উগান্ডার লিগে একসময় ছক্কা মারতেন নিউইয়র্কের মেয়র মামদানি
Published: 7th, November 2025 GMT
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে গতকাল রাত থেকে একটি ছবি ভাসছে। ছবিটি পোস্ট করা হয়েছে উগান্ডা ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের এক্স হ্যান্ডল (ক্রিকেট উগান্ডা) থেকে। সাতজন তরুণ খেলোয়াড়ের এই ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘হ্যাঁ, আপনি ঠিকই দেখেছেন। নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি (বাঁ থেকে দ্বিতীয়) একসময় আমাদের ক্যাসল ডেভেলপমেন্ট ক্রিকেট দলের হয়ে স্থানীয় লিগে ছক্কার পর ছক্কা মেরেছেন।’
স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেট উগান্ডার এ পোস্ট নিয়ে হইচই পড়ে যাওয়ার কথা। নেটিজেনদের মধ্যে ঘটেছেও ঠিক তা–ই। আলোচনা চলছে মামদানি অতীতে ক্রিকেট খেলেছেন কি না? যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম ‘দ্য স্পোর্টিং নিউজ’ জানিয়েছে, উগান্ডায় বেড়ে ওঠার সময়ে স্থানীয় ডেভেলপমেন্ট ক্রিকেট লিগে খেলেছেন মামদানি। আফ্রিকার দেশটির ঘরোয়া প্রতিযোগিতায় ক্যাসল ডেভেলপমেন্ট ক্রিকেট দলের হয়ে খেলেছেন নিউইয়র্কের এই প্রথম নির্বাচিত মুসলিম মেয়র।
মামদানির মা–বাবা ভারতীয়। মা মীরা নায়ার ভারতের প্রখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা। বাবা মাহমুদ মামদানি নৃবিজ্ঞানী। ১৯৮৯ সালে উগান্ডায় তাদের প্রথম সাক্ষাৎ হয়। এই ঘরে মামদানির জন্ম, তবে সেটি উগান্ডার কাম্পালায়। মামদানির বয়স যখন সাত বছর, তখন তাদের পরিবার স্থায়ীভাবে নিউইয়র্কে চলে যায় বলে জানিয়েছে ‘দ্য স্পোর্টিং নিউজ’। মামদানির বাবা তখন যুক্তরাষ্ট্রের কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করার ডাক পান।
আরও পড়ুন২০২৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ ভারত–শ্রীলঙ্কার ৮ ভেন্যুতে৫৯ মিনিট আগেক্রিকেটের সঙ্গে মামদানির সংশ্লিষ্টতা নিয়ে ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, নিউইয়র্কে ব্রোনক্স হাই স্কুল অব সায়েন্সে পড়াকালীন তিনি স্কুলের প্রথম ক্রিকেট দলের সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। মামদানিদের সেই দল যুক্তরাষ্ট্রের পাবলিক স্কুল অ্যাথলেটিক লিগে (পিএসএএল) ক্রিকেটের প্রথম মৌসুমে খেলায় অংশ নিয়েছিল। মামদানি এর আগে জানিয়েছেন, ক্রিকেট থেকে তিনি একতা শিখেছেন। কীভাবে ‘একই মানসিকতার মানুষেরা কথার বুলিকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে’—সেটিও ক্রিকেট থেকে শিখেছেন বলে এর আগে জানিয়েছেন মামদানি।
২০২৪ সালের নিউইয়র্ক সিটি ম্যারাথনে অংশ নিয়ে সহনশীলতা ও সামষ্টিক চেতনার প্রতি নিজের অঙ্গীকারের প্রমাণ দিয়েছিলেন মামদানি। তিনি ফুটবলের ভক্তও। একদমই অপেশাদার লিগে খেলেন অল্প বয়সে। তাঁর পছন্দের দল ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা আর্সেনাল। নির্বাচনী প্রচারণায় বিভিন্ন জায়গায় যাওয়ার সময় গাড়িতে বসে তাঁর আর্সেনালের ম্যাচ দেখার অভ্যাসের কথা আগেই জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। পাশাপাশি ২০২৬ বিশ্বকাপের জন্য ফিফার ‘ডায়নামিক প্রাইসিং’ বা পরিবর্তনশীল মূল্যনীতি বাতিল করতে এর আগে পিটিশনও করেন উগান্ডা ও যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ নাগরিক মামদানি।
