চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ভারী বর্ষণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলের তোড়ে ধসে পড়েছে বেইলি সেতু। আজ শনিবার বেলা সাড়ে তিনটায় মিরসরাই পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মিরসরাই চাঁদপুর গোভানিয়া-ফটিকছড়ি সড়কে গোভানিয়া ছড়ার ওপর নির্মিত সেতুটির এক পাশ ধসে পড়ে। এর পর থেকে মিরসরাই পৌরসভা থেকে ফটিকছড়ি উপজেলার নারায়ণহাট বাজারকে সংযুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। কিছুদিন আগে সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সাইনবোর্ড ঝুলিয়েছিল মিরসরাই পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।

আজ বিকেল চারটায় সরেজমিনে দেখা যায়, গোভানিয়া ছড়ার তীব্র স্রোতে বেইলি সেতুর উত্তর পাশের অংশের গোড়ায় মাটি সরে গেছে। এর ফলে সেতুর ওই অংশ ছড়ায় ধসে পড়েছে। ধসে পড়া সেতুটি দেখতে দুই পাশে ভিড় করছেন উৎসুক মানুষ। ঝুঁকিপূর্ণ হলেও কেউ কেউ হেঁটে যাচ্ছেন কাত হয়ে যাওয়া সেতুর ওপর দিয়ে।

সেতু এলাকায় কথা হয় মিরসরাই পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো.

মনিরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মিরসরাই চাঁদপুর গোভানিয়া-ফটিকছড়ি সড়কের গোভানিয়া ছড়ার ওপর এই বেইলি সেতুটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। ফটিকছড়ি উপজেলার সঙ্গে মিরসরাই উপজেলার মানুষের যোগাযোগের প্রধান সড়ক এটি। এই সড়ক পথে যাত্রী পরিবহন ছাড়াও পাহাড়ি বাঁশ-কাঠ, লেবু, মৌসুমি ফল ও সবজি আনা–নেওয়া করা হয়। বেইলি সেতুটি ভেঙে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আম–কাঁঠাল ও আনারস পাকার এই মৌসুমে বাগানমালিক ও ফল ব্যবসায়ীরা চরম বিপাকে পড়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরসরাই পৌরসভার প্রশাসক মিরসরাই উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিরসরাই পৌরসভা এলাকায় গোভানিয়া ছড়ার ওপর বেইলি সেতুটি ধসে পড়ে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জেনেছি। মিরসরাই চাঁদপুর গোভানিয়া-ফটিকছড়ি সড়কটি সড়ক ও জনপদ বিভাগের আওতাধীন। বেইলি সেতু ধসে পড়ার বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।’

এ বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগ চট্টগ্রাম জেলার উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (সীতাকুণ্ড) মোহাম্মদ ফারহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিরসরাই চাঁদপুর গোভানিয়া-ফটিকছড়ি সড়কের মিরসরাই পৌরসভা এলাকায় গোভানিয়া ছড়ার ওপর বেইলি সেতুটি ছড়ায় ধসে পড়ার খবর পেয়েছি। আগামীকাল সকাল থেকে সেতুটি মেরামতের কাজ শুরু হবে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম রসর ই প রসভ ম রসর ই চ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বদ নজরের দোয়া: ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যাখ্যা

‘বদ নজর’ ইসলামে একটি বাস্তব সত্য, যা মানুষের ঈর্ষা, হিংসা বা অতিরিক্ত প্রশংসার মাধ্যমে অন্যের ক্ষতি করতে পারে। কোরআন ও হাদিসে বদ নজরের বাস্তবতা এবং এর থেকে সুরক্ষা লাভের উপায় উল্লেখ করা হয়েছে।

তাই মুসলমানদের জন্য বদ নজর থেকে রক্ষার দোয়া ও আমল জানা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বদ নজরের বাস্তবতা

আল্লাহ তা’আলা বলেন, “আর নিশ্চয় যারা অবিশ্বাস করেছে, তারা যখন কোরআন শোনে তখন প্রায় তাদের দৃষ্টির দ্বারা তোমাকে পতিত করবে। আর তারা বলে: ‘সে তো অবশ্যই পাগল।’” (সুরা কলাম, আয়াত: ৫১)

রাসুল (সা.) বলেছেন: “চোখ লাগা (বদ নজর) সত্য।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২১৮৮)

আরও পড়ুনশিশুদের বদ নজর থেকে বাঁচাতে১৫ আগস্ট ২০২৫বদ নজর থেকে বাঁচার দোয়া

রাসুল (সা.) বদ নজর থেকে বাঁচার জন্য বিভিন্ন দোয়া শিখিয়েছেন। এর মধ্যে কয়েকটি প্রসিদ্ধ দোয়া হলো:

১. বদ নজর থেকে শিশুদের রক্ষার দোয়া

রাসুল (সা.) হাসান ও হুসাইন (রা.)-এর জন্য এই দোয়া পড়তেন:

উচ্চারণ: উ‘ঈযুকুমা বি কালিমাতিল্লাহিত্তাম্মাতি মিন কুল্লি শাইতানিন, ওয়া হাম্মাতিন, ওয়া মিন কুল্লি ‘আইনিল লাম্মাহ।

অর্থ: “আমি তোমাদের উভয়কে আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালিমার মাধ্যমে আশ্রয় দিচ্ছি, প্রত্যেক শয়তান, বিষাক্ত প্রাণী এবং ক্ষতিকর বদ নজর থেকে।” (সুনান আত-তিরমিজি, হাদিস: ২০৬০)

২. বদ নজর থেকে রক্ষার সাধারণ দোয়া

উচ্চারণ: আ‘ঊযু বি কালিমাতিল্লাহিত্তাম্মাতি মিন শার্রি মা খালাক।

অর্থ: “আমি আল্লাহর পূর্ণাঙ্গ কালিমার মাধ্যমে তাঁর সৃষ্টির অশুভ দিক থেকে আশ্রয় চাই।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৭০৮)

৩. বদ নজর দূর করার আমল

রাসুল (সা.) বলেছেন, “যখন তোমাদের কেউ তার ভাইয়ের মধ্যে এমন কিছু দেখে যা তাকে ভালো লাগে, তখন সে যেন তার জন্য বরকতের দোয়া করে। কারণ বদ নজর সত্য।” (সুনান ইবনে মাজাহ, হাদিস: ৩৫০৯)

এক্ষেত্রে দোয়া করা যায়—

উচ্চারণ: বারাকাল্লাহু ফীক।

অর্থ: “আল্লাহ তোমার জন্য বরকত দান করুন।”

আরও পড়ুনদোয়া কবুলের জায়গা০৪ জুন ২০২৪বদ নজর প্রতিরোধে করণীয়

১. সকালে-সন্ধ্যায় জিকির–আজকার পাঠ করা (যেমন আয়াতুল কুরসি, সুরা ফালাক, সুরা নাস)।

২. অন্যের প্রশংসায় বরকতের দোয়া করা।

৩. আল্লাহর উপর ভরসা রাখা এবং তাওয়াক্কুল করা।

বদ নজর মানুষের জন্য বাস্তব ক্ষতির কারণ হতে পারে। তবে আল্লাহর উপর ভরসা, কোরআনের আয়াতসমূহ পাঠ এবং রাসুল (সা.)-এর শিখানো দোয়া পাঠের মাধ্যমে মুসলমান সহজেই এর ক্ষতি থেকে বাঁচতে পারে।

তাই প্রতিদিনের জীবনে বদ নজর প্রতিরোধের দোয়াগুলো নিয়মিত পড়া প্রতিটি মুমিনের দায়িত্ব।

আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