গুলির শব্দে থামল কুতিনিওর সাক্ষাৎকার
Published: 23rd, May 2025 GMT
ফিলিপে কুতিনিওকে মনে আছে? সেই যে ২০১৩ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত লিভারপুলে আলো ছড়ানো ব্রাজিলিয়ান অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার। বার্সেলোনায় যোগ দেওয়ার সময় যাঁর জন্য কেঁদেছিলেন লিভারপুলের সমর্থকেরা। ৩২ বছর বয়সী কুতিনিও এবার আলোচনায় অন্য কারণে। ক্লাবের অনুশীলন মাঠে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম ‘গ্লোবো টিভি’কে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন কুতিনিও। এ সময় মাঠের পাশে মুহুর্মুহু গুলির শব্দে ভেস্তে যায় কুতিনিওর সাক্ষাৎকার।
আরও পড়ুনরিয়ালের হয়ে যে ইতিহাস গড়ে বিদায় নিচ্ছেন আনচেলত্তি২ ঘণ্টা আগেবার্সা ছেড়ে ২০২২ সালে অ্যাস্টন ভিলায় যোগ দেওয়ার পর কাতারি ক্লাব আল দুহাইলে গত মৌসুম ধারে খেলেন কুতিনিও। গত বছর সেখান থেকে আবারও ধারে ব্রাজিলের ক্লাব ভাস্কো দ্য গামায় ফেরেন বার্সার হয়ে লা লিগা ও বায়ার্ন মিউনিখের হয়ে বুন্দেসলিগা জয়ী এ ফুটবলার। ভাস্কোর অনুশীলন মাঠ মোয়াকির বারবোসা ট্রেনিং গ্রাউন্ডে গ্লোবো টিভিকে সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন কুতিনিও। কথা বলার মাঝপথে হঠাৎ করেই গুলির শব্দ ভেসে আসে। কুতিনিও একটু থেমে যান এরপর মুখে হাসি ফুটিয়ে মজাও করেন। তাঁর দুই ক্লাব সতীর্থ লিও জার্দিম ও নুনো মোরেইরাও তখন সাক্ষাৎকার দিচ্ছিলেন। তাঁরা গুলির শব্দে প্রথমে একটু হতচকিত হয়ে গেলেও নিজেদের সামলে নিয়ে হেসে ফেলেন।
গ্লোবো জানিয়েছে, ভাস্কোর এই অনুশীলন মাঠের পাশের অঞ্চলটির নাম সিদাদে দে দেউস। সাম্প্রতিক বছরগুলোয় সেখানে অপরাধপ্রবণতা বেড়েছে। গত সোমবার ব্রাজিলের সিভিল পুলিশের এলিট ফোর্সের কর্মকর্তা হোসে আন্তোনিও লৌরেন্তো সিদাদে দে দেউসে অভিযান চালাতে গিয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। এরপর সেখানে পুলিশি অভিযানে গুলির শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছে ব্রাজিলের সংবাদমাধ্যম। ভাস্কোর স্টাফরা জানিয়েছেন, হেলিকপ্টার ও গুলির শব্দ সেখানে স্বাভাবিক ঘটনা। ২০২০ সালে এই অনুশীলন মাঠ চালু করে ভাস্কো, যেখানে নিরাপত্তাব্যবস্থাও বেশ ভালো।
আরও পড়ুনটেস্ট ছাড়ার ঘোষণা ম্যাথুসের, শেষ টেস্ট বাংলাদেশের বিপক্ষে৩ ঘণ্টা আগেকুতিনিও, গোলকিপার জার্দিম ও উইঙ্গার মোরেইরার এই সাক্ষাৎকার দেওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর মন্তব্য করেছেন নেটিজেনরা। একজনের মন্তব্য, ‘সবচেয়ে অবিশ্বাস্য ব্যাপার হলো (গুলির শব্দ শুনে) কেউ একটু নড়াচড়াও করেনি। এমন স্বাভাবিক থাকাটা ভয়ের।’ আরেকজন লিখেছেন, ‘বুলেট ধেয়ে চলার মধ্যে রিওর বাসিন্দাদের এমন চুপচাপ থাকায় আমি মুগ্ধ।’
ভাস্কোয় ফেরার পর একাদশে নিয়মিত হয়েছেন কুতিনিও। ভালো খেললেও অবশ্য নিজের সেরা ফর্মে এখনো ফিরতে পারেননি। ক্লাবটির কোচ ফাবিও কারিল্লে কুতিনিওকে স্থায়ীভাবে ধরে রাখবেন কি না, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত করে কিছু বলেননি। গত মার্চে কারিল্লে বলেছিলেন, ‘আমরা অপেক্ষা করব। টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে ঠিক আছে (ধরে রাখার মতো)। কিন্তু আর্থিক দিকেও তাকাতে হবে।’
তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ‘মিরর’ জানিয়েছে, কুতিনিওর ভিলায় না ফেরার সম্ভাবনাই বেশি। ক্লাবটির হয়ে ৪৩ ম্যাচে ৬ গোল করানোর পাশাপাশি ৩টি গোল করিয়েছেন কুতিনিও। তাঁর সেরা সময় কেটেছে লিভারপুলে, যেখানে ২০১ ম্যাচে ৫৪ গোলের পাশাপাশি ৪৪টি গোলও করিয়েছেন। তবে কিছু জিততে পারেননি। খেলেছিলেন ২০১৫–১৬ মৌসুমে লিগ কাপ ও ইউরোপা লিগের ফাইনালে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
চিরসবুজ অভিনেত্রী ফরিদা আক্তার ববিতা। ১৯৫৩ সালের ৩০ জুলাই বাগেরহাটে জন্মগ্রহণ করেন। আজ ৭১ বছর পূর্ণ করলেন সত্তরের দশকের অন্যতম সেরা এই অভিনেত্রী। জন্মদিন উপলক্ষে গত বছর একটি সাক্ষাৎকার দেন ববিতা। এ আলাপচারিতায় জীবনবোধ নিয়ে কথা বলেন এই শিল্পী।
জীবন নিয়ে ববিতা বলেন, “যে জীবন মানুষের কোনো উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়। মরে গেলে আমার ছেলে অনিক আমাকে অনেক মিস করবে। একমাত্র ছেলে তো, ওর কথা খুব ভাবি। ভক্তরা আমাকে কতটুকু মনে রাখবেন, জানি না।”
একটি ঘটনা উল্লেখ করে ববিতা বলেন, “এই জীবনে একটা জিনিস খুব ভালো লেগেছে। অনেক শিল্পীকে তা দেওয়া হয়নি, হোক তা ভারতে কিংবা বাংলাদেশ। ২০২৩ সালে আমাকে যুক্তরাষ্ট্রের ডালাসের মেয়র আজীবন সম্মাননা দিয়েছেন। সেদিন আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, ৬ আগস্টকে ‘ববিতা ডে’ ঘোষণা করেছেন। তার মানে আমি বেঁচে না থাকলেও দিনটা উদযাপিত হবে। এটা আমার ভীষণ ভালো লেগেছে।”
আরো পড়ুন:
বধূবেশে অভিষেক কন্যা
জসীম পুত্রের মৃত্যু: ভাই রাহুলের আবেগঘন পোস্ট
মৃত্যুর কথা স্মরণ করে ববিতা বলেন, “তবে কবরে একা থাকার কথা ভাবলে হঠাৎ কেমন যেন লাগে। আরেকটা বিষয়, আমি অনেক দিন বেঁচে থাকতে চাই না। অসুখ–বিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না। আমি কারো বোঝা হয়ে বাঁচতে চাই না।”
কারণ ব্যাখ্যা করে ববিতা বলেন, “চারপাশে অনেক আত্মীয়স্বজনকে দেখেছি, দিনের পর দিন বিছানায় অসুস্থ হয়ে কষ্ট পেয়েছেন। যারা একা থাকেন, তাদের জন্য এই কষ্ট যেন আরো বেশি। তাই সব সময় এটা ভাবি, কখনোই যেন অন্যের বোঝা না হই।”
সিনেমায় অভিনয়ের ইচ্ছা ববিতার কখনো ছিল না। পরিচালক জহির রায়হানের ‘সংসার’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেলেও প্রথমে রাজি হননি। পরে মা আর বোনের পীড়াপীড়িতে অভিনয় করেন। তখন তিনি ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়েন। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারফ্লপ হয়।
পরিচালক জহির রায়হান আবারো ‘জ্বলতে সুরজ কে নিচে’ উর্দু সিনেমার নায়িকা চরিত্রে অভিনয় করতে বললে প্রথমে রাজি হননি ববিতা। তখন বয়স মাত্র ১৪। কিন্তু সিনেমার বেশির ভাগ শুটিং হওয়ার পরও শিল্পীদের শিডিউল মেলাতে না পারায় সিনেমাটি আর শেষ করা হয় না।
এরপর জহির রায়হান ববিতাকে নিয়ে বাংলা সিনেমা বানান। মুক্তির পর সিনেমাটি সুপারহিট হয়। অভিনয় করার ইচ্ছা না থাকলেও সিনেমা হিট হওয়ায় আবারো ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান তিনি। এরপর ‘স্বরলিপি’, ‘পিচঢালা পথ’, ‘টাকা আনা পাই’ সিনেমায় জুটি বাঁধেন রাজ্জাক-ববিতা। প্রতিটি সিনেমাই সুপারহিট।
ঢাকা/শান্ত