আলফাডাঙ্গায় কর্দমাক্ত কাঁচা সড়কে বিছানো হলো ইট, ৪০০ বৃক্ষরোপণ
Published: 25th, June 2025 GMT
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার বানা ইউনিয়নের বেলবানা রাস্তাটির দৈর্ঘ্য ১০৫০ মিটার। কাঁচা এ সড়কটি বছরের প্রায় ছয় মাস পানিতে ডুবে থাকতো। কয়েকটি গ্রামের কৃষকের ফসল আনা-নেওয়া হয় এই সড়ক দিয়ে। কর্দমাক্ত এ রাস্তায় চলাচলে প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হন অনেকেই। রাস্তাটি উঁচু করে সারাবছর মানুষের যাতায়াতের উপযোগী করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছিল এলাকাবাসী। এ দাবি অবশেষে পূরণ হয়েছে। রাস্তাটি উঁচু করে ইট বিছানো হয়েছে।
বুধবার সকালে স্থানীয় বানা এম এ মজিদ মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সড়কটিতে রোপণ করা হয়েছে ৪০০ শত ফলজ ও বনজ গাছ। উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ও উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সড়কের দুই পাশে এসব চারা রোপণ করা হয়। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাসেল ইকবাল, উপজেলা কৃষি অফিসার তুষার সাহা, উপজেলা প্রকল্প বাস্তাবায়ন কর্মকর্তা সাগর হোসেন সৈকত, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোজাম্মেল হক ও বন কর্মকর্তা শেখ লিটন প্রমুখ।
স্থানীয় বাসিন্দা লিয়াকত বিশ্বাস ও মফিজুল ইসলাম জানান, রাস্তাটি অনেক নিচু ছিল। এখন আমাদের নতুন একটি রাস্তা হয়েছে। সেই রাস্তায় আবার গাছ লাগানো হচ্ছে। বিষয়টি অনেক ভালো লাগছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেল ইকবাল বলেন, এলাকাবাসীর দাবি ছিল, রাস্তাটি উঁচু ও পাকা করার। আমাদের সাধ্যমতো উঁচু করার চেষ্টা করেছি। এইচবিবি প্রকল্পের মধ্যেমে ইট বিছানো হয়েছে। এলজিইডি অন্তর্ভুক্ত সড়ক হলে কার্পেটিং করা যেত। আগামীতে সড়কটি এলজিইডিতে অন্তর্ভুক্ত করে কার্পেটিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে। সড়কটি সংস্কার করার সময় এলাকাবাসী অনেক সহযোগী করেছে। সকলের প্রচেষ্টায় রাস্তাটি ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। এখন সে রাস্তায় বৃক্ষরোপণ করছি।
সূত্র জানায়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় কর্তৃক বাস্তবায়িত গ্রামীণ মাটির রাস্তা টেকসইকরণের লক্ষ্যে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) প্রকল্পের মাধ্যমে ১০০০ মিটার রাস্তা নির্মাণ ব্যয় হয় ৮১ লাখ টাকা। অবশিষ্ট ৫০ মিটার রাস্তা কাবিটা প্রকল্পের মাধ্যমে রিটেইনিং ওয়াল, মাটি ভরাট ও এইচবিবিকরণ করা হয় যার নির্মাণ ব্যয় ৫ লাখ টাকা। ১০৫০ মিটার সড়কে ব্যয় হয়েছে সর্বমোট ৮৬ লাখ টাকা।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক প রকল প অফ স র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনিয়ম পেয়ে রাস্তার কাজ বন্ধ করলেন স্থানীয়রা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার একটি রাস্তা সংস্কার কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন স্থানীয়রা। গত সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকে উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের চকঝগড়ু এলাকার ওই সড়কটির কাজ বন্ধ আছে। এলাবাসীর অভিযোগ, যথাযথ নিয়ম অনুসরণ না করে পিচ ঢালাই দিয়েছেন ঠিকাদার।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি জানান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) উপজেলা প্রকৌশলী ঘটনাস্থলে গিয়ে অনিয়মের সত্যতা পেয়েছেন।
আরো পড়ুন:
চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল শুরু
কুমিল্লা-নোয়াখালী সড়কে বন্ধ হলো মরণফাঁদ খিলা ইউটার্ন
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার চকঝগড়ু এলাকা থেকে শিবগঞ্জ উপজেলার ধাইনগর ইউনিয়নের সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশায় ছিল। প্রায় আড়াই কিলোমিটার রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে ঠিকাদার নিয়োগ দেওয়া হয়। পাঁচ মাস আগে শুরু হয় সড়ক সংস্কারের কাজ। পুরাতন সড়কটি ভেঙ্গে নতুন করে ইটের খোয়া ফেলে বুলডোজার দিয়ে বসিয়ে সংস্কার করা হচ্ছিল। আবহাওয়া দুর্যোগপূর্ণ হওয়ায় ঠিকাদার প্রায় ২ থেকে আড়াই মাস কাজ বন্ধ রাখেন। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে ১৫-২০ দিন আগে আবারও ঠিকাদার কাজ শুরু করন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বৃষ্টির কারণে যে সময়টা কাজ বন্ধ রেখেছিলেন ঠিকাদার, ওই সময়ের মধ্যে রাস্তায় ব্যাপক ধুলোবালি ও ময়লা অবর্জনা জমা হয়। এসব আবর্জনা পরিষ্কার না করেই গত সোমবার সকালে ঠিকাদারের নিয়োগ করা শ্রমিকরা পিচ ঢালাইয়ের কাজ শুরু করেন। শুরুর দিকে স্থানীয়রা শ্রমিকদের এভাবে কাজ করতে নিষেধ করলেও তারা কর্ণপাত করেনি। এরফলে স্থানীয়রা একসঙ্গে জড়ো হয়ে রাস্তা সংস্কার কাজে অনিয়মের অভিযোগ তোলেন। এরপরই বন্ধ হয়ে যায় সড়ক সংস্কারের কাজ। গত দুইদিন ধরে বন্ধ রয়েছে কাজ।
মাছ ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদ বলেন, “এটি দুই উপজেলার সংযোগ সড়ক। এই রাস্তা দিয়ে কৃষকরা তাদের ফসল বাড়িতে নিয়ে যান। এরপরেও জনগুরুত্বপূর্ণ রাস্তাটি সংস্কার কাজে অনিয়ম রয়েছে। ঠিকমতো পরিষ্কার না করেই ধুলাবালুর উপরে পিচ ঢালাই দেওয়া হয়েছে। যে কারণে হাত দিলেই পিচ মিশ্রিত পাথর (পিচ ঢালাই) উঠে আসছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা মো. রিহাদ আলী বলেন, “কাদামাটি পরিষ্কার না করেই রাস্তায় পিচ দেওয়া হয়েছে। হাত দিলেই পিচ-পাথর চলে আসছে। পিচ ওঠাতে কোদালের প্রয়োজন হচ্ছে না। এখনই যদি এভাবে পিচ উঠে যায় তাহলে পরবর্তীতে এই রাস্তা কিভাবে টিকবে। কীভাবে চলবে ৮-১০ চাকার ট্রাক?”
চকঝগড়ু এলাকার ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জোহরুল ইসলাম বলেন, “অনিয়মের অভিযোগ তুলে স্থানীয়রা রাস্তা সংস্কার কাজ আটকে দিয়েছেন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি, এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী আছেন। আমিসহ ওই প্রকৌশলী রাস্তা পরিষ্কার-পরিছন্নতার ব্যাপারে একটি গ্যাপ দেখতে পেয়েছি। এরপর থেকেই কাজ বন্ধ রয়েছে। প্রকৌশলীর মুখে শুনেছি, রাস্তাটি সংস্কারে ৭০ লাখ টাকা আনুমানিক ব্যয় ধরা হয়েছে।”
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া টনিকের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
রাস্তার তদারতির দায়িত্বে থাকা এলজিইডির উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু সায়েম ও উপজেলা প্রকৌশলী আজহারুল ইসলামকে ফোন করা হলেও তারা কল রিসিভ করেননি।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোরার হোসেন রাইজিংবিডিকে বলেন, “স্থানীয়রা অনিয়মের অভিযোগ তুললে রাস্তাটি সংস্কার কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে রাস্তাটি আবারো সংস্কার করা হবে।”
ঢাকা/মেহেদী/মাসুদ