গাজীপুর নগরের সাহাপাড়া এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালকদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করছিলেন স্থানীয় কয়েকজন যুবক। এ ঘটনায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে পুলিশের সামনেই স্থানীয় এক সংবাদকর্মী বেধড়ক মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

গতকাল বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে সাহাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত সাংবাদিকের নাম আনোয়ার হোসেন (৩৫)। তিনি দৈনিক বাংলাদেশের আলো পত্রিকার গাজীপুরের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত। ওই সংবাদকর্মীকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, সাত থেকে আটজন যুবক ওই সংবাদকর্মীকে বেধড়ক পেটাচ্ছেন। একপর্যায়ে ইট দিয়ে তাঁর মুখ ও মাথায় আঘাত করা হচ্ছে। এতে তাঁর মুখ ও কপাল বেয়ে রক্ত বের হচ্ছে। পাশেই পুলিশ সদস্যদের দেখা যায়। পুলিশ সদস্যরা কিছুক্ষণ পর তাঁকে উদ্ধার করে গাড়িতে নিয়ে যান।

এ ঘটনায় আহত সাংবাদিকের মা আনোয়ারা সুলতানা গাজীপুরের সদর থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ বলা হয়েছে, আসামিরা নগরের সাহাপাড়া এলাকায় প্রতিটি অটোরিকশা থেকে প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ টাকা চাঁদা উত্তোলন করেন। এ ঘটনায় আনোয়ার সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে আসামিরা টের পেয়ে যান। পরে স্থানীয় চাঁদাবাজদের সহযোগিতায় ১৫ থেকে ১৬ জন তাঁর ওপর হামলা করেন। এরপর হত্যার উদ্দেশ্য একটি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করেন। এ সময় তাঁরা দুটি মোবাইল ফোন ও ২৬ হাজার ২৫০ টাকা ছিনিয়ে নেন। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন এসে অর্ধমৃত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।

আনোয়ারা সুলতানা বলেন, ‘আমার ছেলে একজন সাংবাদিক। কোনো অপরাধ ছাড়াই তাঁকে নির্মমভাবে মেরেছে। হাসপাতালে ছেলেকে নিয়ে রয়েছি। তবে আমরা আতঙ্কিত।’ এ সময় তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতেও ভয় পাচ্ছিলেন।

গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

মেহেদী হাসান বলেন, এ ঘটনায় একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত আছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এ ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

চিহ্নিত গণহত্যাকারীদের ছবি প্রদর্শন করে ঢাবিকে কলঙ্কিত করেছে শিবির, বিবৃতিতে ছাত্র ইউনিয়ন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে জুলাই গণ–অভ্যুত্থান দিবসে চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধী ও গণহত্যাকারীদের ছবি প্রদর্শন করে জাতির গৌরবময় ইতিহাসকে ইসলামী ছাত্রশিবির বিকৃত করেছে বলে অভিযোগ করেছে ছাত্র ইউনিয়ন। অবিলম্বে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী সংগঠন হিসেবে ক্যাম্পাসে শিবিরের কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের সভাপতি তামজিদ হায়দার ও সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকারের পাঠানো যৌথ বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়। বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে পক্ষপাতমূলক আচরণের অভিযোগ তুলে প্রক্টরের অপসারণ দাবি করেছে সংগঠনটি।

ছাত্র ইউনিয়নের বিবৃতিতে বলা হয়, ’৯০–এর সামাজিক চুক্তি অনুযায়ী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সাম্প্রদায়িক-ফ্যাসিস্ট সংগঠনের কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্লজ্জভাবে শিবিরকে নরমালাইজ করার চেষ্টা করেছে। ঢাবি প্রক্টরের পক্ষপাতমূলক আচরণ শিবিরের এই জঘন্য কাজকে উৎসাহিত করেছ। তাঁর এ রাজনৈতিক পক্ষপাতমূলক আচরণ আগামী দিনের সহাবস্থানের রাজনীতি তৈরিতে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘ঢাবি প্রক্টর ক্যাম্পাসের ভেতরে তোফাজ্জল ও সাম্য হত্যাকাণ্ড, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদমূলক গ্রাফিতি মুছে ফেলা, চারুকলার ভেতরে ঢুকে শোভাযাত্রার মোটিফে আগুন দেওয়া, একাধিক যৌন নিপীড়নের অভিযোগ আমলে না নেওয়াসহ নানা অভিযোগের সুষ্ঠু বিচারে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। অতএব ঢাবি প্রক্টরকে অপসারণ না করলে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের মতোই শিবিরের দলীয় আধিপত্য কায়েম হবে।’

চব্বিশের নাম দিয়ে একাত্তরকে অবমূল্যায়নের মাধ্যমে ছাত্রশিবির জুলাই গণ–অভ্যুত্থান পরিপন্থী অবস্থান নিয়েছে বলে বলা হয়েছে ছাত্র ইউনিয়নের বিবৃতিতে। এতে বলা হয়, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে রাজনীতিতে পুর্নবাসনের সুযোগ পেয়ে স্বাধীনতাবিরোধী গণহত্যকারীদের উদ্‌যাপনের চেষ্টা গণ–অভ্যুত্থানকে জনতার কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে নিজেদের পকেটস্থ করার অপচেষ্টা বলে আমরা মনে করি। এর আগেও ছাত্রশিবির মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মান করে তাদের নিজস্ব প্রকাশনায় বিতর্কিত লেখা ছেপে বাংলাদেশবিরোধী রাজনীতি জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