ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। বুধবার  ফিলিস্তিনিদের ভিড়ের উপর গুলি চালালে কমপক্ষে একজন বেসামরিক লোক নিহত এবং ৪৮ জন আহত হয় বলে জানিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।

স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গাজায় খাদ্য সরবরাহের জন্য ইসরায়েলের নির্বাচিত দলটি তাদের বিতরণ কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। এরপরেই ইসরায়েলি সেনারা ফিলিস্তিনিদের ভিড়ের উপর গুলি চালায়। এ ঘটনায় একজন বেসামরিক লোক নিহত এবং ৪৮ জন আহত হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার ফিলিস্তিনিদের জন্য ত্রাণ বিতরণ স্থানের চারপাশের বেড়া ভেঙে যাওয়ার পর ইসরায়েলি বাহিনী গুলি চালাতে শুরু করে। একটি ইসরায়েলি সামরিক হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালানোর শব্দ পাওয়া গেছে। একটি ভিডিওতে, নারী ও শিশুসহ আতঙ্কিত বেসামরিক লোকদের ত্রাণ বিতরণ স্থান থেকে পালিয়ে যেতে দেখা গেছে।

ফিলিস্তিনি অঞ্চলের জন্য জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিসের প্রধান অজিত সুংহাই জানিয়েছেন, আহতদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। 

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কমপক্ষে একজন নিহত হয়েছে।

ইসরায়েল মার্চ মাসে গাজা অবরোধ করে এবং ত্রাণের প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়। চলতি মাসের শুরুতে একটি বিশ্বব্যাপী ক্ষুধা পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার পাঁচ লাখ মানুষ অনাহারের মুখোমুখি।

১১ সপ্তাহের অবরোধ এবং ইসরায়েলের অব্যাহত কঠোর অবরোধের ফলে গাজার বেশিরভাগ মানুষ চরম ক্ষুধার্ত। বিধ্বস্ত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের চিকিৎসক এবং সাহায্য কর্মীরা কয়েক মাস ধরে বলে আসছেন, অপুষ্টি ছড়িয়ে পড়ছে, রান্নার গ্যাসের অভাবে জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি পরিচালিত বেকারিগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এবং দোকান ও বাজারে খাবারের দাম বেড়ে যাচ্ছে।

আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে গত সপ্তাহে গাজায় ত্রাণ প্রবেশের অনুমতি দেয় ইসরায়েল। তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, তারা পূর্ণ নয়, বরং সীমিত পরিসরে ত্রাণ প্রবেশ করতে দেবেন।

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন

‘“এ সকল নষ্ট মাইয়াদের জন্য বাসের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। যা যা বাস থেকে নেমে যা নষ্ট মাইয়াছেলে”—বাস কন্ডাক্টরের এই মন্তব্য শোনার পর নিজের ওপর আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারিনি।’ কথাগুলো বলছিলেন বাসে হেনস্তার শিকার ওই তরুণী। আজ প্রথম আলোর সঙ্গে মুঠোফোনে দীর্ঘ আলাপে তিনি সেদিনের ঘটনার আদ্যোপান্ত জানান। বললেন, ঘটনার সময় বাসে একজন মানুষও প্রতিবাদ না করায় কষ্ট পেয়েছেন। যিনি এ ঘটনার ভিডিও করেছিলেন, তাঁর কাছ থেকেও কটু কথা শুনতে হয়েছিল। এমনকি তিনি বাস থেকে নামতে গিয়েও পারছিলেন না। যতবার নামার চেষ্টা করেন, চালক বাস টান দিচ্ছিলেন।

তবে দৃঢ়তার সঙ্গে এই তরুণী জানিয়েছেন, এই হেনস্তার ঘটনা তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। তিনি প্রতিবাদ করে যাবেন।

জুতা হাতে বাস কন্ডাক্টরের আচরণের প্রতিবাদ জানানোর ওই ঘটনা ঘটে গত ২৭ অক্টোবর। বাসের এক ব্যক্তি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করলে তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবার রমজান পরিবহন নামের বাসের হেনস্তাকারী কন্ডাক্টর নিজাম উদ্দিনকে (৪৫) গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তরুণীর এজাহারের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্র বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার মামলা করে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় (যৌন নিপীড়নের অভিযোগ) মামলাটি করা হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছিল, বাসের সামনের আসনে বসা এক ব্যক্তির কোনো একটি মন্তব্য নিয়ে এক তরুণী তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়লেন। তিনি তেড়ে যান লোকটির দিকে। ওই সময় লোকটি আসন ছেড়ে উঠে তরুণীকে চড় মারেন। একপর্যায়ে দুজন জুতা খুলে দুজনের দিকে তুলে ধরেন। সে সময় ওই ব্যক্তি তরুণীকে আঘাত করেন এবং ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ওই ব্যক্তি এরপর বারবার তরুণীর গায়ে ধাক্কা মারেন ও আঘাত করার চেষ্টা করেন। তরুণী চিৎকার করে বলছিলেন, ‘তুই আমার পোশাক তুলে কেন কথা বলবি?’ এ সময় সামনের দিকে থাকা দুই নারী ও একজন পুরুষ যাত্রী ছাড়া আর কেউ আঘাত করা ব্যক্তিটিকে থামানোর চেষ্টা করেননি, প্রতিবাদ করেননি।

ওই তরুণী প্রথম আলোকে জানান, তাঁর মা–বাবা ও ভাই–বোনরা চাঁদপুরে থাকেন। বাবার দোকান রয়েছে। ভাই–বোনদের মধ্যে তিনি সবার বড়। চাঁদপুর থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর এখন ঢাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়ছেন। পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি বাবাকে সহায়তা করতে নিজেও টুকটাক কাজ করেন। হাতের কাজ, ছবি আঁকার কাজ করেন, টেলিভিশন চ্যানেলে মাঝেমধ্যে কিছু অনুষ্ঠান উপস্থাপনাও করেন। রাজধানীর বছিলা এলাকায় কয়েকজন মিলে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকেন।

‘শুরুতে আমি উত্তেজিত হইনি’

সেদিনের ঘটনা বলতে গিয়ে তরুণী বলেন, তিনি মুঠোফোন ঠিক করতে হাতিরপুলে মোতালিব প্লাজায় গিয়েছিলেন। বাসায় ফেরার জন্য সেখান থেকে ধানমন্ডি–১৫ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে আসেন এবং রমজান পরিবহনের ওই বাসটিতে ওঠেন। তখন বেলা দুইটা কি আড়াইটা। তিনি বাসে উঠে মাঝামাঝি জায়গায় একটি আসনে বসেন। বাস কন্ডাক্টর তাঁর কাছে এসে ভাড়া চাইলে ‘স্টুডেন্ট’ (শিক্ষার্থী) জানিয়ে তিনি অর্ধেক ভাড়া দেন। তরুণী দাবি করেন, বাস কন্ডাক্টর তখন বলে ওঠেন, ‘চেহারা আর পোশাক দেখলে তো মনে হয় না স্টুডেন্ট!’ তখন তিনি রাগ হলেও কন্ডাক্টরকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করে বলেন, ‘স্টুডেন্টের সঙ্গে পোশাকের কী সম্পর্ক? আপনি এসব কী ধরনের কথা বলছেন? ওই সময় কিছুটা কথা-কাটাকাটি হয়। শুরুতে আমি উত্তেজিত হইনি।’

রাজধানীর বছিলায় বাসের মধ্যে পোশাক নিয়ে কটূক্তির সাহসী প্রতিবাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর প্রশংসা করে এমন চিত্র ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বগুড়ায় বাড়িতে হাতবোমা তৈরির সময় বিস্ফোরণ, আহত একজন গ্রেপ্তার
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইবিএতে ফুলটাইম ও পার্টটাইম এমবিএ, সিজিপিএ ২.৫০ লাগবে
  • আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত কমপক্ষে ৮, আহত দেড় শতাধিক
  • ‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’
  • যদি ঠিক পথে থাকো, সময় তোমার পক্ষে কাজ করবে: এফ আর খান
  • বিবাহবিচ্ছেদ ও খোরপোষ নিয়ে ক্ষুদ্ধ মাহি
  • ফতুল্লায় দুই ট্রাকের মাঝে পড়ে যুবকের মৃত্যু
  • ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে ২০ মামলার আসামি নিহত, গুলিবিদ্ধ ৩
  • কেনিয়ায় ভূমিধসে নিহত ২১, নিখোঁজ ৩০
  • নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন