২৩ জুলাই ’৪৭, বুধবার

বেলা ১টায় লীগ অফিসে গেলাম। সেখান থেকে ডাক্তার করিমকে নিয়ে কামরুদ্দীন সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে গেলাম। তার সঙ্গে সাড়ে ৩টা পর্যন্ত আলাপ হলো। এরপর লীগ অফিসে ফিরে এলাম।

নগরীর বাইরের অর্থাৎ জিনারদির ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যরা বিকেল ৫টায় সালার-এ-সুবা জনাব মোহাজেরের সঙ্গে দেখা করলেন। কালু মিয়া ও ডা.

এম এম খান এ সময় উপস্থিত ছিলেন। নগর লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও কার্যকরী কমিটির সদস্যদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা আসেননি। জনাব মোহাজের সভায় ভাষণ দিলেন এবং ন্যাশনাল গার্ডের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব ব্যাখ্যা করলেন। ডা. এম এম খান নেতা ও কর্মকর্তাদের দুর্নীতির অভিযোগ করলেন এবং তিনি অপ্রাসঙ্গিক বিষয়েই বেশি কথা বলছিলেন। জনাব মোহাজেরকে অসন্তুষ্ট মনে হচ্ছিল। তিনি বিকেল ৫-৪৫ মিনিটে চট্টগ্রামের উদ্দেশে চলে গেলেন। 

অলি আহাদ সন্ধ্যা ৬টায় আজিজ সাহেব ও আমাকে কামরুদীন সাহেবের কাছে নিয়ে গেলেন। মি. তোয়াহা সেখানে উপস্থিত ছিলেন পরে মহিউদ্দিন এলেন। অন্যরা চলে গেলে কামরুদ্দীন সাহেব, তোয়াহা সাহেব, অলি আহাদ ও আমি আমাদের ম্যানিফেস্টো সম্পর্কে আলাপ করলাম। সিদ্ধান্ত হলো ৩ আগস্ট বিভিন্ন জেলার কর্মীদের একটা সভা ডাকা হবে। ম্যানিফেস্টোটি গ্রহণ করতে হলে শামসুল হক সাহেবকে কাজের ধারা (Process of work) থেকে সরিয়ে রাখতে হবে। রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত আলোচনা হলো। 

তারপর মাহুতটুলী রোডে বাহাউদ্দিনের সঙ্গে ছাত্ররাজনীতি নিয়ে কথা হলো সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। রাত ১২টায় বাসায় ফিরে এলাম। 

আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত মাঝে মাঝে বিরতি দিয়ে বৃষ্টি হয়েছে।

২৩ জুন ১৯৫০, শুক্রবার

ভোর সাড়ে ৫টায় ঘুম থেকে উঠেছি।

সোয়া ৮টায় কামরুদ্দীন সাহেবের সঙ্গে দেখা করলাম এবং আইজিপিকে দেওয়ার জন্য representaion-এর একটা কপি হস্তান্তর করে ফিরে এলাম। সন্ধ্যা ৬টায় আবার কামরুদ্দীন সাহেবের বাসায় গেলাম, তাঁকে না পেয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সেখানে বসে থেকে ফিরে এলাম।

আবহাওয়া: মেঘাচ্ছন্ন আকাশ, বিশেষ করে দুপুরের পর থেকে। বিকেলে ও রাতে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হলো।

২৩ জুলাই ’৫১ সোমবার

সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠেছি। দুপুর আড়াইটায় কোর্টে গেলাম। ভাওয়াল সিডব্লিউ এস্টেটের ম্যানেজারের মাধ্যমে পেশকারের কাছ থেকে বেলায়েত হোসেনের জন্য সমন নিলাম।

গচার সিরাজ হক, হামিদ মোক্তার, সাদির, এস এ রহিম, মমতাজ, কুদরত আলী, ফজলু, ইউনুস, আহমদ মাস্টার ও আরও অনেকের সঙ্গে কোর্টে দেখা হলো। মমতাজ মোক্তার বিনোদ ও ইদ্রিসের নথিপত্র জনাব সালামের কোর্টে ভুলতে সহায়তা করল। বিকেল ৫টায় কোর্ট ছাড়লাম।

কামরুদীন সাহেবের সঙ্গে তার বাসায় দেখা করলাম। সেখানে কাঁঠাল, পিঠা, চাসহ নাশতা করলাম। সবেদ আলী ডাক্তার সেখানে এসেছিলেন। বিকেল ৬টায় বের হলাম।

