অভিনয়ে পা রাখতে যাচ্ছেন মালায়ালাম সিনেমার সুপারস্টার মোহনলালের কন্যা বিস্মায়া মোহনলাল। ‘টুডাককাম’ সিনেমার মাধ্যমে অভিনেত্রী হিসেবে বড় পর্দায় তার অভিষেক হবে। সিনেমাটির ফার্স্ট লুক পোস্টার শেয়ার করে এই ঘোষণা দেন মোহনলাল।
বুধবার (২ জুলাই) মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে একটি পোস্ট দিয়েছেন মোহনলাল। তাতে এই অভিনেতা লেখেন, “প্রিয় মায়াকুট্টি, ‘টুডাককাম’ দিয়ে সিনেমার সঙ্গে তোমার আজীবন প্রেমের প্রথম দাপ হোক।”
ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, ‘টুডাককাম’ সিনেমা রচনা ও পরিচালনা করছেন জুড অ্যান্থনি জোসেফ। আশীর্বাদ সিনেমার ব্যানারে অ্যান্থনি পেরুম্বাভুর এটি প্রযোজনা করেছেন।
আরো পড়ুন:
দ্বিগুণ পারিশ্রমিক চাইছেন শ্রীলীলা
প্রাক্তন অভিনেত্রী সানা খানের মা মারা গেছেন
ভারতের দক্ষিণী সিনেমার বরেণ্য অভিনেতা মোহনলাল। অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন তিনি। স্বীকৃতিস্বরূপ পেয়েছেন পাঁচবার ভারতের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। পদ্মশ্রী পুরস্কারেও ভূষিত হয়েছেন এই শিল্পী।
ব্যক্তিগত জীবনে সুচিত্রা মোহনলালের সঙ্গে সংসার বেঁধেছেন মোহনলাল। এ সংসারে প্রণব মোহনলাল (পুত্র) ও বিস্মায়া মোহনলাল (কন্যা) নামে দুটি সন্তান রয়েছে। এরই মধ্যে পুত্র প্রণব চলচ্চিত্রে পা রেখেছেন। বেশ কিছু চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। তবে কয়েক বছর আগে বিস্মায়া সহকারী পরিচালক হিসেবে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। এবারই প্রথম অভিনয়ে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছেন।
আগে থেকেই সৃজনশীল কাজের সঙ্গে যুক্ত বিস্মায়া। ছবি আঁকা ও লেখালেখি করতে ভালোবাসেন। ‘গ্রেইনস অব স্টারডাস্ট’ নামে তার একটি কবিতার বই প্রকাশিত হয়েছে। তাছাড়া মার্শাল আর্টে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন বিস্মায়া।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চলচ চ ত র ম হনল ল
এছাড়াও পড়ুন:
মারিয়া মান্দার লেখা: লড়ি মাঝমাঠে, লড়ি জীবনের মাঠেও
ধোবাউড়ার মন্দিরগোনা গ্রামে জন্ম আমার। আমি গারো সম্প্রদায়ের মেয়ে। গারোরা এমনিতেই অনগ্রসর। তবে গারো হিসেবে আমার ফুটবল ক্যারিয়ারে বাধা আসেনি। কেউ বলেনি যে ফুটবল খেলো না। আমার সম্প্রদায় নিরুৎসাহিত করেনি কখনো। তবে মেয়ে হিসেবে আমরা যে গ্রামাঞ্চলে খেলাধুলা করেছি, তাতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে।
বলা হতো, গ্রামের মেয়েরা কেন ফুটবল খেলবে! তা-ও আবার হাফপ্যান্ট পরে! এটাই ছিল সবচেয়ে বড় বাধা। রক্ষণশীল সমাজ থেকে নিষেধ করা হতো ফুটবল খেলতে। বাধাটা পেয়েছি আদতে এলাকার কিছু মানুষের কাছ থেকে।
অনেকে আমার মাকে বলতেন, ‘মেয়েকে খেলতে দিয়েছেন, এটা ভালো না।’ অভিভাবকেরা মেয়েদের নিষেধ করতেন ফুটবল খেলতে। বলা হতো, মেয়েরা ফুটবল খেলতে পারবে না।
বাধা পেরিয়েতারপরও কলসিন্দুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কোচ মফিজ উদ্দিন স্যার থেমে থাকেননি। সঙ্গে ছিলেন মিনতি রানী শীল ম্যাডাম। সপ্তাহে এক দিন-দুই দিন অভিভাবকদের সভা ডাকতেন; বোঝাতেন, কেন মেয়েদের খেলার সুযোগ দেওয়া উচিত। তাঁদের নেতৃত্বে আমরা ছোটবেলা থেকেই ফুটবল-পাগল হয়ে উঠেছিলাম, বাধা দিলেও অনেকে লুকিয়ে খেলত। তবে খেলার জগতে আসতে পরিবার থেকে বাধার মুখে পড়তে হয়নি বলে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি।
তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ার সময়ই বাবা বীরেন্দ্র মারাক মারা যান। তাঁর কোনো স্মৃতি আমার মনে নেই। ঘরে তাঁর কোনো ছবি নেই, চেহারাটাও মনে করতে পারি না। তাই বাবার স্নেহ কাকে বলে, তা ঠিক জানি না। বাবার মৃত্যুর পর আমাদের চার ভাইবোনকে একাই বড় করেছেন মা—এনতা মান্দা।
গারোরা ধান কাটা, ধন বোনার কাজই বেশি করেন। আমার মা-ও সেটাই করতেন। আমাদের লালন–পালনের জন্য প্রতিদিন যে পরিশ্রম তিনি করেছেন, সেটা সত্যিই অসাধারণ। ধান কাটার কাজ মানে দৈনিক মজুরি, আমাদের নিজের জমি ছিল না, অন্যের জমিতে কাজ করতেন মা। দিনে পেতেন মাত্র ২০০ টাকা। এই টাকায় সংসার চলত না। ঋণ করতে হতো। ছোটবেলা থেকে মা ঘামে, চোখের জলে এগিয়ে নিয়েছেন আমাদের। তাঁর সেই পরিশ্রম আর ত্যাগের মধ্যেই আমার শৈশব কেটেছে।
ময়মনসিংহের কলসিন্দুর গ্রামে নিজ বাড়ির উঠানে কিশোরী মারিয়া মান্দার অনুশীলন