মুসলিম উম্মাহর ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের প্রতীক
Published: 5th, June 2025 GMT
হজ ইসলামের অন্যতম স্তম্ভই নয়; মুসলিম উম্মার সবচেয়ে বড় সম্মিলনও বটে। সারাবিশ্বের মুসলমান পবিত্র জিলহজ মাসে বায়তুল্লাহ জিয়ারতের জন্য মক্কায় মিলিত হন। হজের মাধ্যমে উপস্থিত হাজিরা বিশ্ববাসীকে এই বার্তা দেন– বিশ্বের সব মুসলমান এক জাতি। তাই তারা সাদা হোক বা কালো, ধনী কিংবা গরিব; তাদের মধ্যে কোনো ভেদাভেদ নেই। তারা সবাই মহান আল্লাহর বান্দা।
৯ জিলহজ পবিত্র মক্কা নগরীর আরাফার ময়দান সারাবিশ্ব থেকে আসা মুসলমানের লাব্বাইক ধ্বনিতে মুখরিত হয়। লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক। অর্থাৎ হাজিরা বলছেন– হে আল্লাহ, আমি হাজির, হে আল্লাহ আমি হাজির; তোমার কোনো শরিক নেই। এদিন আরাফার ময়দানে অবস্থান এবং খুতবা হজের প্রধান আয়োজন।
হজ ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত ও তাৎপর্যপূর্ণ। আল্লাহপাকের নির্দেশে জান্নাত থেকে পৃথিবীতে পাঠানোর পর হজরত আদম (আ.
হজ একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত। প্রত্যেক সুস্থ, প্রাপ্তবয়স্ক এবং শারীরিক, মানসিকভাবে সামর্থ্যবান মুসলিম নর-নারীর ওপর জীবনে একবার হজ করা ফরজ। এর পর যতবার হজ পালন করবে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে। নফল হজেও অনেক সওয়াব রয়েছে।
হজ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনের সুরা আল ইমরানের ৯৭ নম্বর আয়াতে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘আল্লাহর উদ্দেশে বায়তুল্লাহ শরিফে হজ পালন করা মানুষের ওপর অবশ্য কর্তব্য, যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে।’
হজ এমন একটি মিলনমেলা, যা প্রত্যেক হাজিকে লাখো মুসলিমের সঙ্গে পরিচয়ের বিরাট সুযোগ করে দেয়। ইসলামের ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব সুদৃঢ় করতে হজের ভূমিকা অপরিসীম। হজ মানুষের অতীত জীবনের গুনাহ ধুয়ে-মুছে সাফ করে দেয়।
হাদিস শরিফে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পানি যেমন ময়লা ধুয়ে পরিষ্কার করে দেয়, হজও তেমনি গুনাহগুলোকে ধুয়ে পরিষ্কার করে দেয়’ (সহিহ বুখারি)। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশে হজ আদায় করল, তারপর কোনো অশ্লীল কাজ করল না, পাপ কাজ করল না, সে নবজাত শিশুর মতো নিষ্পাপ হয়ে ফিরল’ (বুখারি ও মুসলিম)।
সবার প্রভু এক। এক নবীর উম্মত। সবার জীবন বিধান কোরআন এক। সবার কেবলা, সবার ইমাম, সবার রুকু-সেজদা, সবার লক্ষ্য-উদ্দেশ্য এক ও অভিন্ন। এভাবেই আগত লাখ লাখ জনতার দেশীয় ভাষা, আঞ্চলিক জাতিসত্তা, দেশ, বংশগোত্র ও বর্ণের কৃত্রিম বৈষম্যচূর্ণ-বিচূর্ণ করে একাকার হয়ে যাওয়ার মাধ্যমে বিশ্বমুসলিম উম্মাহর এক অপ্রতিরোধ্য সিসা ঢালা প্রাচীর নির্মিত হয় হজে। তাই এই সময়ে বিশ্বশান্তি স্থাপনে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব-কলহ মিটিয়ে; লড়াই-সংগ্রামের পরিবর্তে ভালোবাসা, বন্ধুত্ব গ্রহণ করা যায়। বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় রাখা যায় বলিষ্ঠ অবদান। মহান আল্লাহ সব হাজির হজ কবুল করে বিশ্বমুসলিমের ঐক্য সুদৃঢ় করার তৌফিক দান করুন।
ড. মো. শাহজাহান কবীর: বিভাগীয় প্রধান, ইসলামিক স্টাডিজ, ফারইস্ট ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ঢাকা
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইবর হ ম আল ল হ করল ন
এছাড়াও পড়ুন:
শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
নাবি মুম্বাই। নয়া মুম্বাই। নতুন সেই মুম্বাইয়ে কাল নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেল মেয়েদের ওয়ানডে বিশ্বকাপ। ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত।
দীপ্তি শর্মার করা ৪৬তম ওভারের তৃতীয় বলে নাদিন ডি ক্লার্কের তোলা ক্যাচটি এক্সট্রা কাভারে ভারত অধিনায়ক হারমানপ্রীত কৌরের হাতে জমা হতেই বিশ্ব চ্যাম্পিয়নের আনন্দে মাতল পুরো ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৬ রানে অলআউট, ভারত ৫২ রানে জয়ী।
ভারতের জয়ের উৎসব অবশ্য শুরু হয়ে গিয়েছিল পাঁচ ওভার আগেই। লরা ভলভার্টকে ফিরিয়ে পথের কাঁটা উপড়ে ফেলেই উদ্যাপন শুরু করেছিল ভারতীয়রা। অসাধারণ এক সেঞ্চুরি করে দক্ষিণ আফ্রিকান অধিনায়ক চোখ রাঙাছিলেন ভারতের উৎসব ভন্ডুল করার। কিন্তু সেঞ্চুরি করার পরপরই ক্যাচ তুললেন ভলভার্ট। আর সেই ক্যাচ নিতে গিয়ে আমানজোত কৌর ভারতের প্রায় শত কোটি মানুষের হৃৎস্পন্দন প্রায় থামিয়ে দিয়েছিলেন। একবার নয়, দুবার নয়, তৃতীয়বারের চেষ্টাতেই ক্যাচ নিতে পারেন আমানজোত। এবারও বোলার সেই অফ স্পিনার দীপ্তি শর্মা।
৯৮ বলে ১০১ রান করে ভলভার্ট যখন ফিরলেন দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোর ৪১.১ ওভারে ২২০/৭। এরপর শুধু আনুষ্ঠানিকতাই ছেড়েছে ভারত। দীপ্তি আরও ২টি উইকেট নিয়ে পেয়ে গেছেন ৫ উইকেট। আর ভারত হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন। এর আগে ব্যাট হাতেও ৫৮ বলে ৫৮ রানের দারুণ এক ইনিংস খেলেছেন দীপ্তি।
ব্যাট হাতে ৮৭ রান করা শেফালি বর্মা বল হাতে নিয়েছেন ২ উইকেট