আরও পড়ুনকোহলি সম্ভবত সর্বকালের সেরা ওয়ানডে খেলোয়াড়: স্টিভ ওয়াহ৩ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ন উইয়র ক ম মদ ন র ন ম মদ ন প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
জোহরান মামদানিকে বেছে নিয়ে আমরা সার্বভৌমত্ব হারিয়েছি: ডোনাল্ড ট্রাম্প
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বুধবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ‘সার্বভৌমত্ব’ হারিয়েছে। কারণ, নিউইয়র্কের ভোটাররা ‘‘বামপন্থী’’ জোহরান মামদানিকে (জোহরান একজন ডেমোক্রেটিক সোশ্যালিস্ট) তাঁদের পরবর্তী মেয়র হিসেবে বেছে নিয়েছেন।
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমরা বিষয়টা সামলে নেব।’ তবে তিনি এর অর্থ ব্যাখ্যা করেননি; বরং দাবি করেন, দেশের সবচেয়ে বড় শহরটি এখন ‘কমিউনিস্ট শহর’ হয়ে উঠবে।
মায়ামিতে গতকাল এক ভাষণে ট্রাম্প এসব মন্তব্য করেন। মামদানির বড় জয়ের একদিন পরই তিনি এ–ও মনে করছেন, শিগগিরই ফ্লোরিডার এ শহর হবে সেসব মানুষের আশ্রয়স্থল, যাঁরা নিউইয়র্কের কমিউনিজম থেকে পালিয়ে আসবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘মার্কিনদের সামনে এখন খুবই স্পষ্ট এক সিদ্ধান্ত—আমাদের সামনে আছে কমিউনিজম আর সাধারণ বুদ্ধির মধ্যে এক পছন্দ।’ তিনি আরও বলেন, এ সিদ্ধান্ত হচ্ছে ‘অর্থনৈতিক দুঃস্বপ্ন’ ও ‘অর্থনৈতিক সাফল্যের বিস্ময়’ এর মধ্যে এক পছন্দ।
আরও পড়ুনডেমোক্র্যাটদের জয়, অর্থনৈতিক সমস্যা—ট্রাম্পের রিপাবলিকানদের জন্য বড় ধাক্কা১৬ ঘণ্টা আগেগত বছরের ৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী কমলা হ্যারিসকে পরাজিত করার এক বছর পূর্তি উপলক্ষে ট্রাম্প এ ভাষণ দেন। তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, ‘আমরা আমাদের অর্থনীতি উদ্ধার করেছি, স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার করেছি, আর একসঙ্গে আমরা আমাদের দেশকে বাঁচিয়েছি—৩৬৫ দিন আগে সেই গৌরবময় রাতে।’
শিগগিরই ফ্লোরিডার এ শহর (মায়ামি) হবে সেসব মানুষের আশ্রয়স্থল, যাঁরা নিউইয়র্কের কমিউনিজম থেকে পালিয়ে আসবেন।ডোনাল্ড ট্রাম্প, মার্কিন প্রেসিডেন্টনিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানি জয়ী হয়েছেন ট্রাম্পসহ রিপাবলিকান নেতা ও আরও কিছু মহলের তীব্র সমালোচনা এবং বিরোধিতার মধ্যে। ট্রাম্পপন্থী ব্যবসায়ী মহল, রক্ষণশীল গণমাধ্যম বিশ্লেষক এবং ট্রাম্প নিজেও ৩৪ বছর বয়সী দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভুত জোহরানের নীতিমালা ও মুসলিম পরিচয়কে কেন্দ্র করে তাঁকে কঠোরভাবে আক্রমণ করেছিলেন।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে বিজয়োৎসবে জোহরান বলেন, ‘যদি কেউ দেখাতে পারেন যে ট্রাম্পের কারণে একটি দেশ প্রতারিত হয়েছে এবং তাঁকে হারানো যায়, তবে সেটা করতে পারবে সেই শহরই; যেখান থেকেই তিনি নিজে উঠে এসেছেন।’
জোহরান মামদানির জয়ের মুহূর্ত