পঞ্চগড়ে যুব মহিলা লীগ নেত্রীর খাবার বিতরণের ছবি ফেসবুকে, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
Published: 25th, June 2025 GMT
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পঞ্চগড়-১ (তেঁতুলিয়া-সদর-আটোয়ারী) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়ার স্ত্রী কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সদস্য মেজর (অব.) কাজী মৌসুমীর পাথরশ্রমিকদের মধ্যে খাবার বিতরণের ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তেঁতুলিয়া মডেল থানার প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান ও বিক্ষোভ করেছেন উপজেলা যুবদল ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার পর উপজেলা যুবদল-ছাত্রদলের নেতৃত্বে উপজেলার ভজনপুর বাজার থেকে একটি মোটরসাইকেল মিছিল বের হয়। মিছিলটি উপজেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে থানার মূল ফটকের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে আওয়ামী লীগের দোসরদের গ্রেপ্তারের দাবিতে অবস্থান ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন নেতা-কর্মীরা। পরে পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে রাত আড়াইটার দিকে বিক্ষোভকারীরা চলে যান।
বিক্ষোভে তেঁতুলিয়া উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হামিদুল হাসান, সদস্যসচিব জাকির হোসেন, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নুরুজ্জামান, সদস্যসচিব আবু বক্কর সিদ্দিকসহ ছাত্রদল ও যুবদলের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে মঙ্গলবার ইংরেজিতে ‘আওয়ামী লীগ নিউজ’ নামের একটি ফেসবুক পেজে কাজী মৌসুমীর খাবার বিতরণের ১৩টি ছবি পোস্ট করা হয়। ছবিতে জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি নিলুফার ইয়াসমিনকেও দেখা যায়। ছবির ক্যাপশনে লেখা হয়, ‘আজ ২৩ শে জুন আওয়ামী লীগের ৭৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পঞ্চগড় করতোয়া নদী থেকে পাথর উত্তোলনকারী শ্রমিকদের মাঝে খাবার বিতরণ করছেন কেন্দ্রীয় যুব মহিলা লীগের সদস্য অবসরপ্রাপ্ত মেজর কাজী মৌসুমী ও পঞ্চগড় জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি নিলুফার ইয়াসমিন।’ ফেসবুকে এসব ছবি ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ জানান।
উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক নুরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা রাত ১১টার পর ফেসবুকে এসব ছবি দেখতে পাই। যেখানে বিচার না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ, সেখানে তারা এসব কাজ কীভাবে করছে? সরকারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা আমাদের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ মনে হচ্ছে। তেঁতুলিয়া উপজেলার যুবলীগ-ছাত্রলীগের অনেক নেতা-কর্মী এখনো প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অন্যদিকে পঞ্চগড়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কেক কাটার একটা ভিডিও রাতে ফেসবুকে দেখা গেছে। আমরা মূলত এই দোসরদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছি।’
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হামিদুল হাসান বলেন, কাজী মৌসুমীর স্বামী নাঈমুজ্জামান ভূঁইয়াসহ পরিবারের সবাই মামলার আসামি। তাঁরা সবাই পলাতক। এখন মৌসুমীকে তাঁরা মাঠে নামিয়ে দিয়েছেন। এ জন্য তাঁরা তাঁদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে থানার সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে তাঁরা সেখান থেকে চলে আসেন।
তেঁতুলিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: খ ব র ব তরণ ছ ত রদল র অবস থ ন উপজ ল র কর ম র ফ সব ক র স মন য বদল আওয় ম সদস য
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিক তুহিনের মোবাইল ফোন খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ
সন্ত্রাসীদের তাণ্ডবের ভিডিও ধারণ ও সত্য উন্মোচন করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন। তাকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় জড়িত আট জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তবে এই হত্যাকাণ্ডের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ রয়েছে তার ব্যবহত মোবাইল ফোনে। কিন্তু এখন পর্যন্ত পুলিশ তার মোবাইল উদ্ধার করতে পারেনি।
ধারণা করা হচ্ছে সাংবাদিক তুহিনের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা গেলে ঘটনার রহস্য আরও বেশি স্পষ্ট ও স্বচ্ছ প্রমাণিত হবে। সচেতন মহল ও সাংবাদিক সমাজ বলছে, মোবাইল ফোন পাওয়া গেলে ঘটনার মোড় ঘুরে যেতে পারে। এসকল সন্ত্রাসী, তাদের মদদদাতা ও হত্যার আসল রহস্য বের হয়ে আসতো।
নিহত সাংবাদিক মো. আসাদুজ্জামান তুহিন (৩৮) দৈনিক প্রতিদিনের কাগজের গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কাজ করতেন।
তার সহকর্মী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সাংবাদিক তুহিন দু’টি মোবাইল ফোন ব্যবহার করতেন। তিনি চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বিভিন্ন অনিয়ম ও অব্যবস্থাপানা নিয়ে ভিডিও ধারণ করতেন। স্পর্শকাতর ছাড়া মোটামুটি সব ভিডিও তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিতেন।
হত্যাকাণ্ড সংঘটিত এলাকা চান্দনা চৌরাস্তা এলাকাতেই অধিকাংশ সময় কাটাতেন তুহিন। যার কারণে এ এলাকার মোটামুটি সব অনিয়ম ও অপরাধীরা তার পরিচিত ছিল।
সিসিটিভি ফুটেজের চিত্র ও পুলিশের ভাষ্যমতে, গত বৃহস্পতিবার বাদশা নামে এক ব্যক্তি ব্যাংক হতে ২৫ হাজার টাকা তুলে ফিরছিলেন। এসময় আসামি গোলাপী তাকে হানিট্রাপে ফেলার চেষ্টা করে। এটি যখন বাদশা বুঝতে পারে, তখন তার থেকে ছুটতে চায় এবং কিল-ঘুষি মারে। এসময় আগে থেকে ওৎপেতে থাকা অন্য আসামিরা এসে একটি মুদী দোকানে বাদশাকে কোপানো শুরু করে। বাদশা প্রাণ বাঁচাতে দৌড়াতে থাকে।
ঘটনাটি সাংবাদিক তুহিন নিজের পেশাগত কারণেই ভিডিও করে। আসামিরা সাংবাদিক তুহিনকে ভিডিও ডিলেট করতে বলে কিন্তু তিনি রাজি হননি। এক পর্যায়ে ওই আসামিরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাতে প্রথমে চান্দনা চৌরাস্তায় শাপলা ম্যানশনের সন্ত্রাসীরা বাদশা নামে লোকটার উপরে হামলা করে। ওই ঘটনার ২০-৩০ মিনিট পর ঘটনাস্থলের ঠিক বিপরীত পাশে মসজিদ মার্কেটের সামনে চায়ের দোকানে সাংবাদিকের উপর হামলা করে। এই দীর্ঘ সময় সন্ত্রাসীদের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে শোডাউন দিতেও দেখা গেছে।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিন খান বলেন, “নিহত সাংবাদিকের দু’টি মোবাইল ফোন ছিল কিন্তু এখনো তার খোঁজ আমরা পাইনি। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদেও পাওয়া যায়নি ফোন। আমরা তার নম্বর ট্রেকিং করে রেখেছি। ফোন বন্ধ থাকায় লোকেশনও সনাক্ত করা যাচ্ছে না। আমরা ফোনটি উদ্ধারের জন্য বিভিন্ন মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।”
ঢাকা/রেজাউল/এস