কাফনের কাপড় পরে মৌনমিছিল ৩ নেতার সমর্থকদের, প্রার্থী পরিবর্তনের দাবি
Published: 7th, November 2025 GMT
দিনাজপুর-২ আসনে (বিরল-বোচাগঞ্জ) বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে কাফনের কাপড় পরে মৌনমিছিল কর্মসূচি পালিত হয়েছে। আজ (শুক্রবার) বেলা ১১টার দিকে উপজেলা শহরে এ কর্মসূচি পালন করেন মনোনয়ন না পাওয়া তিন নেতার অনুসারী ব্যক্তিরা।
এর আগে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে আসা একাংশের নেতা-কর্মীরা বিরল বাজার এলাকায় বকুলতলা মোড়ে জড়ো হতে শুরু করেন। পরে সেখান থেকে মৌনমিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ মিনার চত্বরে গিয়ে শেষ হয় এবং সেখানে বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় যোগ দেন তাঁরা। সভায় বক্তব্য দেন পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আসাদুল হক, সহসভাপতি ইস্কান্দার হাসান, জেলা বিএনপির বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক হামিদুর রহমান প্রমুখ।
‘মনোনয়নবঞ্চিত’ তিন নেতা হলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ, সহসভাপতি মোজাহার হোসেন এবং শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক মনজুরুল ইসলাম। ৩ নভেম্বর দলের মহাসচিব এই আসন (দিনাজপুর-২) থেকে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে সাদিক রিয়াজের নাম ঘোষণা করেন। তিনি জেলা বিএনপির নির্বাহী সদস্য ও বোচাগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা।
মৌনমিছিলে অংশ নেওয়া কয়েকজন জানান, আসনটিতে চারজন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন, কিন্তু দল থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন সাদিক রিয়াজ। তাঁরা বলছেন, দলের হাইকমান্ড ঘোষণা দিয়েছিলেন দীর্ঘ সময় ধরে যাঁরা বিগত সরকারের সময়ে নির্যাতিত হয়েছেন, মামলা হামলার শিকার হয়েছেন এসব বিবেচনায় নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেবেন। কিন্তু প্রার্থিতা ঘোষণায় তাঁরা কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তির নাম না দেখে হতাশ হয়েছেন। এ জন্য প্রার্থিতা পরিবর্তনের জোর দাবি জানাচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজিমপুর ইউনিয়নের এক সাবেক ছাত্রনেতা বলেন, মনোনয়ন না পাওয়া এই তিনজনের মধ্যে যেকোনো একজনের নাম ঘোষণা করলে দলের মধ্যে কোন্দল থাকবে না। এই আসনে অন্য একটি দল থেকে যিনি প্রার্থী হয়েছেন, তিনিও শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী। নিজেদের মধ্যে এই কোন্দল থাকলে মাঝখান দিয়ে অন্য দলের প্রার্থী সুযোগ নেবে।
দুপুর ১২টায় উপজেলার শহীদ মিনার চত্বরে ‘বিপ্লব ও সংহতি’ দিবসের আলোচনা সভায় উপস্থিত হন মনোনয়নবঞ্চিত ওই তিন নেতা। পরে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে বক্তব্য দেন তাঁরা। এর মধ্যে বজলুর রশিদ বলেন, ‘সাদিক রিয়াজ রাজনীতির মাঠে কোনো আন্দোলন সংগ্রামে ছিলেন না। বিগত দিনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাত করে সব আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেছেন। আমরা মামলার আসামি হয়ে জেলহাজতে ছিলাম, কিন্তু তিনি রেহাই পেয়েছেন। আওয়ামী লীগকে যিনি পুনর্বাসনের চেষ্টা করেছেন, তাঁকে বাদ দিয়ে বিরল-বোচাগঞ্জের যে কাউকে মনোনয়ন দিলে আমরা মেনে নেব।’
মোজাহারুল ইসলাম বলেন, আসনটি ঝুঁকিপূর্ণ। দল যাঁকে মনোনয়ন দিয়েছে, বিগত দিনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকায় সাধারণ ভোটাররা তাঁকে চান না।
