ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালাচ্ছে ইসরায়েল
Published: 28th, May 2025 GMT
ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বুধবার ফিলিস্তিনিদের ভিড়ের উপর গুলি চালালে কমপক্ষে একজন বেসামরিক লোক নিহত এবং ৪৮ জন আহত হয় বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাজায় খাদ্য সরবরাহের জন্য ইসরায়েলের নির্বাচিত দলটি তাদের বিতরণ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এরপরেই ইসরায়েলি সেনারা ফিলিস্তিনিদের ভিড়ের উপর গুলি চালায়। এ ঘটনায় একজন বেসামরিক লোক নিহত এবং ৪৮ জন আহত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ বিতরণ স্থানের চারপাশের বেড়া ভেঙে যাওয়ার পর ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালাতে শুরু করে। একটি ইসরায়েলি সামরিক হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর শব্দ পাওয়া গেছে। একটি ভিডিওতে, নারী ও শিশুসহ আতঙ্কিত বেসামরিক লোকদের ত্রাণ বিতরণ স্থান থেকে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে।
ফিলিস্তিনি অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের প্রধান অজিত সুংহাই জানিয়েছেন, আহতদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কমপক্ষে একজন নিহত হয়েছে।
ইসরায়েল মার্চ মাসে গাজা অবরোধ করে এবং ত্রাণের প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়। চলতি মাসের শুরুতে একটি বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার পাঁচ লাখ মানুষ অনাহারের মুখোমুখি।
১১ সপ্তাহের অবরোধ এবং ইসরায়েলের অব্যাহত কঠোর অবরোধের ফলে গাজার বেশিরভাগ মানুষ চরম ক্ষুধার্ত। বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের চিকিৎসক এবং সাহায্য কর্মীরা কয়েক মাস ধরে বলে আসছেন, অপুষ্টি ছড়িয়ে পড়ছে, রান্নার গ্যাসের অভাবে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি পরিচালিত বেকারিগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং দোকান ও বাজারে খাবারের দাম বেড়ে যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে গত সপ্তাহে গাজায় ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেয় ইসরায়েল। তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তারা পূর্ণ নয়, বরং সীমিত পরিসরে ত্রাণ প্রবেশ করতে দেবেন।
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য
এছাড়াও পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন নিহত হয়েছেন। এতে একজন শিক্ষকসহ হোটেলের দুই কর্মচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। আহত তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে উভয় পক্ষের লোকজন এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
নিহত ব্যক্তির নাম শিপন মিয়া (৩০)। তিনি বড়িকান্দি ইউনিয়নের নুরজাহানপুর গ্রামের মোন্নাফ মিয়া ওরফে মনেক মিয়ার ছেলে। নবীনগর থানা সূত্রে জানা গেছে, ওই দুজনের বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ২০টি মামলা আছে।
গুলিবিদ্ধ আহত ব্যক্তিরা হলেন বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের বাসিন্দা এমরান হোসেন (৩৮) এবং হোটেলের দুই কর্মচারী—উপজেলার আলমনগর গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে ইয়াসিন মিয়া (২০) ও চরলাপাং গ্রামের রশিদ মিয়ার ছেলে নুর আলম (১৮)। এমরান উপজেলার শ্যামগ্রামের মোহিনী কিশোর স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক। তাঁর ভাই ঢাকায় কর্মরত পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) বিল্লাল হোসেন।
বড়িকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মনেক ডাকাত এলাকাটা শেষ করে ফেলেছেন। তাঁর কারণেই এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়েছে। মনেক ডাকাতদের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে। গুলিতে মনেক ডাকাতের ছেলে নিহত হয়েছেন।
স্থানীয় লোকজন, প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় মোন্নাফ মিয়া ও তাঁর ছেলে শিপনের দীর্ঘদিন ধরে একক প্রভাব ছিল। তাঁদের সঙ্গে একই এলাকার থোল্লাকান্দি গ্রামের মিস্টার মিয়ার ছেলে আরাফাত মিয়ার বিরোধ চলছিল। শনিবার রাত আনুমানিক নয়টার দিকে বড়িকান্দি গণি শাহ মাজার বাজারের একটি হোটেলে শিপন মিয়া আড্ডা দিচ্ছিলেন। এ সময় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধের জেরে আরাফাতের নেতৃত্বে সশস্ত্র একটি দল হোটেলে ঢুকে গুলি চালায়। এতে শিপনসহ হোটেলের দুই কর্মচারী ইয়াসিন ও নুর আলম গুলিবিদ্ধ হন। গুলির শব্দে বাজারজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলার পর আরাফাত ও তাঁর সহযোগীরা দ্রুত পালিয়ে যান।
শিপনের গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর নুরজাহানপুরে পৌঁছালে মোন্নাফ মিয়ার নেতৃত্বে একদল লোক গণি শাহ মাজারের অদূরে তালতলায় এমরান হোসেনের কার্যালয়ে হামলা চালান। সেখানে এমরান গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাঁরা থোল্লাকান্দি গ্রামে হামলা চালিয়ে একাধিক বাড়িঘর ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। রাতে ঘটনাস্থলে অভিযান চালালেও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। কারণ, উভয় পক্ষের লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন। সংঘর্ষ এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
নবীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, গুলিবিদ্ধ কাউকেই শনিবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয়নি। তাঁদের হয়তো অন্যত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, শিপনের ওপর হামলাকারী আরাফাত থোল্লাকান্দি গ্রামের এমরান হোসেনের আত্মীয়। এ কারণেই এমরানের কার্যালয়ে গিয়ে হামলা এবং তাঁকে গুলি করা হয়েছে।
নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহিনুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নিহত শিপন ডাকাত দলের সদস্য ছিলেন। শিপন ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতিসহ বিভিন্ন অভিযোগে অন্তত ২০টি মামলা আছে। ওই ঘটনায় একজন শিক্ষকসহ তিনজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনার পর থেকে সবাই পলাতক। তাই কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।