Prothomalo:
2025-06-20@10:36:24 GMT

বাঘ ও তিমির গল্প

Published: 20th, June 2025 GMT

গত ১৮ মে সিঙ্গাপুর যাচ্ছিলাম। ইউসুফ এস আহমেদ লিখিত এবং ইশতিয়াক হাসান অনূদিত উইথ দ্য ওয়াইল্ড অ্যানিমেলস অব বেঙ্গল বইটি অবসরে পড়ার জন্য সঙ্গে নিলাম। ইউসুফ এস আহমেদ একসময় পাকিস্তানের ইন্সপেক্টর জেনারেল অব ফরেস্ট ছিলেন। ১৯২৬ সালে তিনি বন বিভাগে যোগ দেন এবং ১৯৫৯ সালে অবসরে যান। তাঁর ৩৩ বছরের অভিজ্ঞতাসমৃদ্ধ বইটির ৪১ পৃষ্ঠায় লিখিত বক্তব্যটি আমার নজর কাড়ে। ততক্ষণে বিমান সিঙ্গাপুরের মাটি ছুঁয়েছে, যে দেশটি তার শেষ বাঘটি হারিয়েছে ১৯৩০ সালে।

ইউসুফ এস আহমেদ ১৯২৯ সালে সুন্দরবন ডিভিশনের দায়িত্ব পান। বন্য প্রাণীর প্রতি আগ্রহের কারণে শিগগিরই ‘ওয়াইল্ড ম্যান অব ফরেস্ট ডিপার্টমেন্ট’ নামে পরিচিতি পেলেন। তিনি লিখেছেন, ‘ভোলা নদীর ওপারে ধানসাগর গ্রাম সুন্দরবনের এই অংশে পুবের সীমানা হিসেবে কাজ করছে। ১৯২৯/১৯৩০ সালের শীতকাল। বাঘের চামড়া এবং মাথাসহ পুরস্কার দাবি করে একটি চিঠি এল স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্প থেকে।’

বাঘটি ধানসাগর গ্রামে ঢুকে পড়লে স্থানীয় শিকারিদের সহায়তায় পুলিশের একজন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টরের গুলিতে মারা পড়ে। ধানসাগর শরণখোলা উপজেলার অধীন বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের অন্তর্গত। এটি প্রায় ১০০ বছর আগের ঘটনা।

শত বছর পর ইদানীং বাঘ-মানুষ দ্বন্দ্ব একটি পর্যায়ে এসেছে। বাংলাদেশ বন বিভাগের সহযোগিতায় ওয়াইল্ডটিম নামক সংগঠনটি সুন্দরবনের চারপাশে ‘ভিলেজ টাইগার রেসপন্স টিম’ গঠন করেছে। সুন্দরবনের প্রায় ৮০ শতাংশ গ্রামে এখন ৩৪০ জন স্বেচ্ছাসেবক ৪৯টি দলে ভাগ হয়ে প্রায় ১৮ বছর ধরে বাঘ-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনে কাজ করে যাচ্ছেন। কোনো বাঘ গ্রামে ঢুকলেই এই দলের সদস্যরা বন বিভাগের সহযোগিতায় বাঘটিকে বনে ফিরিয়ে দেন। 

দেশের কোথাও বন্য প্রাণী, বিশেষ করে বাঘ মারলে একসময় এলাকায় তিনি ‘হিরো’ হয়ে যেতেন। এটি ছিল সামাজিক স্বীকৃতি। কিন্তু ব্রিটিশরা ভাবলেন, সুন্দরবনের যেসব এলাকা থেকে রাজস্ব বেশি আয় হয়, সেখানকার বনকর্মীদের পুরস্কৃত করলে ওই সব এলাকা বাঘশূন্য করা যাবে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসের অধ্যাপক রঞ্জন চক্রবর্তী লিখেছেন, ১৬ নভেম্বর ১৮৮৩ সালে সরকার ‘ক্যালকাটা গেজেট’–এর মাধ্যমে ঘোষণা করলেন: একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘ মারলে ৫০ রুপি এবং বাচ্চা মারলে ১০ রুপি পাওয়া যাবে। অবশ্য চামড়া ও মাথার খুলি জমা দিতে হবে। ১৯০৬ সালে এটি বাড়িয়ে ১০০ রুপি এবং ১৯০৯ সালে ২০০ রুপি করা হলো। ১৮৮১ থেকে ১৯১২ সাল পর্যন্ত ২ হাজার ৪০০টি প্রাপ্তবয়স্ক বাঘ মারা পড়েছে। যদিও এটি সরকারি হিসাব, বেসরকারি হিসাব কখনো জানা যায়নি। বাংলাদেশে একসময় প্রায় সর্বত্রই বাঘ ছিল, কিন্তু সুন্দরবনই আজ আমাদের ১২৫টি বাঘের শেষ আশ্রয়স্থল।

সিঙ্গাপুর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের লি কং চিয়ান প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘরে প্রদর্শিত তিমির কঙ্কাল.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন দরবন র বন ব ভ গ

এছাড়াও পড়ুন:

