খুলনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী ‘গ্রেনেড বাবুর’ বাড়িতে যৌথ বাহিনীর অভিযান, অস্ত্রসহ ৩ জন গ্রেপ্তার
Published: 8th, June 2025 GMT
পুলিশের তালিকায় থাকা খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী ও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি রনি চৌধুরী বাবুর (গ্রেনেড বাবু) বাড়িতে অভিযান চালিয়েছে যৌথ বাহিনী। গতকাল শনিবার রাত ২টা থেকে আজ রোববার সকাল ৭টা পর্যন্ত নগরের শামসুর রহমান রোডে চলে এই অভিযান। এ সময় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সেই সঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে একটি ওয়ান শুটারগান, কয়েক রাউন্ড গুলি ও কয়েকটি দেশের মুদ্রা।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন রনি চৌধুরীর বাবা জোনায়েদ চৌধুরী এবং শামসুর রহমান রোডের আব্দুর রহমান ও ইদ্রিস গাজী।
এর আগে ৪ এপ্রিলও গ্রেনেড বাবুর বাড়িতে অভিযান চালায় যৌথ বাহিনী। ওই সময় তাঁর বাবা-ভাইসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই অভিযানে অস্ত্র ও মাদক বিক্রির ৩৮ লাখ টাকাও উদ্ধার করা হয়েছিল।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাওলাদার সানওয়ার বলেন, সেনা ও নৌবাহিনীর সমন্বয়ে গঠিত যৌথ বাহিনী শনিবার দিনগত রাতে বাড়িটিতে তল্লাশি চালায়। অভিযানে একটি ওয়ান শুটারগান, ৩টি গুলি, ২৫টি ক্রেডিট কার্ড, ২৬৮ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত, ৫০ দিরহাম, ৩৩০ ভারতীয় রুপি, ৪৮১ মার্কিন ডলার, দুটি স্মার্টফোন, ৩টি বাটন ফোন এবং দুটি ব্যাংকের স্বাক্ষর করা চেক বই উদ্ধার করা হয়।
ওসি আরও জানান, অভিযান শেষে গ্রেপ্তার তিনজনকে খুলনা সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, খুলনা নগরের বাসিন্দা জাহাঙ্গীর হোসেন হত্যা মামলায় ২০২৩ সালের ২৭ মার্চ রনি চৌধুরীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত। ২০১০ সালের ১০ জুন তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মাদক বিক্রির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আদাবরে কুপিয়ে হত্যা: তিনজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য দিল সেনাবাহিনী
রাজধানীর আদাবরে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে রিপন সরদার (৪২) খুনের ঘটনায় তিনজন গ্রেপ্তার হয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী। গতকাল মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, রিপন হত্যার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইমন ওরফে ভাইগ্না ইমন ওরফে দাঁতভাঙা ইমনকে তাঁর দুই সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের কাছ থেকে দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইমন হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁদের সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
সেনাবাহিনী জানায়, গতকাল ভোরের দিকে রাজধানীর আদাবর থানার বালুর মাঠ এলাকায় বাসায় ঢুকে রিপন নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। কিশোর গ্যাং এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে অভিযোগ। পরে আহত অবস্থায় রিপনকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যা পৌনে ছয়টার দিকে তিনি মারা যান।
৪৬ স্বতন্ত্র পদাতিক ব্রিগেডের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, গতকাল সকালে বালুমাঠ এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ডের খবর পাওয়া যায়। বিভিন্নভাবে তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় এলেক্স সবুজ, মনির ও ইমন এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় অবস্থান নির্ণয় করে অভিযান চালিয়ে ইমন ও তাঁর দুই সহযোগীকে দুটি সামুরাইসহ গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযান চালানোর কিছুক্ষণ আগে সবুজ ও মনির সেই জায়গা থেকে পালিয়ে যান। তাই তাঁদের গ্রেপ্তার করা যায়নি। বাকিদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে আদাবরের ১০ নম্বরের বালুর মাঠ এলাকায় ‘বেলচা মনির’ ও ‘রাজু গ্রুপে’র মধ্যে এ মারামারি হয়। ‘বেলচা মনিরের’ লোকজন ‘রাজু গ্রুপের’ রিপনকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে আহত করে। সন্ধ্যা সাতটার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের মৃত্যু হয়।
আদাবর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম জাকারিয়া প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ ও বিরোধকে কেন্দ্র করে মারামারির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটির বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুনআদাবরে মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মারামারিতে নিহত ১১৮ ঘণ্টা আগেতবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রিপন সরদারের ছেলে ইমন সরদার গতকাল দাবি করেন, রিপন মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন না। রিপন পেশায় চা–দোকানি। বেলচা মনিরের লোকজনের সঙ্গে দুই দিন আগে তাঁর বাবার কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে তাঁর বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তাঁর মা আরজু বেগমও আহত হয়েছেন। তাঁদের বাড়ি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, নিহত রিপন সরদার মাদক কারবারি রাজুর চাচাতো ভাই। ‘রাজু গ্রুপ’ ও ‘বেলচা মনিরের’ নেতৃত্বে আদাবরের ১০ ও ১৭ নম্বর এলাকায় মাদক ব্যবসা হয়। ওই বিরোধের জেরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে। নিহত রিপনের বিরুদ্ধে ভোলায় একাধিক মামলা থাকার তথ্য পাওয়া গেছে।