ব্যাংকের বেনামী ঋণ বন্ধ হয়েছে, আমানতকারীদের আস্থা ফিরছে
Published: 9th, August 2025 GMT
গণঅভ্যুত্থানের পর ২০২৪ সালের আগস্টে নানামুখী সংকটের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। ওই সময় দেশের ব্যাংকিং খাতে বিশৃঙ্খলা ছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নামে-বেনামে ঋণের নামে অর্থ সরিয়ে নেয়ায় তারল্য সংকটের কারণে ব্যাংকগুলো আমানতকারীদের চাহিদামতো অর্থ দিতে পারত না। প্রবাসী আয়ে ছিল ভাটা। বৈদেশিক মুদ্রা (ডলার) বাজারে ছিল অস্থিতিশীলতা। রিজার্ভ ও টাকার মান ছিল নিম্নমুখী। মূল্যস্ফীতি ছিল উর্ধ্বমুখী। এ সব সমস্যা কাটিয়ে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে নানা উদ্যোগ ও পদক্ষেপ বাস্তবায়ন করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বছরের ব্যবধানে এ সব উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতে বন্ধ হয়েছে বেনামী ঋণ, কেটেছে অস্থিতিশীলতা, আস্থা ফিরছে আমানতকারীদের।
ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ব্যাংকিং খাত থেকে নামে-বেনামে ঋণের নামে অর্থ সরিয়ে নেয়া হয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। তাতে অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি হয়। ব্যাংকগুলো তারল্য সংকটে পড়ে। ওই সরকারের আমলে বৈদেশিক মুদ্রা (ডলার) বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। মুদ্রা বাজার নানা চেষ্টা করেও স্থিতিশীলতায় ফেরানো সম্ভব হয়নি। শুধু তাই নয়, নামে-বেনামে ঋণ নেয়া ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানগুলো খেলাপি হওয়ার পরও নানা নীতি সহায়তার নামে তাদের সুবিধা করে দেয়া হয়। প্রকৃত খেলাপির চিত্র গোপন করা হয়। তাতে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে এই খাত। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ওই সরকার বিদায় নেয়ার পর অর্থনীতির ভঙ্গুরদশায় দায়িত্ব নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর নিয়োগ দেয়া হয়। দায়িত্ব নিয়ে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি গঠন করে। ব্যাংকিং খাতে গতি ফেরাতে ব্যাংকিং টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি আর্থিক খাত তথা ব্যাংকিং খাতের নানা সমস্যা চিহ্নিত করে। একই সঙ্গে এই খাতে সুশাসন নিশ্চিত করতে নানা সমাধানের পথ দেখিয়ে দেয়। এরপর একটি রোডম্যাপের মাধ্যমে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে কাজ করতে থাকে অন্তর্বর্তী সরকার।
নতুন গভর্নর ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফেরাতে বেশ কিছু ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ভেঙে পুনর্গঠন করে দেয়। আমানতকারীদের স্বার্থে সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, বৈদেশিক মুদ্রা বাজার স্থিতিশীল করতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়। বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। আমদানি ও রপ্তানিতে ওভার-আন্ডার ইনভয়েসিং ঠেকাতে নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। গোপন খেলাপি ঋণ প্রকাশ করা হয়েছে।
আরো পড়ুন:
আহ্ছানউল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে মাইক্রোবাস উপহার দিল পূবালী ব্যাংক
ব্যাংকের পর্ষদ-পরিচালকদের দায়িত্ব নিয়ে নতুন নীতিমালা
নানামুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে মুদ্রা বাজার স্থিতিশীল হয়েছে। ব্যাংকগুলোর প্রতি আমানতকারীদের আস্থা ফিরেছে। বৈধ পথে আসা প্রবাসী আয়ে গতি ফিরেছে। একই সঙ্গে দাতা সংস্থার ঋণ এসেছে। যা রিজার্ভ বাড়তে ভূমিকা রেখেছে। নেয়া হয়েছে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি। এসব নানা পদক্ষেপের কারণে ব্যাংক খাত ঘুরে দাড়াচ্ছে অপরদিকে মূল্যস্ফীতিও কমেছে। তাছাড়া ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন, বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার সংশোধন করার মতো সংস্কার কার্যক্রমের উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ সব উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে আমানতকারীরা নিরাপত্তা পাবে। ব্যাংকিং খাত থেকে যারা নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে অর্থ সরিয়ে নিয়েছে, সেগুলোর আর পুনরাবৃত্তি ঘটবে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড.