বুমরার অধিনায়ক না হওয়ার কারণ তাহলে এটাই

যশপ্রীত বুমরা না হয়ে ভারতের টেস্ট অধিনায়ক কেন শুবমান গিল—এ নিয়ে নানাজন নানা মত দিচ্ছেন। বুমরা এর মধ্যেই অধিনায়কত্ব নিয়ে মুখ খুললেন প্রথমবারের মতো।

ভারতকে তিনটি টেস্টে নেতৃত্ব দেওয়া এই পেসার ইংল্যান্ড সিরিজের আগে জানিয়েছেন, তিনি নিজেই অধিনায়ক হতে চাননি। রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলি অবসর নেওয়ার আগেই ব্যাপারটি তিনি বিসিসিআইকে জানিয়েছেন।

সর্বশেষ অস্ট্রেলিয়া সিরিজে রোহিতের অবর্তমানে দুটি টেস্টে নেতৃত্ব দেন বুমরা। কৌশলগত দক্ষতা দেখে অনেকে মনে করেছিলেন, বুমরা নিয়মিত অধিনায়ক হতে পারেন। পরে অবশ্য বুমরাকে সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব থেকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।

কারণটা স্কাই স্পোর্টসে বলেছেন বুমরা, ‘এখানে কোনো মজাদার গল্প নেই। কোনো বিতর্ক নেই। আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে ব্যাপারটা এমন না। রোহিত আর বিরাট আইপিএলের সময় টেস্ট থেকে অবসর নেন। তারও আগে আমি বিসিসিআইকে জানিয়েছিলাম। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে আমার ওয়ার্ক লোড নিয়ে কথা বলেছিলাম। আমি আমার সার্জনের সঙ্গেও কথা বলি। তিনি বলেন, আমাকে ওয়ার্ক লোড বুঝে চলতে হবে। তখনই বুঝেশুনে খেলার সিদ্ধান্তে আসি।’

আমি তিনটা টেস্ট ম্যাচ খেলার লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছি। অবশ্যই সংখ্যাটা নির্ধারিত নয়। প্রথম টেস্টটা নিশ্চিত। হ্যাঁ, এটা খেলবই।ইংল্যান্ড সিরিজ নিয়ে বুমরা

বুমরা যোগ করেন, ‘এরপর আমি বিসিসিআইকে ফোন করে বলি, আমাকে যেন নেতৃত্বের জন্য বিবেচনা না করা হয়। কারণ, পাঁচ ম্যাচ সিরিজে সব ম্যাচ খেলতে পারব না। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে যদি তিনটা ম্যাচে একজন অধিনায়ক হয়, আর বাকি দুইটায় অন্য কেউ—সেটা দলের জন্যও ঠিক হবে না।’

তবে বুমরা স্বীকার করেছেন, তাঁরও অধিনায়ক হওয়ার স্বপ্ন ছিল। কিন্তু চোটপ্রবণ শরীরে বেশি চাপ নিলে টেস্ট ক্যারিয়ার দ্রুতই শেষ হয়ে যেতে পারে বলেও আশঙ্কা ছিল তাঁর, ‘অধিনায়কত্ব একটা দায়িত্ব। কিন্তু এ ছাড়াও দলে নেতার ভূমিকায় তো থাকাই যায়। আমি সেটাই করতে চেয়েছি। আর আমি জানি, যদি সাবধান না থাকি, তাহলে ভবিষ্যতে কী হবে বলা মুশকিল। হঠাৎই হয়তো এই সংস্করণ ছাড়তে হতে পারে। আমি এমনটা চাই না।’

আরও পড়ুনরান করতে পারেন দেখাতে মা-বাবার সামনে ম্যাক্সওয়েলের ১৩ ছক্কায় সেঞ্চুরি৪ ঘণ্টা আগে

বুমরা আরও বলেছেন, ‘দলের স্বার্থেই দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা করা উচিত। আমি যেভাবে সম্ভব, সেভাবে সাহায্য করব। তবে হ্যাঁ, অধিনায়কত্ব আমার কাছেও অনেক কিছু। আমি এর জন্য অনেক পরিশ্রম করেছি। কিন্তু মাঝেমধ্যে আপনাকে বড় করে ভাবতে হবে। আমি অধিনায়কত্বের চেয়ে ক্রিকেটকে বেশি ভালোবাসি।’

বুমরা কি এভাবেই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে জ্বলে উঠবেন?

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ইরানের পর ইসরায়েলের নিশানা কি তুরস্ক
  • ৫ সচিব বাধ্যতামূলক অবসরে
  • পাঁচ সচিবসহ ছয় কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার
  • সুফলা এক বাংলাদেশ
  • ছোট দেশ, বড় সাফল্য
  • বুমরার অধিনায়ক না হওয়ার কারণ তাহলে এটাই
  • ‘সুন্দরবন রক্ষায় কনক্রিট অ্যাকশন প্ল্যান করা হবে’
  • কয়রায় লোকালয় থেকে উদ্ধার ১০ ফুট লম্বা অজগর সুন্দরবনে অবমুক্ত
  • খুলনায় উদ্ধারকৃত অজগর সুন্দরবনে অবমুক্ত