নেত্রকোনার বারহাট্টায় মসজিদের টাকা আত্মসাৎ ও সড়কের খোয়া লুটসহ নানা অভিযোগে নুরুল ইসলাম টিপন মিয়া (৫০) নামের বিএনপি এক নেতাকে সাময়িক  বহিষ্কার করা হয়েছে।

টিপন মিয়া বারহাট্টা উপজেলার সিংধা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। তিনি একই ইউনিয়নের মল্লিকপুর গ্রামের মাঝপাড়ার মৃত হাজী আব্দুল করিমের (চান্দু মিয়া) ছেলে।

শনিবার (৯ আগস্ট) বারহাট্টা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমেদ কমল এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো.

মোস্তাক আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমেদ কমল স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিপন মিয়াকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।সং

বাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী অনৈতিক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে বারহাট্টা উপজেলার  সিংধা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মো. টিপন মিয়াকে দলের প্রাথমিক সদস্যসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

এলাকাবাসী ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, টিপন মিয়া  মাঝপাড়া জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি হওয়ার পর মসজিদের দান-অনুদানের টাকা আত্মসাৎ করেন। নিজের ছোট ভাইয়ের ১৪০ শতক জমি জোর করে দখল করে চাঁদা দাবির অভিযোগও আছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি গ্রামে নির্মাণাধীন পাকা সড়ক থেকে কয়েক গাড়ি ইটের খোয়া লুট করেন টিপন মিয়া। লিজ নেওয়া নদী থেকে আয়ের টাকা গ্রামের লোকজনকে না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে এলাকার মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করে আসছেন। ভুক্তভোগীরা এসব বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে অভিযোগ করেন। পরে টিপন মিয়াকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়। সন্তোষজনক জবাব না দেওয়ায় তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। 

টিপন মিয়ার ছোট ভাই মো. রুকন মিয়া বলেছেন, “আমার ১৪০ শতাংশ জমি দখল করেছে টিপন। তাকে চাঁদা না দিলে জমি ছাড়বে না। তার কারণে এলাকার মানুষ অশান্তিতে আছে। মসজিদের টাকা আত্মসাৎ, সড়কের ইটের খোয়া লুট, চাঁদাবাজিসহ এমন কোনো কাজ নেই যা করছে না।”

মল্লিকপুর মাঝপাড়া মসজিদ কমিটির সদস্য নিজাম উদ্দিন বলেছেন, “টিপন নিজে নামাজ না পড়লেও দলীয় প্রভাবে মসজিদ কমিটির সভাপতি বনে যায়। মসজিদের একটি বড় পুকুর আছে, এটি ৩ লাখ টাকায় লিজ দেওয়া হতো। টিপন সভাপতি হয়ে নিজেই পুকুরটি লিজ নেয়। তবে, টাকা-পয়সা দেয়নি। এছাড়া, দান-অনুদানের টাকারও কোনো হিসাব নেই।” 

এ বিষয়ে টিপন মিয়া বলেছেন, “আমার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। আমার সুনাম ক্ষুণ্ন করতেই প্রতিপক্ষের লোকজন এসব ছড়াচ্ছে।”

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আশিক আহমেদ কমল বলেছেন, “বিএনপি অপকর্মে জড়িতদের প্রশ্রয় দেয় না। দলের সুনাম নষ্ট হয়, এমন কাজ করলে কোনো ছাড় নয়।”

চাহিদামতো জমি লিখে না দেওয়ায় টিপন মিয়া ২০২১ সালে তার বাবা হাজী আব্দুল করিমকে পিটিয়ে আহত করেন। পরে বাবা বাদী হয়ে টিপনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। 

ঢাকা/ইবাদ/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ র স ব রহ ট ট ক আহম দ মসজ দ র বল ছ ন উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

‘মেরিনার কাজে প্রকৃত শিল্পীর অভিব্যক্তি দেখা যায়’

স্থপতি নাহাস আহমেদ খলিল বলেছেন, ‘মেরিনা তাবাশ্যুমের কাজে একজন প্রকৃত শিল্পীর অভিব্যক্তি দেখা যায়, যা নৈতিকভাবে শক্তিশালী ও সৎ। অভিব্যক্তিতে (এক্সপ্রেশন) সততা না থাকলে আমরা এগোতে পারব না।’

সম্প্রতি দ্বিতীয়বারের মতো স্থাপত্যে আগা খান পুরস্কার পান মেরিনা তাবাশ্যুম। এই পুরস্কারপ্রাপ্তি উদ্‌যাপন করতে গতকাল শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন নাহাস আহমেদ।

মেরিনা তাবাশ্যুম সম্পর্কে তাঁর শিক্ষক ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট অব আর্কিটেকচারের চেয়ারপারসন জয়নব ফারুকি আলী বলেছেন, ‘স্থাপত্য মানুষের জীবন ও আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে কী অসাধারণভাবে মিশে যায়, মেরিনা তাবাশ্যুম সেটার স্বাক্ষর রেখেছেন তাঁর ঢাকার দক্ষিণখানের বায়তুর রউফ মসজিদে। ২০১৬ সালে যখন মসজিদটির উদ্বোধনে যাই, তখন মসজিদটির মোয়াজ্জিনের কাছে জানতে চাই, এ মসজিদের কোন বিষয়টি আপনার সবচেয়ে ভালো লাগে। মোয়াজ্জিন বলেছিলেন, “আমার এখান থেকে আজান দিতে ভালো লাগে।”’

মেরিনা তাবাশ্যুমের কাজে একজন প্রকৃত শিল্পীর অভিব্যক্তি দেখা যায়, যা নৈতিকভাবে শক্তিশালী ও সৎ। অভিব্যক্তিতে (এক্সপ্রেশন) সততা না থাকলে আমরা এগোতে পারব না।স্থপতি নাহাস আহমেদ খলিল।

গতকাল ‘বিটুইন ইরোজন অ্যান্ড ইমার্জেন্স’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে আর্কিকানেক্টের সহযোগিতায় সিরামিক বাংলাদেশ ম্যাগাজিন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন আর্কিকানেক্টের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্থপতি জালাল আহমেদ।

মেরিনা তাবাশ্যুম বলেন, ‘মসজিদের প্রকল্পটি ছিল ব্যক্তিগত। নানির দান করা জায়গায় ২০০৬ সালে এ মসজিদটির ডিজাইন শুরু করি। এটিকে শুধু মসজিদ হিসেবে না দেখে পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে যুক্ত করে মোর দ্যান মস্ক (মসজিদের চেয়েও বেশি কিছু) হিসেবে দেখার চেষ্টা করেছি।’

অনুষ্ঠান কথা বলছেন স্থাপতি মেরিনা তাবাশ্যুম

সম্পর্কিত নিবন্ধ