জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি গায়ানা, যা বললেন রাষ্ট্রদূত
Published: 3rd, June 2025 GMT
জুন মাসের জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব নিয়েছে গায়ানা। দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি সোমবার (২ জুন) গ্রিসের কাছ থেকে এ দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। খবর তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলুর।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী ও অস্থায়ী ১৫ সদস্যদেশ প্রতি মাসে পালাক্রমে সভাপতির দায়িত্ব পেয়ে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় গায়ানা জুন মাসের জন্য সভাপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত গায়ানার রাষ্ট্রদূত ক্যারোলিন রডরিগেস-বারকেট এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি হিসেবে দেশটি বিশ্বে চলমান সশস্ত্র সংঘাতে শিশুদের সুরক্ষা, সংঘাত প্রতিরোধের পাশাপাশি শান্তি ও নিরাপত্তার উপর জোর দেবে।
আরো পড়ুন:
ত্রাণ বিতরণের সময় ফিলিস্তিনিদের হত্যা: স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জাতিসংঘের
ফিলিস্তিনকে ‘পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র’ হিসেবে স্বীকৃতি দিলো আইএলও
রডরিগেস-বারকেট বলেন, “নিরাপত্তা পরিষদ ১৯ জুন দারিদ্র্য, অনুন্নয়ন এবং সংঘাতের উপর একটি উচ্চ-স্তরের উন্মুক্ত বিতর্ক আয়োজন করবে। জাতিসংঘ ও আফ্রিকান ইউনিয়নের ব্রিফারদের অংশগ্রহণে বৈঠকে গায়ানার প্রেসিডেন্ট ড.
তিনি আরো বলেন, “নিরাপত্তা পরিষদের অন্যান্য বৈঠকে সিরিয়া, ইরাক, মধ্য আফ্রিকা, সুদান, লিবিয়া এবং ইয়েমেন ইস্যুতে জোর দেওয়া হবে, পাশাপাশি সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র ও পশ্চিম তীরে অবৈধ ইসরায়েলি বসতি স্থাপনের মতো প্রধান বিষয়গুলোতেও আলোকপাত করা হবে।”
নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনি আত্মনিয়ন্ত্রণের সমর্থনে গায়ানার অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “নিরাপত্তা পরিষদে আসার অনেক আগেই আমরা ফিলিস্তিনের ইস্যুতে সোচ্চার ছিলাম।”
রড্রিগেজ-বারকেট আরো বলেন, “আপনারা জানেন, গায়ানা ফিলিস্তিনি জনগণের অবিচ্ছেদ্য অধিকার অনুশীলন কমিটির অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, তাই এর পক্ষে আমাদের সমর্থন আমাদের বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে যে- দখলদারিত্ব ভুল, উপনিবেশ স্থাপন ভুল এবং ফিলিস্তিনের জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণ অবশ্যই প্রয়োগ করা উচিত এবং এটিই আমরা নিরাপত্তা পরিষদে এনেছি।”
ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতির বিষয়ে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের আসন্ন সম্মেলনের বিষয়ে তিনি জোর দিয়ে বলেন, “যদি একটি জাতির মাতৃভূমি না থাকে তাহলে কোনো নিরাপত্তার নিশ্চয়তা থাকতে পারে না এবং সহিংসতার এই চক্র চলতেই থাকবে।”
“তাই আমরা সত্যিই বিশ্বাস করি যে, এই সম্মেলনটি কেবল আরেকটি সম্মেলন হওয়া উচিত নয় এবং আমরা আশাবাদী যে, এর এমন ফলাফল আসবে যা দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের দিকে এগিয়ে যাবে।”
উল্লেখ্য, জুলাই মাসে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতিত্ব গায়ানা থেকে পাকিস্তানের কাছে যাবে।
ঢাকা/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বাজেটে আগের আমলের ছাপ পরিলক্ষিত হয়েছে: গণ অধিকার পরিষদ
কালোটাকা সাদা করার সুযোগ সংবিধান–পরিপন্থী, বৈষম্যমূলক। এ বাজেটে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। এতে আগের আমলের ছাপ পরিলক্ষিত হয়েছে। ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের প্রতিক্রিয়া জানাতে বুধবার সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন গণ অধিকার পরিষদের নেতারা।
দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে গণ অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খান বলেন, এনবিআর রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্য ঠিক করেছে, তা পূরণে নতুন কোনো প্রস্তাব নেই। গণ–অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক অস্থিরতা, নির্বাচন নিয়ে টানাপোড়েন, দলগুলোর সঙ্গে সরকারের দূরত্বের কারণে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা আরও বেশি কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
গণ অধিকার পরিষদ জানায়, গণ–অভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার কর্মসংস্থান নিয়ে বিশদ পরিকল্পনা প্রকাশ করবে বলে সবার ধারণা ছিল। কারণ, চাকরিতে কোটা সংস্কার বা বৈষম্য দূরীকরণের আন্দোলন থেকেই গণ–অভ্যুত্থান রচিত হয়। কিন্তু বেকারদের জন্য আলাদা কোনো ঘোষণা নেই।
দলটি আরও জানিয়েছে, মানুষের আয় ও ব্যয়ের তারতম্য কমানো বা বেকারত্ব-দারিদ্র্য দূরীকরণ নিয়ে বাজেটে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। সরকারি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সন্তুষ্ট করতে তাঁদের বেতন-ভাতা বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এতে ধনী-গরিবের মধ্যে বৈষম্য ও মূল্যস্ফীতি বাড়বে। সমাজ ও রাষ্ট্রে সাম্য প্রতিষ্ঠায় সরকারের চিন্তা এই বাজেটে প্রতিফলিত হয়নি।
শিক্ষা ও চিকিৎসা খাত নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চিন্তা আওয়ামী সরকারের চিন্তার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে দলটি। তারা বলেছে, বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ সংবিধান পরিপন্থী ও বৈষম্যমূলক। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার এমন নীতি–বিবর্জিত সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির ভাতা এখনো ‘অপর্যাপ্ত’ উল্লেখ করে গণ অধিকার পরিষদ বলেছে, বাজেটে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রণোদনা নেই। বিশেষ করে শেয়ারবাজারে একের পর এক লোকসান অনেককে পথে বসিয়ে দিয়েছে। এ বিষয়ে কার্যকর পরিকল্পনা দরকার ছিল।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন গণ অধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ, শহিদুল ইসলাম ফাহিম, আব্দুজ জাহের, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জিলু খান, যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন প্রমুখ।