দল যদি সিদ্ধান্তে অনড় থাকে, সে ক্ষেত্রে ভূমিকা কী হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে ‘মনোনয়নবঞ্চিত’ নেতারা বলেন, তাঁদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল, কিন্তু কোনো কলহ ছিল না। তাঁরা শুধু দলের উচ্চ পর্যায়ের কাছে সেখানকার প্রকৃত চিত্র তুলে ধরেছেন। দল আবার জরিপ করুক, প্রকৃত অবস্থা বিবেচনা করে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করুক।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র দল থ ক হয় ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
পোশাকশিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিজিএমইএ-আইএমএফ বৈঠক
বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) মধ্যে পোশাকশিল্পের টেকসই প্রবৃদ্ধি ও রূপান্তর নিয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর উত্তরায় এই বৈঠক হয়।
আরো পড়ুন:
উৎপাদনশীলতা বাড়াতে বিজিএমইএ-এনপিও সমঝোতা স্মারক
শুল্ক হ্রাসে আত্মতুষ্টির সুযোগ নেই, আরো কমাতে আলোচনার পরামর্শ
বৈঠকে আইএমএফ প্রতিনিধিদল বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এজেন্ডায় পোশাক খাতের অবদানকে উচ্চ প্রশংসা করে এবং শিল্প খাতের চলমান রূপান্তর প্রচেষ্টায় সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস দেয়।
বৈঠকে বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান সভাপতিত্ব করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহসভাপতি ইনামুল হক খান, সহসভাপতি মো. রেজোয়ান সেলিম, সহসভাপতি ভিদিয়া অমৃত খান, পরিচালক নাফিস-উদ-দৌলা এবং পরিচালক ড. রশিদ আহমেদ হোসাইনী।
আইএমএফ প্রতিনিধি দলে ছিলেন সিনিয়র ইকোনমিস্ট কিয়াও চেন, সিনিয়র ইকোনমিস্ট রুইফেং ঝাং এবং ইকোনমিস্ট আয়া সাইদ।
আইএমএফের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে পোশাকশিল্পের ভূমিকা, চ্যালেঞ্জ এবং ঝুঁকি সম্পর্কে জানতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বৈশ্বিক অস্থিরতা সত্ত্বেও কিভাবে পোশাকশিল্প প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারে, সে বিষয়ে আলোচনা হয়।
বিজিএমইএ নেতারা জানান, প্রতিষ্ঠানটি এখন শ্রমনির্ভর মডেল থেকে বেরিয়ে এসে মূল্য সংযোজিত পণ্য, উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে উচ্চমূল্যের উৎপাদন ব্যবস্থার দিকে এগোচ্ছে। তারা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন যে, ম্যান-মেইড ফাইবার (এমএমএফ) ও টেকনিক্যাল টেক্সটাইল উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
বৈঠকে এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশের জন্য সম্ভাব্য শুল্ক পরিবর্তন ও বাণিজ্য সুবিধা হ্রাসের বিষয়েও আলোচনা হয়। বিজিএমইএ নেতারা জানান, তারা সরকারকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, জাপান, কানাডা ও অন্যান্য দেশের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) সম্পাদনের পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে বাজারে প্রতিযোগিতা বজায় থাকে।
বিজিএমইএ নেতারা বৈঠকে শিল্প খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে ব্যবসা পরিচালন সহজীকরণ ও ব্যয় হ্রাসের ওপর জোর দেন। তারা উল্লেখ করেন, বোর্ড ইতিমধ্যে সরকারকে বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহের স্থিতিশীলতা, বন্দর ব্যবস্থাপনার দক্ষতা বৃদ্ধি, কাস্টমস ও বন্ড প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং সুদের হার এক অঙ্কে রাখার বিষয়ে সুপারিশ করেছে। এছাড়া তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো উন্নয়ন দ্রুত সম্পন্ন করার প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন।
ঢাকা/নাজমুল/সাইফ