পার্বত্য চট্টগ্রামে নাচ–গান ও বর্ণিল শোভাযাত্রায় আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস পালিত হচ্ছে। আজ শনিবার সকাল ১০টা থেকে রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলায় শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে এই উৎসব শুরু হয়। এতে নিজ জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাকে অংশ নেন হাজারো তরুণ-তরুণী। এসব অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ‘দেশের কোনো সরকার ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর অধিকারের স্বীকৃতি দেয়নি। দিন দিন পাহাড়িদের ইতিহাস, ঐতিহ্য-সংস্কৃতি, ভাষা, রীতি-নীতি ও প্রথা হারিয়ে যাচ্ছে।’ তিন পার্বত্য জেলার প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদন।

বান্দরবানে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ও ভূমি মালিকানা নিশ্চিতের দাবি করেছেন।

আজ সকাল নয়টায় জেলা শহরের রাজার মাঠে এই সমাবেশ শুরু হয়। এতে জেলার মারমা, ত্রিপুরা, ম্রো, খেয়াং, খুমি, তঞ্চঙ্গ্যা, চাকমাসহ ১১টি জাতিগোষ্ঠীর নিজ নিজ জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে অংশ নেন।

আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক মং উষাথোয়াই মারমা এ সমাবেশের সভাপতিত্ব করেন। এতে অতিথি ছিলেন আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য কে এস মং মারমা, দৈনিক আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক এহসান মাহমুদ ও যুব ইউনিয়নের সভাপতি খান আসাদুজ্জামান। এতে আরও বক্তব্য দেন জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান থোয়াইং চ প্রু, জেলা পরিষদের সদস্য উবাথোয়াই মারমা, বান্দরবান সদর উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সুচিত্রা তঞ্চঙ্গ্যা, রাখাইন প্রতিনিধি মাম্যা রাখাইন, ম্রো স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তনয়া ম্রো, আদিবাসী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সাবেক সভাপতি সুমন মারমা, বম ছাত্র অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জেমস বম প্রমুখ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৭২ সালে পার্বত্য চট্টগ্রামের তৎকালীন সংসদ সদস্য মানবেন্দ্র নারায়ণ লারমা বহুত্ববাদী বাংলাদেশের প্রস্তাব দেন। এটি মেনে নিলে পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা হতো না। আজ সেই বহুত্ববাদের কথা জুলাই আন্দোলনের পরে নতুন করে ভাবা হচ্ছে।

রাঙামাটি

রাঙামাটিতে আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠানে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (জেএসএস) সহসভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য উষাতন তালুকদার বলেছেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ঐতিহ্য-সংস্কৃতি, ভাষা, রীতি–নীতি ও প্রথা হারিয়ে যাচ্ছে। আমরাও হারিয়ে যাচ্ছি। আমরা সাংবিধানিক স্বীকৃতি চাই।’

আজ বেলা ১১টার দিকে রাঙামাটি শহরের পৌরসভা মাঠে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চলের উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়। এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চলের সভাপতি প্রকৃতি রঞ্জন চাকমা। উদ্বোধন করেন শিক্ষাবিদ শিশির চাকমা। এতে আরও বক্তব্য দেন মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপণ দেওয়ান, আদিবাসী ফোরাম পার্বত্য অঞ্চলের সদস্য নিকোলায় পাংখোয়া, উসিংসা রাখাইন, ইন্টুমনি তালুকদার প্রমুখ।

অনুষ্ঠান শেষে দুপুর ১২টার দিকে শোভাযাত্রার আয়োজন হয়। এটি জেলার পৌরসভা গেট থেকে শুরু করে কাঁঠালতলী, বনরূপা, হ্যাপীর মোড়, নিউমার্কেট, বিজন সরণি ও উত্তর কালিন্দীপুর এলাকা প্রদক্ষিণ করে শিল্পকলা একাডেমি এলাকায় গিয়ে শেষ হয়।

খাগড়াছড়ি

খাগড়াছড়িতে আজ বেলা ১১টায় আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস উদ্‌যাপন কমিটির উদ্যোগে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়। এতে নিজেদের জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী পোশাক পরে পাহাড়ি নারী–পুরুষেরা অংশ নেন। শোভাযাত্রাটি শহরের শাপলা চত্বর, আদালত সড়ক ও নেন্সি বাজার হয়ে খাগড়াপুর গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বক্তারা পাহাড়ে নারী নির্যাতন বন্ধ, পাঠ্যপুস্তকে মাতৃভাষায় পাঠদান নিশ্চিত করা, পার্বত্য চট্টগ্রামে নারী ও শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, ভূমি অধিকার রক্ষা করা, ভূমি কমিশন কার্যকরসহ বিভিন্ন দাবি জানান। পাশাপাশি বক্তারা অবিলম্বে জাতিসংঘ ঘোষিত আদিবাসীবিষয়ক ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে সরকারকে আহ্বান জানান।

আন্তর্জাতিক আদিবাসী উদ্‌যাপন কমিটির সভাপতি চাথোয়াই মং মারমা সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট স্বেচ্ছাসেবক সুধাকর ত্রিপুরা। মনোতোষ ত্রিপুরার সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সুজন চাকমা, সাবেক নারী ভাইস চেয়ারম্যান রত্না তঞ্চঙ্গ্যা, উদ্‌যাপন কমিটির সদস্য জ্ঞান প্রিয় চাকমা, শিক্ষার্থী জনত্তম চাকমা, সাংস্কৃতিক কর্মী কৃপায়ন ত্রিপুরা প্রমুখ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

আদিবাসী দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মৌন প্রতিবাদ সমাবেশ হয়েছে। আজ বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসের শহীদ মিনারে সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করে শাখা মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল (বিএমএসসি)।