তিনি বলেন, ‘‘নতুন ব্যাংক কোম্পানি আইন প্রণয়নের কাজ প্রায় শেষ। খসড়া এরই মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। আইনটি পাস হলে আর্থিক খাত একটি নির্দিষ্ট শৃঙ্খলায় ফিরবে। ভবিষ্যতে যেন ফ্যাসিবাদের পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সে নিশ্চয়তা মিলবে।’’
টাস্কফোর্স গঠন
ব্যাংকিং খাত সংস্কারের লক্ষ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এতে আর্থিক খাত বিষয়ে অভিজ্ঞ ছয়জনকে সদস্য করা হয়েছে। টাস্কফোর্সের সমন্বয়ক রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। টাস্কফোর্সের ছয় সদস্য হলেন, প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়সংক্রান্ত বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী, সাবেক ডেপুটি গভর্নর মুহাম্মদ এ (রুমি) আলী, ব্র্যাক ব্যাংকের চেয়ারম্যান মেহরিয়ার এম হাসান, বিশ্বব্যাংক ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন, জেডএনআরএফ ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সের উপাচার্য এম জুবায়দুর রহমান ও হিসাববিদ কোম্পানি হুদা ভাসি চৌধুরীর অংশীদার সাব্বির আহমেদ। এই টাস্কফোর্স প্রধানত আর্থিক স্থিতিশীলতা রক্ষার্থে ব্যাংকিং খাতের বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি, মন্দ সম্পদ, প্রধান ঝুঁকিগুলো নিরূপণ করবে।
এ ছাড়া দুর্বল ব্যাংকগুলোর আর্থিক সূচক পর্যালোচনা, ঋণের প্রকৃত অবস্থা নিরূপণ, নিরাপত্তা সঞ্চিতির ঘাটতি নিরূপণ, তারল্য পরিস্থিতি পর্যালোচনা, নিট মূলধন নির্ণয়, সম্পদের প্রকৃত মূল্য নির্ধারণ, সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের মন্দ সম্পদকে পৃথকীকরণ–সংক্রান্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবে।
এই টাস্কফোর্স আর্থিক খাতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আইন যেমন ব্যাংক কোম্পানি আইন, বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ইত্যাদির সংস্কার এবং সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি, ব্যাংক অধিগ্রহণ ও একীভূতকরণ–সংক্রান্ত আইন প্রণয়ন, সংস্কার ও যুগোপযোগীকরণের প্রস্তাব দেবে এবং ব্যাংকিং খাতের শ্বেতপত্র প্রকাশের পদক্ষেপ নেবে।
খেলাপি ঋণ
ব্যাংকগুলোর প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে জুনভিত্তিক খেলাপি ঋণের হিসাব তৈরি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৮ কোটি টাকা। ব্যাংক খাতের মোট ঋণের যা প্রায় ৩০ শতাংশ। এক বছরে বেড়েছে ৩ লাখ ১৯ হাজার কোটি টাকা বা ১৫১ শতাংশ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চের তুলনায় তিন মাসের ব্যবধানে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১ লাখ ১০ হাজার ৯৪ কোটি টাকা বা ২৬ দশমিক ১৯ শতাংশ। মার্চ শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৩ লাখ ২০ হাজার ৩৩৫ কোটি টাকা। আর এক বছর আগে গত বছরের জুন পর্যন্ত খেলাপি ঋণ ছিল ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯২ কোটি টাকা। সে বিবেচনায় এক বছরে বেড়েছে ৩ লাখ ১৯ হাজার ৩৬ কোটি টাকা বা ১৫০ দশমিক ৯২ শতাংশ। এই খেলাপি ঋণের মধ্যে রয়েছে বেনামী ঋণ। অন্তর্বর্তী সরকার ও নতুন গভর্নর দায়িত্ব নেয়ার পর এসব বেনামী ঋণ নেয়া পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে।
বৈদেশিক মুদ্রা বাজার
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আন্তঃব্যাংক বাজারে ডলারের বিনিময় হার ছিল সর্বোচ্চ ১২৮ টাকা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর ডলার বিনিময় হার ১২০ টাকায় নেমেছে। গত ১৪ মে বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের শর্তানুযায়ী বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় ব্যবস্থা চালু করেছে। ফলে ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে আলোচনার ভিত্তিতে দাম ঠিক করে ডলার লেনদেন করছে। ডলারের দাম আগের চেয়ে কমে স্থিতিশীল থাকায় টাকার মানও বেড়েছে।
রেমিট্যান্স প্রবাহ
চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের আগস্টের ৫ দিনে দেশে বৈধ পথে ৩২ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ ৪ হাজার কোটি টাকা (প্রতি ডলার ১২২ টাকা)। সদ্য সমাপ্ত জুলাই মাসে ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। ২০৪-২৫ অর্থবছরে মোট রেমিট্যান্স ৩০ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল। আগের অর্থবছরে যার পরিমাণ ছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।
বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় রিজার্ভ তলানিতে নেমে গিয়েছিল। গত বছরের নভেম্বরে গ্রস রিজার্ভ ছিল ১৮ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার। গত ৬ আগস্ট বিপিএম ৬ অনুযায়ী রিজার্ভ ২৫ দশমিক ০৫ বিলিয়ন ডলার দাঁড়িয়েছে এবং গ্রস রিজার্ভ ৩০ দশমিক ০৭ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মাঝে মাঝে বাজার থেকে ডলার কিনে রিজার্ভ পুনর্গঠন করে থাকে।
মূল্যস্ফীতি
গত বছরের আগস্টের মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৪৯ শতাংশ। বৈদেশিক মুদ্রার (ডলার) সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় এ বছরের জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি কমে ৮.৫৫ শতাংশে নেমেছে। জুলাই-ডিসেম্বর মুদ্রানীতি ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক আশা করছে, আগামী বছরের প্রথম প্রান্তিকে মূল্যস্ফীতি ৫ শতাংশে নেমে আসবে।
আমানত বেড়েছে
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত মার্চ শেষে ব্যাংক খাতে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ২৩ হাজার ৫০৬ কোটি টাকা। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে আমানতের পরিমাণ ছিল ১৮ লাখ ৮৩ হাজার ৭১১ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ের ব্যবধানে ব্যাংক খাতে সুদসহ আমানত বেড়েছে ৩৯ হাজার ৭৯৫ কোটি টাকা।
আইনের সংস্কার
ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন, দুর্বল ব্যাংক ও ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে একীভূত করার লক্ষ্যে ব্যাংকিং রেজুলেশন অ্যাক্ট প্রণয়ন; ঋণ শ্রেণিকরণের নিয়মাগুলো আধুনিকী করে আন্তর্জাতিক মানের করা; বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বন্ধ করতে বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার সংশোধন করার মতো সংস্কার কার্যক্রমের উদ্যোগ নিয়েছে।
ঢাকা/নাজমুল/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সরক র র আমল ল গ সরক র র আর থ ক খ ত র পর ম ণ পদক ষ প গঠন কর প রণয়ন য় র পর বছর র আওয় ম দশম ক আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
নীতিমালা সংশোধনে ইসিকে ১৫ দিনের আলটিমেটাম সাংবাদিকদের
জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রণীত সাংবাদিকদের নীতিমালা অবিলম্বে স্থগিত ও সংশোধনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) ১৫ দিনের আলটিমেটাম দিয়েছে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)।
সংগঠনটি বলেছে, এ নীতিমালা স্বাধীন সাংবাদিকতা, তথ্যের অধিকার ও গণতান্ত্রিক চর্চার পরিপন্থী।
বুধবার (৬ আগস্ট) ঢাকার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনের কাছে স্মারকলিপি দেয় সংগঠনটি। স্মারকলিপি দেন আরএফইডির সভাপতি কাজী জেবেল এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানীসহ নির্বাহী কমিটির সদস্যরা।
আরো পড়ুন:
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনে ইসিকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি
নির্বাচনে ৪৭ হাজার কেন্দ্রে দেওয়া হবে বডি ক্যামেরা
এর আগে নির্বাচন ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক জরুরি মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের পেশাগত অধিকার রক্ষায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় অংশ নেন আরএফইডির নির্বাহী কমিটি, সাধারণ সদস্য এবং নির্বাচন কাভারেজে অভিজ্ঞ সাংবাদিকরা।
চার দফা আপত্তি
স্মারকলিপিতে নীতিমালার চারটি মৌলিক দুর্বলতার কথা তুলে ধরা হয়—
১. গণমাধ্যমের সঙ্গে আলোচনা না করে একতরফাভাবে নীতিমালা প্রণয়ন
২. ভোটকেন্দ্রে সাংবাদিক প্রবেশে সময় ও সংখ্যা নির্ধারণসহ বাস্তবতা-বিচ্যুত বিধিনিষেধ
৩. সাক্ষাৎকার গ্রহণ ও সরাসরি সম্প্রচার নিষিদ্ধকরণ
৪. সাংবাদিকদের নিরাপত্তা উপেক্ষা করে শাস্তিমূলক ধারা সংযোজন
সভায় বক্তারা বলেন, এ ধরনের নীতিমালার ফলে সাংবাদিকদের পেশাগত স্বাধীনতা বিঘ্নিত হবে এবং নির্বাচন পর্যবেক্ষণে অংশগ্রহণ কঠিন হয়ে পড়বে। ভোটের সময়কার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার যে ন্যূনতম শর্ত—স্বাধীন সংবাদ কাভারেজ—তা বাধাগ্রস্ত হবে।
‘১৫ দিনের মধ্যে সংশোধন না হলে নির্বাচন কাভার করবে না সাংবাদিকরা
আরএফইডির সভাপতি বলেন, “এই নীতিমালা অবিলম্বে স্থগিত করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সাংবাদিকবান্ধব ও বাস্তবভিত্তিক নীতিমালা না হলে, সাংবাদিকরা এ নীতিমালার আওতায় জাতীয় সংসদ নির্বাচন কাভার করবে না।”
তিনি আরও বলেন, “স্বাধীন সাংবাদিকতা ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন পর্যবেক্ষণ অসম্ভব। তাই কমিশনকে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে বসে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।”
নতুন কর্মসূচির হুঁশিয়ারি
মতবিনিময় সভায় সিনিয়র সাংবাদিকরা বলেন, নির্বাচন পর্যবেক্ষক, সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডার এবং সাংবাদিক সংগঠনের সঙ্গে পরামর্শ করে বাস্তবসম্মত, স্বাধীনতা-সুনিশ্চিতকারী নীতিমালা না করা হলে সংগঠন কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবে।
ঢাকা/এএএম/ইভা