ফিলিস্তিনের গাজায় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে অন্তত ৭ জন নিহত এবং ৪৪ জন আহত হয়েছেন।

আজ শুক্রবার ইসরায়েলের বিমান থেকে গাজার বিভিন্ন স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়েছে বলে আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এ হামলায় নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ইসলামিক জিহাদ গোষ্ঠীর সামরিক শাখা আল-কুদস ব্রিগেডের কমান্ডার তায়সির আল-জাবারি রয়েছেন। গাজা শহরের কেন্দ্রস্থলের প্যালেস্টাইন টাওয়ারের একটি অ্যাপার্টমেন্টে হামলায় তিনি নিহত হন বলে ইসলামিক জিহাদ জানিয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় আল-জাবারি, একটি পাঁচ বছরের মেয়েসহ অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। আহত অন্তত ৪৪ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এদিকে ইসরায়েল সেনাবাহিনীর মুখপাত্র রিচার্ড হেক্ট বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, অভিযানে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। তবে অভিযান এখনো শেষ হয়নি।’

গাজা শহরে আক্রান্ত ভবনের সপ্তম তলা থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে। ভবনের বাসিন্দাদের উদ্ধার এবং আগুন নেভাতে সিভিল ডিফেন্স টিমের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেছেন।

গায়ের কাপড়ে রক্তমাখা অবস্থায় সেখানকার এক বাসিন্দা আল-জাজিরাকে বলেছেন, ‘আমরা মাত্র দুপুরের খাবার খেয়েছি এবং আমার সন্তানেরা খেলছিল। হঠাৎ আমাদের টাওয়ারে একটি বিকট বিস্ফোরণ ঘটে। আমরা দৌড়ে বেরিয়ে আসি। আমি আহত অনেককে দেখেছি। তাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে।’

এ ছাড়া গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় খান ইউনিস ও রাফা এলাকা এবং পাশের আল-সুজাইয়া এলাকায়ও হামলা হয়েছে।

অধিকৃত পশ্চিম তীর থেকে পিআইজের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্যকে গ্রেপ্তার করার পর কয়েক দিন ধরে চলা উত্তেজনার পর ইসরায়েলি বাহিনী এ বিমান হামলা চালিয়েছে। গাজাভিত্তিক পিআইজে ইসরায়েলে কেন্দ্রীয় এলাকায় পাল্টা বোমা হামলার হুমকি দিয়েছে।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইয়ার লাপিদ বলেছেন, ‘ইসরায়েল সন্ত্রাসী সংগঠনকে অ্যাজেন্ডা নির্ধারণ করতে দেবে না। ইসরায়েলের ক্ষতি করার জন্য কেউ উঠে দাঁড়ালে তার কাছে আমরা পৌঁছে যাব। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনী ইসরায়েলের নাগরিকদের হুমকি দূর করতে ইসলামিক জিহাদের সদস্যদের দমন করবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল ইসর য

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের ঘোষণা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলোতে ছাত্ররাজনীতি বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। হলগুলোতে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কোনো ধরনের রাজনীতি করা যাবে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘোষণায় ছাত্রনেতারা মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ইতিমধ্যে এই নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনসহ শিক্ষার্থীদের নানা পর্যায়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি থাকা না–থাকা নিয়ে আলোচনা চলছে।

গত শুক্রবার গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আবাসিক হলে রাজনীতি বন্ধের ওই ঘোষণা দেয়। তবে গতকাল শনিবার দিনভর এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য আসেনি। এ বিষয়ে করণীয় ও রূপরেখা ঠিক করতে গতকাল দুপুর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত হল প্রভোস্টসহ বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বৈঠক করেছে বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ। তিনি বলেছেন, এ বিষয়ে আজ রোববার বিকেলে ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করবেন তাঁরা।

জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল গত শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি আবাসিক হলের জন্য সংগঠনটির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে। এরপর ওই দিন মধ্যরাতে হলে রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীদের একটি অংশ। বিভিন্ন হল থেকে কয়েক শ ছাত্র–ছাত্রী বাইরে বেরিয়ে আসেন। রাত একটার দিকে শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ শেষে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন তাঁরা। শুক্রবার রাত দুইটার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খান ও প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁদের সঙ্গে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের প্রায় এক ঘণ্টা আলাপ-আলোচনা হয়। তখন উপাচার্য বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই হল প্রভোস্টের নেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে।’ পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, ‘হল পর্যায়ে ছাত্ররাজনীতি নিয়ন্ত্রিত থাকবে।’ উপাচার্যের এ বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা ‘না, না’ বলে আপত্তি জানান এবং হলগুলোতে সম্পূর্ণভাবে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি করেন। পরে রাত তিনটার দিকে বিক্ষোভের মুখে প্রক্টর সাইফুদ্দীন আহমেদ হলগুলোতে ‘প্রকাশ্য ও গুপ্ত রাজনীতি’ নিষিদ্ধ করার ঘোষণা দেন।

শিক্ষার্থীরা প্রক্টরের আশ্বাসে উল্লাস প্রকাশ করে হলে ফিরে যান। প্রক্টরের ওই ঘোষণার আধঘণ্টা পর স্যার এ এফ রহমান হলের প্রভোস্ট অফিস থেকে এক প্রজ্ঞাপন আসে। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘বিভিন্ন রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের কমিটিভুক্তরা পদত্যাগ ও মুচলেকা প্রদান সাপেক্ষে হলে অবস্থান করতে পারবেন। অন্যথায় তাদের হল থেকে বহিষ্কার করা হবে।’

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত বছরের ১৫ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছিল ছাত্রলীগ। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দিন পর ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতিরোধের মুখে বিতাড়িত হয় ছাত্রলীগ। সে সময় শিক্ষার্থীরা প্রতিটি হলের হল প্রাধ্যক্ষদের কাছ থেকে আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকবে—এমন বিজ্ঞপ্তিতে স্বাক্ষর নেয়। মূলত সেই বিজ্ঞপ্তির আলোকে শিক্ষার্থীরা আবাসিক হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকা সত্ত্বেও ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করায় ক্ষোভ জানায়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণার প্রতিবাদে শুক্রবার মধ্যরাতে রোকেয়া হলের ছাত্রীরা হলের তালা ভেঙে বেরিয়ে এসে রাজু ভাস্কর্যের সামনে বিক্ষোভ করেন

সম্পর্কিত নিবন্ধ