সংগঠনটির শাখার সভাপতি বাবলু মারমা এই কর্মসূচির সভাপতিত্ব করেন। শাখা সাংগঠনিক সম্পাদক সাথোয়াইঅং মারমার সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন শাখার সহসভাপতি কো শৈমংসাই মারমা। এতে তিনি অভিযোগ করেন, পাহাড়ে বম জনগোষ্ঠীকে ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে রাষ্ট্র অন্যায্যভাবে বন্দী রাখছে। এ ছাড়া ভূমি বেদখল, নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের শোষণমূলক কাঠামো বিরুদ্ধে তাঁরা প্রতিবাদ জানাতে এই কর্মসূচির আয়োজন করেছেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন র সদস য বক ত র

এছাড়াও পড়ুন:

 জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে মহানগর বিএনপির র‌্যালি

ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এড. সাখাওয়াত হোসেন খান ও সদস্য সচিব এড. আবু আল ইউসুফ খান টিপুর নেতৃত্বে শহরে জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে সু- সজ্জিত হয়ে মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীদের নিয়ে শোডাউন করে বর্ণাঢ্য র‌্যালি করেছে মহানগর বিএনপি।

‎শুক্রবার (৭ নভেম্বর) বিকেল চারটায় শহরের মিশন পাড়া হোসিয়ারি সমিতির সামনে থেকে এই বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দুই নম্বর রেলগেইট গিয়ে শেষ হয়।

‎এদিকে বিএনপির র‌্যালিকে সফল করতে তিনটার দিকে দিকে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির আওতাধীন সদর থানা, বন্দর থানা, বন্দর উপজেলা ও বিভিন্ন ইউনিয়ন এবং ওয়ার্ড বিএনপি ও যুবদল, ছাত্রদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, শ্রমিকদল, মহিলাদল, ওলামাদলসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ব্যানার- ফেস্টুনে সু-সজ্জিত হয়ে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে মিশন পাড়া হোসিয়ারি সমিতির সামনে এসে জড়ো হয়।

‎পরে নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জাতীয় ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে ব্যানার ফেস্টুনে সু- সজ্জিত হয়ে শ্লোগান দেয়, স্বাধীনতার ঘোষক জিয়া, লও লও লও সালাম, ‎আজকের এই দিনে, জিয়া তোমায় পড়ে মনে, ‎শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকল্পিত করে তোলে পুরো শহর।

‎এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক মনির হোসেন খান, যুগ্ম আহ্বায়ক ফতেহ রেজা রিপন, আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এড. রফিক আহমেদ, ডা. মজিবুর রহমান, মাসুদ রানা, এড. এইচএম আনোয়ার প্রধান, বরকত উল্লাহ, ফারুক হোসেন, বন্দর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মাজহারুল ইসলাম হিরণ, সাধারণ সম্পাদক হারুন উর রশিদ লিটন, বন্দর থানা বিএনপি’র সভাপতি শাহেন শাহ্ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হক রানা, মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সজল, সদস্য সচিব সাহেদ আহমেদ, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক শাখাওয়াত ইসলাম রানা, সদস্য সচিব মমিনুর রহমান বাবু, মহানগর শ্রমিকদলের আহ্বায়ক এস এম আসলাম, সদস্য সচিব ফারুক হোসেন,বিএনপি নেতা আক্তার হোসেন, শেখ সেলিম, নাজমুল হক, চঞ্চল মাহমুদ,, ইকবাল হোসেন, নাসির উল্লাহ টিপু, শাহাদুল্লাহ মুকুল,আল আমিন প্রধান, সাইফুল ইসলাম বাবু, হিরা সরদার, ইকবাল হোসেন, সোহেল খান বাবু, মহানগর মহিলাদলের সভানেত্রী দিলারা মাসুদ ময়না, কলাগাছিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহাদুল্লাহ মুকুল, সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, গোগনগর বিএনপির সভাপতি আক্তার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়াজী, আলীরটেক ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আঃ রহমান, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, মুছাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি তাঁরা মিয়া, সাধারণ সম্পাদক শাহিন আহমেদ, ধামগড় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জাহিদ খন্দকার, সাধারণ সম্পাদক মহসিন মিয়া, মদনপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মামুন ভূইয়া, সাধারণ সম্পাদক শাহেন শাহ্ মিঠু, বন্দর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি রাজু আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, মহানগর ছাত্রদলের সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহাজাদা আলম রতন, মহানগর ওলামা দলের সভাপতি হাফেজ শিবলীসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কুমিল্লায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিলের পর ৪৫ নেতা-কর্মী গ্রেপ্তার
  • জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে জেলা বিএনপির বর্ণাঢ্য র‌্যালি
  •  জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে মহানগর বিএনপির র‌্যালি
  • রাজধানীতে আওয়ামী লীগের ছয় নেতা–কর্মী গ্রেপ্তার
  • কাফনের কাপড় পরে মৌনমিছিল ৩ নেতার সমর্থকদের, প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি
  • কানাডায় তৈরি পোশাকের রপ্তানি বাড়াতে সহায়তা দেবে বিবিসিসি, বিজিএমইএর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি সই
  • স্টার সিনেপ্লেক্সে ‘হুমায়ুন আহমেদ সপ্তাহ’
  • রাউজানে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে ফের গোলাগুলি, গুলিবিদ্ধ পাঁচ নেতা-কর্মী
  • তৈরি পোশাক খাতের বর্তমান অবস্থা ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে চায় আইএমএফ
  • পোশাকশিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিজিএমইএ-আইএমএফ বৈঠক