে লজিস্টিক সহযোগিতা ও পছন্দের প্যাকেজ কিনতে হবে। এই লজিস্টিক সহযোগিতা দেবে ছয় থেকে সাতটি দেশীয় প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি গ্রাউন্ড স্টেশন ঘিরে নেটওয়ার্ক তৈরিতেও দেশীয় উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে ফাইবার অপটিক সেবা নিচ্ছে স্টারলিংক।

সংযোগ নিতে অর্ডার যেভাবে
বাংলাদেশের গ্রাহকরা সরাসরি স্টারলিংকের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে অর্ডার করতে হবে। নিজের ঠিকানায় পছন্দের কিট এককালীন ৪৭ হাজার টাকায় অর্ডার করতে হবে। এর সঙ্গে ২ হাজার ৮০০ টাকা যুক্ত হবে শিপিং ও হ্যান্ডেলিং চার্জ হিসেবে। একটা সাধারণ কিটে ডিশ, ওয়াইফাই রাউটার, মাউন্টিং ট্রাইপড ও ক্যাবল থাকে। এরপর সংযোগ খরচ। তিন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে এই কিট গ্রাহকের কাছে পৌঁছাবে।

নতুন দুই প্যাকেজ সম্পর্কে স্টারলিংক জানিয়েছে, রেসিডেনশিয়াল প্যাকেজ কিনতে খরচ হবে ৬ হাজার টাকা। আর রেসিডেনশিয়াল লাইটের জন্য মাসে খরচ হবে চার হাজার ২০০ টাকা। এ ছাড়া ঘুরতে গেলে অথবা চলন্ত অবস্থায় স্টারলিংক সংযোগ পেতে রোম নামের প্যাকেজে কিনতে হবে। যার জন্য প্রতি মাসে দিতে হবে নূন্যতম খরচ ৬ হাজার টাকা। রোমের ছয় হাজার টাকার প্যাকেজে ৫০ জিবি পর্যন্ত ডেটা পাওয়া যাবে। আর আন-লিমিটেড ডেটার জন্য নিতে হবে ১২ হাজার টাকার রোম আন-লিমিটেড প্যাকেজ।

ওয়েবসাইটে আরও বলা হয়েছে, গ্রাহক স্টারলিংক সংযোগ ৩০ দিন ব্যবহার করার পর সেবা ‘সন্তোষজনক’ মনে করলে সম্পূর্ণ টাকা ফেরত পাবে।

ব্যবসায়িক অংশীদার কারা
গ্রাউন্ড স্টেশন থকে আশেপাশের টাওয়ার পর্যন্ত নেটওয়ার্ক তৈরিতে প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সহযোগিতা নেওয়া হবে এনটিটিএন কোম্পানি ফাইবার এটহোম থেকে। দেশের অভ্যন্তরে গ্রাহকদের ভবনে স্টারলিংক কিট স্থাপনসহ অন্যান্য লজিস্টিক সহযোগিতার জন্য ৬-৭টি কোম্পানির সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে। এরমধ্যে দেশের তিন বেসরকারি মোবাইল অপারেটর– গ্রামীণ, রবি ও বাংলালিংক রয়েছে বলে জানা গেছে।

স্টারলিংককে স্থানীয় গেটওয়ে ব্যবহার বাংলাদেশে সেবা দিতে হবে। এজন্য একাধিক আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট গেটওয়ের (আইআইজি) সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে।

ভাগাভাগি করে ব্যবহার
একটা ‘ডিভাইস’ থেকে ২০ থেকে সর্বোচ্চ ৫০ মিটার পর্যন্ত ইন্টারনেট পাওয়া যাবে। এই সীমার মধ্যে একাধিক ব্যক্তি মিলে একটা কিট কিনে তা ভাগাভাগি করে ব্যবহার করতে পারবে।

প্রসঙ্গত স্টারলিংক বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করছে ২০২১ সাল থেকে। সে বছর ও ২০২২ সালে তারা বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সঙ্গে যোগাযোগ করে। তবে সে সময় সরকার থেকে কোনো সাড়া পায়নি। এরপর ২০২৩ সালের জুলাইয়ে বাংলাদেশে স্টারলিংকের প্রতিনিধিরা আসেন এবং তৎকালীন মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। তখন স্টারলিংকের প্রযুক্তি এনে পরীক্ষাও করা হয়। তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার স্টারলিংকের বাংলাদেশে প্রবেশ নিয়ে আলোচনা শুরু করে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে বিশেষ উদ্যোগ নিয়ে দ্রুততম সময়ে লাইসেন্স দিয়ে স্টারলিংককে দেশে ব্যবসার সুযোগ করে দেয়, যা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। গত ২৯ মার্চ স্টারলিংককে বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ নিবন্ধন দেয়। বিটিআরসি ১০ বছরের জন্য লাইসেন্স দেয় ২৯ এপ্রিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আপত্তিকর ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে ২১ ভরি স্বর্ণালঙ্কার হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
  • কৌতূহলে গলায় ফাঁস, প্রাণ গেল কিশোরের
  • পুতিন যা চান, ট্রাম্প তাঁকে সেটাই দিলেন
  • চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে নুসরাত ফারিয়া
  • অমিত-সোহানের ব্যাটে বাংলাদেশ এ দলের লড়াই 
  • ছিলেন ভিক্ষুক, হয়েছেন চিকিৎসক
  • নজিরবিহীন পরিণতির শিকার দিল্লি
  • ভিক্ষুক থেকে ৩১ বছর বয়সে হলেন চিকিৎসক
  • দেশে স্টারলিংকের পার্টনার কারা, গ্রাহক হবেন কীভাবে