সরকারের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ স্পষ্ট: ভিপি নুর
Published: 25th, July 2025 GMT
সরকার সদ্য গঠিত একটি রাজনৈতিক দলকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করছে বলে অভিযোগ করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
তিনি বলেন, “সরকারের এমন আচরণ শুধু গণঅধিকার পরিষদ নয়, দেশের অধিকাংশ সচেতন নাগরিক ও রাজনৈতিক মহলের কাছেই প্রশ্নবিদ্ধ।”
শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেলে কুমিল্লা টাউন হল মাঠে ‘গণঅভ্যুত্থানের জনআকাঙ্ক্ষা ও রাষ্ট্র সংস্কার’ শীর্ষক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
বিপদ কেটে গেলে মানুষ উৎফুল্ল হয়, অহঙ্কারী হয় দেখতে পাচ্ছি: নুর
নুরের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের
নুরুল হক নুর বলেন, “সরকার চারটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপে গেলেও একটি সদ্য জন্ম নেওয়া, নিবন্ধনহীন দলকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিচ্ছে। এনসিপির প্রতি সরকারের এই সহযোগিতা পূর্বের ‘কিংস পার্টি’ গঠনের মতোই একটি নজির।”
তিনি আরো বলেন, “নির্বাচনের আগে সরকার যদি নিরপেক্ষ আচরণ নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তবে দেশবাসী নিরপেক্ষ সরকারের দাবি জানাতেই পারে। নির্বাচনের আগেই একটি নিরপেক্ষ সরকারের প্রয়োজন দেখা দিতে পারে।”
কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসছে, ফ্যাসিবাদীদের দোসররা তত বেশি দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাচ্ছে। তাই জনগণ আজ আওয়ামী লীগকে স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধের দাবি তুলছে।”
সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খানসহ কুমিল্লা জেলা ও মহানগর কমিটির নেতারা।
ঢাকা/রুবেল/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন র ল হক ন র সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’