৫১ বংশালে গেলাম। সেখানে হাকিম, আজিজ, আহমদ, সালেহ আহমদ প্রমুখের সঙ্গে দেখা হলো। মাত্র কয়েক মিনিট তাদের সঙ্গে কথা বললাম। আহমদের সঙ্গে এফএইচএম হলে গেলাম। হলের বাইরে আ. হাকিমের সঙ্গে দেখা হলো। রুহুল আমিন চৌধুরী, ফজলুল হক, মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে দেখা হলো হলের ভেতরে। 

প্রায় ২০ মিনিট পর রেসকোর্সে গেলাম এবং একটি পুলের কাছে ঘাসের ওপর কিছুক্ষণ বসে থাকলাম। সেখানে শাহাবুদদীন ও সালাহউদ্দীনের দেখা পেলাম। আহমদ আমাকে শ্রীপুর স্কুলে যত দ্রুত সম্ভব যোগদানের অনুরোধ করে চলে গেল। আমি ১০.৮.৫১ তারিখে সেখানে যোগ দিতে সম্মত হলাম।

রাত সাড়ে ৮টায় বাসায় ফিরলাম। 

রাত সাড়ে ১১টায় বিছানায় গেলাম। 

আবহাওয়া: প্রখর রৌদ্রমাত দিন। রাত ১০টা পর্যন্ত প্রচণ্ড গরম। তারপর বাতাস ও কয়েক মিনিটের গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি তাপমাত্রা কমিয়ে দিল। রাতের বাকি সময় তাপমাত্রা কম ছিল।

২৩ জুলাই ১৯৫২, বুধবার

ভোর সাড়ে ৫টায় উঠেছি।

সকাল ১১টায় ইমাদুল্লাহর মামলায় যোগ দিলাম। কামরুদীন আহমদ দুই জন সাক্ষীকে জেরা করলেন। তারা হলেন ইকবাল হলের রোস্তোরাঁ দেখভালকারী। বেলা ২টায় যোগীনগর ফিরলাম।

কেমব্রিজ ফার্মেসিতে গেলাম বিকেল ৫টায়। ডা. করিমকে নিয়ে আমার জন্য শার্টের কাপড় ইত্যাদি কিনলাম। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মৌলভীবাজারে নওবেলাল অফিসে গেলাম। ৩ মাসের পত্রিকার জন্য ফয়জুদ্দিনের নামে ২ টাকা জমা করলাম। মোহাম্মদ আলী সাহেবকে পেলাম না।

হায়দার সাহেবের সঙ্গে তার দোকানে দেখা করলাম। যোগীনগর ফিরলাম রাত সাড়ে ৮টায়। তোয়াহা সাহেবের সঙ্গে ভাবির সাক্ষাৎকার ছিল বিকেল ৪টায়। ভাবিকে তার বাবা নিয়ে যান। ডা. করিমের পরামর্শে তারই কাছে গ্র্যাজুয়েট স্কুলের সেক্রেটারি বরাবর চাকরির জন্য আমি একটি দরখাস্ত রেখে এলাম।

বিছানায় গেলাম রাত সাড়ে ১১টায়।

আবহাওয়া: বিকেল ও রাতে বিরতি দিয়ে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি । নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশ।

জুলাই ২৩, শুক্রবার, ১৯৫৪

সকাল সাড়ে ছয়টায় উঠেছি।

বলতে গেলে সকালে খিরাটির হাবিবুর রহমান আমাকে ঘুম থেকে তোলে। তার পেছনেই ডা. হসানউদ্দীন এলেন। তিনি দক্ষিণ মৈসুন্দীতে যে বাড়ি কিনেছেন, কীভাবে তার দখল নেওয়া যায়, সে ব্যাপারে কথা বললেন। এরপর সকাল আটটার দিকে তিনি কোর্টে হাজিরা দিতে চলে যান।

গতকাল হাবিবুর রহমান ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তির জন্য সাক্ষাৎকার দিতে ঢাকা এসেছে। সেখানে তার ভর্তি হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমি তাকে মিটফোর্ড স্কুলে এলএমএফ কোর্স করার পরামর্শ দিই। সে দুপুর ১২টার দিকে চলে যায়।

বেলা ১১টার দিকে কুরিয়াদির মোসলেহউদ্দীন এলেন গল্পগুজব করে দুপুর সাড়ে ১২টায় চলে গেলেন। বিকেল চারটার দিকে আসাদুল্লাহ সরকার সাহেবের ছেলে আবদুর রশীদ কাপাসিয়া ইউনিয়ন সম্পর্কে কথা বলতে আমার সঙ্গে দেখা করে। আমি তাকে এ ব্যাপারে আমার প্রতিবেদন দেখাই। বিকেল পাঁচটার দিকে সে চলে যায়।

সারা দিনের মধ্যে আমি বের হইনি।

রাত সাড়ে ১০টার দিকে কুলগঙ্গার বারু ব্যাপারী আবদুল হাইকে সঙ্গে নিয়ে আসে। এরা রাতে এখানে থেকে গেল।

রাত সাড়ে ১১টায় ঘুমাতে গেলাম।

আবহাওয়া: বেলা একটা থেকে দুইটার মধ্যে হালকা বৃষ্টি। সহনীয় গরম দিন। বেশ ভালো বাতাসসহ সহনীয় রাত। সব মিলে পরিষ্কার রাত।

বেলা তিনটার দিকে লতিফপুরের আবদুল গনি মিয়া আমার কাছে আসেন। প্রায় আধঘণ্টা পর তিনি চলে যান। তিনি আমাকে বলেন, দিগধার আতা মিয়া উচ্চ মাদ্রাসা পরীক্ষায় এ বছর পাস করেছে। আমি তার কাছে দুই টাকা পাব বলে তিনি আমাকে দুই টাকা দেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য করল ম ১১ট য় করল ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিয়ানীবাজারে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ফয়সল আহমদ চৌধুরী

পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনার সঙ্গে আঁতাত করে একটি গোষ্ঠী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ করেছেন জেলা বিএনপির সদস্য ফয়সল আহমদ চৌধুরী। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ (গোলাপগঞ্জ-বিয়ানীবাজার) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী এই নেতা বলেন, বাংলাদেশ একটি সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচনের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। নির্বাচনী উৎসবে মেতে উঠতে সবাই প্রস্তুত।

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার দুবাগ ইউনিয়নের খাড়াবড়া বাজারে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ শেষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথাগুলো বলেন। দুবাগ ইউনিয়ন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফার পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে এ সভার আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় ফয়সল আহমদ চৌধুরী আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নে আবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ‘একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী দেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চায়। তাদের লক্ষ্য স্বৈরাচারকে ফিরিয়ে এনে এ দেশকে আবারও ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়া। কিন্তু দেশপ্রেমিক জনতা সে ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে দেবে না। বাংলার মাটিতে আগামী ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকে জাতীয় নির্বাচন হবেই, ইনশা আল্লাহ।’

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলছে অভিযোগ করে ফয়সল আহমদ চৌধুরী বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় দল বিএনপি। কিন্তু বিস্ময়করভাবে বিএনপির সুপারিশ, মতামত, নোট অব ডিসেন্ট এসবকে পাশ কাটিয়ে গেছে ঐকমত্য কমিশন। বিএনপির মতামত, প্রস্তাবকে উপেক্ষা করেছে তারা। এই কমিশন ঐকমত্যের বদলে অনৈক্য কমিশন হয়ে গেছে। ২৫টি রাজনৈতিক দল যে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল, সেই সনদের সঙ্গে কমিশনের সুপারিশের মিল নেই। এগুলো দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ইউনিয়ন বিএনপির ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক নিয়াজ উদ্দিন। জেলা যুবদলের সদস্য এবি কালাম ও উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য শহিদুল ইসলামের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির উপদেষ্টা এম এ মান্নান, বিয়ানীবাজার উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছরওয়ার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, যুগ্ম সম্পাদক মিছবাহ উদ্দিন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজধানীর দক্ষিণখানে নিজ বাসা থেকে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার
  • নির্বাচনের আগে একটি দল জাতির মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করতে চায়: সালাহউদ্দিন আহমদ
  • টেকনাফে মোটরসাইকেলে বাসের ধাক্কা, নিহত ১
  • বিয়ানীবাজারে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণ করলেন বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ফয়সল আহমদ চৌধুরী
  • বিএনপি কর্মীর বাড়ি থেকে ১১টি বন্দুক, ২৭টি দা-ছুরি উদ্ধার
  • মওদুদ আহমদের স্বস্তি-অস্বস্তির আত্মজীবনী
  • বাতিল হচ্ছে ১২৮ জুলাই যোদ্ধার গেজেট