Samakal:
2025-09-17@22:30:48 GMT

বৃষ্টিতে গলে পড়ছে ভবনের ইট

Published: 1st, June 2025 GMT

বৃষ্টিতে গলে পড়ছে ভবনের ইট

টোকা দিলে খসে পড়ছে পলেস্তারা। কাঁচা ইটের গাঁথুনি দেওয়ায় বৃষ্টির পানিতে গলে পড়ছে। দেয়ালের উচ্চতা ১০ ফুট দেওয়ার কথা; কিন্তু দেওয়া হয়েছে সাড়ে ৯ ফুট। অনিয়ম ধরিয়ে দিলেই অশালীন আচরণ করেন ঠিকাদার আবু জাফর তালুকদার। 
অনিয়মের এ অভিযোগ করেন পটুয়াখালীর বাউফলের দাসপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান মৃধা ও পৌরশহরের শেরেবাংলা সড়কের মৃত আব্দুল মন্নান সিকদারের ছেলে মো.

রিয়াজ সর্দার। বীর নিবাসের সুফলভোগীদের পক্ষে গত ২৪ মার্চ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর এ অভিযোগ করেন তারা।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ইউএনও সরেজমিন নির্মাণাধীন বীর নিবাস পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি বেশ কিছু অনিয়মের প্রমাণ পান। এর মধ্যে রয়েছে প্রকল্পের অনুমোদিত প্রাক্কলন ব্যয়ে স্বচ্ছতার অভাব, নকশা পরিবর্তন ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার। এরপর ২৩ এপ্রিল অনিয়মের বিষয়ে তিন কার্যদিবসের মধ্যে ঠিকাদারকে জবাব দিতে বলা হয়। ঠিকাদার নোটিশের জবাব না দিয়ে কাজ বন্ধ করে ফেলে রেখেছেন। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারগুলোকে। 
তালুকদার এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবু জাফর বলেন, দরপত্র অনুযায়ী কাজ করছি। এরপরও অভিযোগ করা হচ্ছে। নোটিশের জবাব কেন দেননি– প্রশ্ন করলে উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান। 
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় অসচ্ছল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের থাকার জন্য ২ কোটি ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৫টি বাড়ি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। কাজটি পায় মেসার্স তালুকদার এন্টারপ্রাইজ। কাজ শুরু হয় ২০২৫ সালের ২৫ মার্চ। মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ৩০ জুন। কাজের অগ্রগতি মাত্র ৪৫ ভাগ। 
দরপত্র অনুযায়ী বীর নিবাসটি দৈর্ঘে ৩২ ফুট এবং প্রস্থে ২৪ ফুট হওয়ার কথা। ৪ ফুট ১২ ইঞ্চি ভিটির ওপর ১০ ফুট উঁচু করে ইটের দেয়ালের ওপর রড দিয়ে ছাদ ঢালাই দেওয়া হবে। প্রতিটি ঘরের জন্য ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। বরাদ্দ পেয়ে ঠিকাদার আবু জাফর প্রথমেই পৌর শহরের মুক্তিযোদ্ধা মৃত আবদুল মান্নান সর্দার ও দাসপাড়া গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান মৃধার বাড়িতে কাজ শুরু করেন। এর আগে মালপত্র পরিবহন বাবদ ১০ হাজার টাকা করে নেন। টাকা দেওয়ার পর তাদের পুরোনো টিনের ঘর ভেঙে ইটের গাঁথুনি দেওয়া শুরু করেন। ছয় বস্তা বালুতে এক বস্তা সিমেন্ট দেন। ব্যবহার করেন দুই নম্বর ইট। বালুর মানও ছিল খুবই খারাপ। এভাবে কাজ করায় গাঁথুনি ঠিকমতো হয়নি। বৃষ্টি হলেও ইট গলে হলুদ পানি বের হচ্ছে। অনিয়মে বাধা দিলে ক্ষিপ্ত হয়ে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান রিয়াজ সর্দারের সঙ্গে ঠিকাদার অশালীন আচরণ করেন। একপর্যায়ে কাজ বন্ধেরও হুমকি দেন।
মো. রিয়াজ জানান, কাজ শুরুর আগে ঠিকাদার ট্রলি ভাড়া বাবদ ১০ হাজার টাকা নেন। এরপরও নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে কাজ করছেন। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, সরকার ঘর দিয়েছে। কিন্তু সেই ঘরে শান্তিতে থাকতে পারব কিনা জানি না। সব মালপত্র নিম্নমানের। জানানোর পর ঠিকাদার আজেবাজে কথা কয়। কাজ ফেলে চলে যাবে বলে হুমকি দেয়।
দাসপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান মৃধা বলেন, তাদের জন্য বরাদ্দ ওই ঘরের নির্মাণকাজে নিম্নমানের ইট, বালুসহ অন্যান্য নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করা হয়েছে। বুঝতে পেরে তিনবার ইট পরিবর্তন করেও ঠিক করতে পারিনি। দেয়াল থেকে ভিটির উচ্চতা কম। ঢালাইয়ের রড কত মিলি দেওয়া হয়েছে, ফোনে ঠিকাদারকে জিজ্ঞাসা করলে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘আপনার পাওয়ার দেহি বাড়ছে, বেশি ট্যাং ট্যাং করেন’– এই বলে ফোন কেটে দেন। 
উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা মস্তফা মৃদুল মুরাদ জানান, কাজের মান নিম্নমানের হওয়ায় তার কাজ বন্ধ করে দিয়েছি। 
মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের পটুয়াখালী জেলার দায়িত্বে থাকা উপপ্রকৌশলী আবদুর রহমান বলেন, অভিযোগ পেয়ে কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, অভিযোগের সত্যতা পেয়ে ঠিকাদারকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইট কর মকর ত ক জ বন ধ প রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের

ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।

এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।

এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।

সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।

আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।

শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্‌ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।

পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আগামী সরকারের মন্ত্রীদের জন্য গাড়ি কেনার অতি আগ্রহের কারণ কী, প্রশ্ন টিআইবির
  • মুসলিম পরিবারে শিশুর নিরাপত্তা
  • পুরোপুরি বিলুপ্তির পর উগান্ডায় আবার ফিরল গন্ডার
  • ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের